শফিউল ইসলাম এবং ইমরুল কায়েস। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সম্ভাবনাময় দুই ক্রিকেটার। দুইজনের কেউই এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ঘোষিত বিশ্বকাপের স্কোয়াডে ছিলেন না। দু’টি অঘটনের মধ্য দিয়ে তারা দলে ডাক পেলেন এবং মনের আনন্দে পাখা মেলেই উড়ে গেলেন অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে। প্রথম ডাক পেলেন পেসার শফিউল ইসলাম। সন্দেহজনক কর্মকাণ্ডে আইসিসির আইন ও নিরাপত্তা বিষয়ক সংগঠন আকসুর প্রশ্নের মুখে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল কোনো ম্যাচ না খেলিয়েই দেশে ফেরত পাঠায় পেসার আল আমিনকে। তার স্থানেই স্থলাভিষিক্ত হলেন শফিউল। আর স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ফিল্ডিং করতে গিয়ে কাঁধে মারাত্মক চোট পেয়ে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে গেলেন ওপেনার আনামুল হক বিজয়। বাধ্য হয়েই তার শূন্যস্থান পূরণ করতে দল ডেকে পাঠালো ইমরুল কায়েসকে। হয়তো পাঠকরা ভাবছেন, খেলাধুলায় এটা স্বাভাবিক। অঘটন যেকোনো সময় যেকোনো স্থানেই ঘটতে পারে।হ্যাঁ, তা অবশ্যই পারে। তবে ইংল্যান্ডের সাথে খেলতে নামার আগে এই দুই ক্রিকেটারের দলে অন্তর্ভূক্তিটাকে নিশ্চয়ই অঘটন ভাবতে চাইবেন না ইংলিশ ক্রিকেটারেরা। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাথে পরাজয়ের দিনটা যদি তাদের মনে থাকে। যে ম্যাচে বাংলাদেশ ব্রিটিশদের হারিয়েছিল সেই ম্যাচ জয়ের নায়ক ছিলেন এই দু’জনই! সেদিন ইংলিশদের ছুঁড়ে দেয়া ২২৫ রান তাড়া করতে নেমে ওপেনার ইমরুল কায়েস খেলেছিলেন ৬০ রানের চমৎকার একটি ইনিংস। আর ব্যটিং বিপর্যয়ে পড়ে দল যখন পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে তখন বোলার শফিউল ত্রাতা হয়ে আগলে রেখেছিলেন বাংলাদেশের উইকেট। ২১ রানে অপরাজিত থাকা মাহমুদুল্লাহর সাথে জুটি বেঁধে ২৪ বলে ৪টি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি দিয়ে ২৪ রান করেছিলেন শফিউল। মূলত তার কাছেই সেদিনের ম্যাচটা হেরেছিল ইংল্যান্ড। আর শফিউলকে এই যুদ্ধের ভিত্তিটা গড়ে দিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। এবারেও কি তারই প্রত্যাবর্তন ঘটাতে চাইছে নিয়তি? নইলে যে দুজনের বিশ্বকাপ ছিলো অধরা তারা কেন এভাবে হঠাৎ দলে ভিড়বেন! তাও আবার ইংলিশদের বিপক্ষে খেলতে নামার আগে। সবটাই অঘটন বলে পাশ কাটিয়ে যাবার বিষয় নয়। কিছুটা ভাবনারও বৈকি; অন্তত এবারের আসরে নড়বড়ে মনোবলের ইংল্যান্ডের জন্য। আমরা জানি ক্রিকেট মনস্তাত্বিক খেলা। নইলে ম্যাচে স্লো রেটিংয়ের অপরাধে রেকর্ডসংখ্যকবার শাস্তি পাওয়া ধোনির মতো ‘স্টুপিড’ অধিনায়ক সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার হওয়ার জন্য মনোনীত হবেন কেন? এখানে দিনশেষে জয়টাই আসল। তাই নিয়তি যাই হোক, জয়-পরাজয় যাই আসুক, বাংলাদেশ টিমের উচিত হবে শফিউল ও ইমরুলকে অবশ্যই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে রাখা। সেইসাথে এই দুজনের কম্বিনেশনে গত বিশ্বকাপের পরাজয়কে মনে করিয়ে দেয়া। হতে পারে এবারের আসরে বাজে পারফর্ম করা ইংল্যান্ডের কাছে এ বিষয়টি হয়ে উঠবে মানসিক চাপের। সেই চাপ কাজে লাগতেও পারে টাইগারদের। আমার মনে হয় রিকি পন্টিং, সৌরভ গাঙ্গুলি কিংবা ধোনির মতো বুদ্ধিমান অধিনায়ক হলে এই সুযোগ লুফে নিতেন। কারণ, বুদ্ধিমানেরা সব কয়টি সুযোগ কাজে লাগাতে চায়। আমাদের আবেগের নায়ক, দলের কাণ্ডারি মাশরাফি কি চেষ্টা করে দেখবেন নাকি......???বিএ/পিআর
Advertisement