যে সমাজ ব্যবস্থা পিছিয়ে আছে, তা অগ্রসর করার জন্য নারী দিবস পালন করার প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। আমাদের মতো ছোট একটি দেশেও নারীর প্রতি সহিংসতা কম নয়। এখনও এ দেশে কন্যাশিশু থেকে শুরু করে বয়স্কা নারী, কেউই নিরাপদ নয়। নারীপাচার, খুন, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, ইভটিজিং, এসিড সন্ত্রাস কোনোটাই নির্মূল হয়ে যায়নি। যতদিন এসব বন্ধ না হবে ততদিন সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এই দিবস পালন করা জরুরি।পুরুষেরা যেন নারীর প্রতি শ্রদ্ধা এবং সমতার একটি জায়গা তৈরি করে। এই দিবসটি যেন স্লোগানসর্বস্ব না হয়, সবক্ষেত্রে যেন এর প্রভাব স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আর নারীর অধিকার মানে পুরুষের ওপর ছড়ি ঘোরানো নয়, বরং নারী ও পুরুষ একে অন্যের সহযোগী হিসেবে এগিয়ে যাক। শুধু নারীই পুরুষকে সহযোগিতা করবে এমনটি না ভেবে পুরুষও সমানভাবে নারীকে সহযোগিতা করুক।আমাদের দেশে দীর্ঘদিন ধরে নারীদিবস পালিত হয়ে আসছে। এর বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাবও আমি লক্ষ্য করেছি। পুরুষেরা এখন নারীর প্রতি অনেক বেশি শ্রদ্ধাশীল। এখন যেমন ইভটিজার আছে, আবার ইভটিজারের বিরুদ্ধে এগিয়ে আসার জন্য অনেক সাহসী পুরুষও আছে। এইযে নারীর প্রতি সম্মান ও সহমর্মিতার জায়গা, আমি চাই এটাই আরো সম্প্রসারিত হোক। দেশের নারীরাও আগের থেকে অনেক বেশি অধিকার সচেতন। তারা ধীরে ধীরে নিজেদের একটি শক্ত অবস্থার তৈরি করছে। শক্ত অবস্থান বলতে পুরুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নয়, বরং নিজের পক্ষে অবস্থানের কথা বলছি।একটি পর্যায়ের পরে আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হয়ে গেলেও এই দিবসটি পালন করা যেতে পারে। তখন দিবসটি পালনের উপলক্ষ্য বদল করা যেতে পারে। এখন যেমন সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দিবসটি পালন করা হয়, তখন এটিকে উৎসব হিসেবে উদযাপন করা যেতে পারে। নতুন প্রজন্মের যারা আসছে, তাদের যেন নারীর প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন মনোভাব গড়ে ওঠে সে লক্ষ্যে এই দিবসটি টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন। নয়তো আমাদের এই অর্জন অনেকখানি এগিয়ে গিয়েও আবার পিছিয়ে আসতে পারে। নারীরা নারীদের অধিকার সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন হোক। বৈষম্য ভুলে নারী-পুরুষ সমানতালে এগিয়ে যাক। সবাইকে নারী দিবসের শুভেচ্ছা।অনুলিখন: হাবীবাহ্ নাসরীনএইচএন/আরআইপি
Advertisement