জাগো জবস

স্বপ্ন সফল করতে আমরা বদ্ধপরিকর : জামির

জামিউল হোসেন জামির সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ঢাকার মালিবাগে অবস্থিত কলেজটি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজ বাংলাদেশের একমাত্র মহিলা ডেন্টাল কলেজ। এর প্রতিষ্ঠাতা ও স্বপ্নদ্রষ্টা জামিউল হোসেন জামিরের উপলব্ধি ও চেতনা মূলত নিড-বেসড সোশ্যাল ইনিশিয়েটিভস বা প্রয়োজনভিত্তিক সামাজিক উদ্যোগের বাস্তব রূপায়ণ। এরইমধ্যে দেশের সেরা ডেন্টাল কলেজের স্বীকৃতি পেয়েছে কলেজটি। স্বাস্থ্য খাতে নারী শিক্ষায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন অর্থকণ্ঠ হেলথ অ্যাওয়ার্ড ২০১৩। কলেজটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এ পর্যন্ত সাফল্যের ধারাবাহিকতার পাশাপাশি শিক্ষাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে ডেন্টাল কলেজের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জামিউল হোসেন জামিরের সঙ্গে। জাগো জবসের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন গোলাম রাব্বী।জাগো জবস : সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজ সম্পর্কে কিছু বলুন-জামিউল হোসেন জামির : বাংলাদেশের প্রথম প্রাইভেট ডেন্টাল কলেজ হিসেবে আমরা পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করি। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সালে সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হই ও ২০১০ সাল থেকেই এর কার্যক্রম শুরু হয়। আপনারা হয়তো এরইমধ্যে আমাদের সুনাম-সুখ্যাতি নিশ্চয় জেনে গেছেন।জাগো জবস : কোন বিষয়গুলো কলেজটিকে বিশেষ মরযাদা দিয়েছে?জামিউল হোসেন জামির : যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকমণ্ডলী, রিডিংরুম ও পর্যাপ্ত বইসমৃদ্ধ লাইব্রেরি, মানসম্মত আবাসিক ব্যবস্থা ও বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড ফিজিওলজি ল্যাবরেটরি, ডিসেকশন হল, প্যাথলজি ল্যাব, অর্থোডেন্টিকস ল্যাব, প্রন্থডনটিকস ল্যাব, মাল্টিমিডিয়া এবং স্ক্রিনটাচ ডিজিটাল বোর্ডসমৃদ্ধ লেকচার রুম, অডিটরিয়াম, কমনরুম, প্যাথলজি ডিপার্টমেন্ট। এছাড়া মাইক্রোবায়োলজি ল্যাবরেটরি, সুপরিসর আধুনিক ডেন্টাল আউটডোর, সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত লেকচার গ্যালারি, ডিজিটাল লাইব্রেরি, ক্যান্টিন, কমনরুম ইত্যাদি কলেজটিকে বিশেষ মরযাদা দিয়েছে। জাগো জবস : কলেজটি প্রতিষ্ঠার পেছনের উদ্দেশ্য জানতে চাই- জামিউল হোসেন জামির : সাফিনা ডেন্টাল কলেজের কাজের ক্ষেত্রগুলো হলো- উচ্চশিক্ষিত এবং দক্ষ ডেন্টাল সার্জন তৈরির লক্ষ্যে ছাত্রীদের আন্তজার্তিক মানের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদান। একটি আধুনিক বিশেষায়িত ডেন্টাল ও জেনারেল হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা। বাংলাদেশে দন্ত চিকিৎসা শিক্ষার মানোন্নয়ন। দন্ত রোগের প্রতিরোধ ও নিরাময়ের জন্য গবেষণা এবং ছাত্রীদের শিক্ষাদান। দক্ষতাসম্পন্ন ডেন্টাল সার্জন গড়ে তোলা। সমাজে আধুনিক ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল হেলথ সার্ভিস প্রদান। মুখের স্বাস্থ্য পরিচর্যা সুপরিচালনার জন্য জনগণকে সচেতন করে তোলা। দেশে ডেন্টাল সার্জনের ব্যাপক চাহিদার প্রেক্ষিতে দ্রুত এই বিপুল চাহিদা পূরণ। ওরাল ডেন্টাল সায়েন্স পাঠে মেধাবী ছাত্রীদের ডেন্টাল সায়েন্সে আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো।  বেসরকারি ডেন্টাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেধাবী ছাত্রীদের ডেন্টাল সায়েন্সে পড়তে বিদেশ গমন হ্রাস ও বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়। জাগো জবস : এ পর্যন্ত আপনাদের অর্জন বা সেরা সাফল্য কী?