খেলাধুলা

ফিফার স্বীকৃতি চাইবে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল

ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে কোন জাতি? স্বাধীনতার জন্য ফুটবল খেলেছে কোন জাতি? দুটি প্রশ্নের এক উত্তর- ‘বাঙালি জাতি’। দুটি ঘটনাই বিশ্বে নজিরবিহীন। গৌরবের দুটি বিজয়ই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। যে গৌরব শুধু বাঙালিদেরই আছে। রক্ত আর জীবন দিয়ে বাঙালিরা মাতৃভাষার দাবি আদায় করেছে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি। স্বাধীনতার জন্য একদল বাঙালি ফুটবলার ভারতের বিভিন্ন স্থানে ১৬ টি ফুটবল ম্যাচ খেলেছিলেন ১৯৭১ সালে।ভাষার জন্য ১৯৫২ সালের অনন্য ওই ত্যাগের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পেয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৯৯ সালে ১৭ নভেম্বর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ২১ ফেব্রুয়ারিকে। ২০০৮ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে তা অনুমোদন পায়। এরপর থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পালিত হয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। বাঙালির গর্বের অনন্য এক দিন ২১ ফেব্রুয়ারি। সম্প্রতি জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় স্বীকৃতি পেয়েছে বাংলাদেশের নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রাও। এরই ধারাবাহিকতায় এবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি চাইবে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। কম গর্বের নয় ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই দিনটিও। ওই দিন ভারতের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর স্টেডিয়ামে দেশের বাইরে প্রথম জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন বাংলাদেশের একদল দামাল ফুটবলার। ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’ নামে ওই যুবকরা ইতিহাস গড়েন স্বাধীনতার পক্ষে জনমত ও তহবিল গড়তে ফুটবল নিয়ে মাঠে নেমে। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে তাই স্বর্ণাক্ষরে লেখা স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের নামও। বহুদিন, বহুবছর ধরে চলে আসা দাবি ২৫ জুলাইকে ক্রীড়া দিবস ঘোষণার। যে দিন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল প্রথম ম্যাচ খেলেছিল ভারতের নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগর স্টেডিয়ামে, যে দিন প্রথম দেশের বাইরে উড়েছিল বাংলাদেশের পতাকা। সব সরকারের সময়ই আশ্বাস পেয়েছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা; কিন্তু তাদের দাবি আজও ‘দাবি’ই রয়ে গেলো। যদিও দলটির আছে শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। ২০০৩ সালে সরকার গেজেট প্রকাশ করে ওই দলের ফুটবলারদের তালিকাসহ।এবার আরও বড় ও গৌরবের স্বীকৃতি আদায়ের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। পৃথিবীর কোনো দেশ আর কোনো জাতির যে ইতিহাস নেই তা আছে শুধু বাংলাদেশের, বাঙালি জাতির। এ গৌরবের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও চায় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। বিশ্ব ফুটবলের অভিভাবক সংস্থা ফিফার স্বীকৃতি পাওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে ক্রীড়াঙ্গনের গৌরব- এই দলটি। স্বীকৃতি পাওয়ার প্রক্রিয়াও অতি শিগগির শুরু করবে তারা।আপনারা কেন এতদিনেও ফিফার স্বীকৃতি চাননি? জানতে চাওয়া হয়েছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের গর্বিত অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টুর কাছে। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ৪৫ বছরে আমরা এটা ভাবিনি। এখন ভাবছি। বাফুফেকে এ বিষয়ে চিঠি দেব। প্রয়োজনে আমরা ফিফার কাছেও সরাসরি আবেদন করবো। স্বাধীনতার জন্য ফুটবল খেলার কোনো নজির নেই সারাবিশ্বে। যেমন নজির নেই আমাদের আরেকটি গৌরবগাঁথা ইতিহাসেরও। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার স্বীকৃতি আদায় করেছি। নজিরবিহীন বলেই এ দিনটি পেয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। ঠিক একই কারণে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলও এ স্বীকৃতির দাবি রাখে। আমার বিশ্বাস ফিফা আমাদের দলকে স্বীকৃতি দেবে।’আরআই/আইএইচএস

Advertisement