নগরীর সৌন্দর্য বাড়বে, পাশাপাশি খরচ কমবে- এমন আশায় বুক বেঁধে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ খরচ না করেই নগরীর সড়কগুলো আলোকিত করতে বিভিন্ন এলাকায় সৌরবাতি স্থাপন করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। তবে শেষ পর্যন্ত আর সফলতার মুখ দেখেনি ওই প্রকল্প। চালু হওয়ার দিন কয়েক পরই প্রকল্পটিকে ব্যর্থ আখ্যায়িত করতে হয়। ফলে ডিএসসিসিকে নতুন করে ভাবনা শুরু করতে হয় কি করা যায় ওই প্রকল্প নিয়ে।সে অনুযায়ী প্রকল্প এলাকায় নতুন করে এলইডি লাইট স্থাপনের উদ্যোগ নেয় সংস্থাটি। কিন্তু আইনি জটিলতা ও সরকারের নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্পের আপত্তির কারণে সেদিকেও আর এগোতে পারছে না সংস্থাটি। ডিএসসিসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সৌরশক্তি ব্যবহার করে রাতে রাজধানীর সড়ক আলোকিত করতে পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয় কাকরাইল মসজিদ থেকে নটর ডেম কলেজ পর্যন্ত সড়কে। এতে অর্থায়ন করে বিশ্বব্যাংক। প্রকল্পের আওতায় কাকরাইল মসজিদ থেকে নটর ডেম কলেজ পর্যন্ত সড়কে ৬১টি ল্যাম্পপোস্ট বসানো হয়। প্রতিটি পোস্টের ওপর বসানো সাড়ে ৫ ফুটের এক জোড়া সোলার প্যানেল। ৬১টি পোলে মোট ১২২টি বাতির এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দ ছিল ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। তবে সর্বনিম্ন ২ কোটি ২৪ লাখ ২১ হাজার ৬৫০ টাকার দরদাতা পাওয়ায় পুরো টাকার আর প্রয়োজনই হয়নি।কথা ছিল এতে সফলতা এলে পরবর্তীতে আরামবাগ, বাংলামোটর, গুলশান, হাতিরঝিল, নাবিস্কো এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বাস্তবায়নের কিছুদিন পরই স্পষ্ট হতে থাকে যে ব্যর্থ হতে যাচ্ছে পরীক্ষামূলক প্রকল্পটি। প্রকল্প এলাকার সড়কগুলো আলোকিত হওয়ার বদলে উল্টো ডুবতে শুরু করে অন্ধকারে। ব্যর্থতা ঢাকতে নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ওই সড়কে এলইডি লাইট স্থাপনের উদ্যোগ নেয় ডিএসসিসি। সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটি অপসারণ করে সেখানে সোডিয়াম বাতির বিদ্যুৎ পোল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ লক্ষ্যে একটি প্রস্তাবনাও পেশ করা হয়েছে। কিন্তু আইনি জটিলতা ও সরকারের ‘নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ’ প্রকল্পের আপত্তি থাকায় সেদিকে আর অগ্রসর হতে পারছে না সংস্থাটি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ সার্কেল) মো. জাফর আহম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটি স্থাপনের পর নানা কারণে এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে সৌর প্যানেলের ওপর ধুলাবালি ও যানবাহনের ধোঁয়ার কারণে প্যানেলগুলোতে ঠিক মতো সূর্যের আলো লাগে না।’জানা গেছে প্রকল্পটি স্থাপনের আগে এসব সড়কের পোলে ১৫০ ওয়াটের বাতি ছিল। কিন্তু সৌর প্রকল্পে লাগানো হয় মাত্র ৬০ ওয়াটের বাতি; যা সড়ক আলোকিত করার জন্য যথেষ্ট নয়। সম্প্রতি সরকারের সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউয়েবল অ্যানার্জি ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি (এসআরইডিএ বা শ্রিডা) প্রকল্পটি পরিদর্শন করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, বাস্তবায়ন হওয়া প্রকল্পটি বাতিল করা যাবে না। এর পরিবর্তে অন্য কিছুও স্থাপন করা যাবে না। তবে কীভাবে একে উন্নত করা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। সোমবার প্রকল্পটি নিয়ে নগর ভবনে একটি বৈঠকও হয়েছে। এমএসএস/এনএফ/পিআর
Advertisement