জামিউল হোসেন জামির : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত বিডিএস পেশাগত পরীক্ষায় সেরা ফলাফল। বলতে গেলে, ১৬টি মেধাস্থান ও ৩০টি অনার্স মার্কসহ দেশের শ্রেষ্ঠ ডেন্টাল কলেজের স্থান লাভ করে। এছাড়াও ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পেশাগত পরীক্ষার মেধাতালিকায় প্রথম, দ্বিতীয় স্থানসহ ৮টি মেধাস্থান অর্জন করে। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠার পর স্বল্পসময়ে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসেবে আমাকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ বিশিষ্টজন ব্যক্তিগতভাবে অভিনন্দন জানিয়েছেন।এমনকি সাফল্যের ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পেশাগত পরীক্ষার ফলাফলে ৮টি মেধাস্থান ও ২৩টি অনার্স মার্কস অর্জন সুধী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।জাগো জবস : কলেজের শিক্ষার মান উন্নত করতে কী কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?জামিউল হোসেন জামির : সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা একই প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত হয়। সরকার নির্ধারিত একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ডে তাদের নির্বাচন করা হয়। তাই মিনিমাম একটা স্ট্যান্ডার্ড না হলে প্রাইভেট মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে পারে না। শুরুতে যে স্ট্যান্ডার্ড সরকার মেইনটেন করেন, সে স্ট্যান্ডার্ডের ছাত্রীরা আমাদের এখানে ভর্তি হয়। এ কলেজে দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়, যাতে ছাত্রীরা প্রকৃত জ্ঞানার্জন করে ভালো ডাক্তার হিসেবে বের হয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণ করতে পারে।জাগো জবস : শিক্ষার্থীদের সফল উদ্যোক্তা বা চাকরি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে কেমন সহযোগিতা করেন?জামিউল হোসেন জামির : সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজের যাত্রা শুরু হয়েছিল একটি স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার উদ্দেশ্য নিয়ে। এটি প্রাইভেট সেক্টরে প্রতিষ্ঠিত দেশের প্রথম ও একমাত্র মহিলা ডেন্টাল কলেজ। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই আমরা উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত করি। এছাড়া শিক্ষকমণ্ডলী শিক্ষার্থীদের পাঠদানে যথেষ্ট গুরুত্ব দেন। ফলে শিক্ষার্থীরা কঠোর অনুশীলন করে। আমাদের স্বপ্ন সফল করতে আমরা ছিলাম বদ্ধপরিকর। জাগো জবস : যারা উচ্চতর পড়াশোনায় বিদেশ যেতে চান; তাদের জন্য আপনাদের কী সেবা চালু রয়েছে?জামিউল হোসেন জামির : এখানে বিভিন্ন সময়ে দেশের ভিজিটিং প্রফেসররা মাঝেমধ্যে আসেন, তাঁদের দেশ-বিদেশে পড়াশোনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। এতে ভবিষ্যতে এ কলেজের ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার পথ তৈরি হবে।জাগো জবস : কলেজ নিয়ে আপনাদের ভবিষ্যত স্বপ্ন ও ভাবনা-জামিউল হোসেন জামির : প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে চাই; এটিই সাফেনা উইমেন্স ডেন্টাল কলেজ ঘিরে আমাদের ভবিষ্যৎ স্বপ্ন। আর ফলাফলের দিক দিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রাখতে আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতি আরো যত্নবান হব।আসলে আমাদের স্বপ্ন ছিল শুধু একটি ভালো মানের ডেন্টাল কলেজ নয়, এমন একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করবো, যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়ে বলবে, ‘কেবল সরকারি মেডিকেল নয়, প্রাইভেটের শিক্ষার্থীরাও মেধাবী’। জাগো জবস : আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।জামিউল হোসেন জামির : আপনাদেরকে এবং জাগো নিউজকেও ধন্যবাদ।এসইউ/জেআই

Advertisement