মতামত

বয়সের চেয়ে বিদ্যার ভার বেশি!

বলা হয়ে থাকে শিশুরাই আগামী। কাজেই শিশুদের সঠিক পরিচর্যা অত্যন্ত জরুরি। যে জাতি শিশুদের সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে সহায়তা করে না সেই জাতি খুব বেশি দূর এগোতে পারে না। উন্নত বিশ্ব শিশুদের পরিচর্যা করে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলে। পরবর্তী সময়ে তারাই দেশ ও জাতিকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেয়। আমাদের দেশেও শিশুর পরিচর্যা অত্যন্ত জরুরি। আশার কথা হচ্ছে একটি শিক্ষিত জাতি তৈরির জন্য নানামুখি চেষ্টা চলছে। শিশুদের স্কুলগামী করার জন্য নেয়া হচ্ছে নানা উদ্যোগ। বিনামূল্যে পাঠ্যবই দেয়া হচ্ছে। সেসব বইয়ের কাগজ ও ছাপার মান উন্নত হচ্ছে। রঙিন হচ্ছে বইয়ের ভেতরের ছবি। এর সবই হচ্ছে শিশুরা যাতে বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে লেখাপড়ায় মনোযোগী হয় সেজন্য। কিন্তু কোথায় যেন একটি গলদ রয়ে গেছে। শিশুদের শিক্ষার নামে চলছে অসুস্থ প্রতিযোগিতা। এ কারণে পাঠ্য বইয়ের বাইরেও নানা ধরনের সহায়ক গ্রন্থ পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এটা যতোটা না শিশুদের শিক্ষার জন্য তার চেয়ে বাণিজ্যমুখি প্রবণতাই কাজ করে বেশি। এ জন্য বয়সের তুলনায় বইয়ের বেশি ওজন বহন করতে হচ্ছে শিশুদের। এতে তাদের শারীরিক ও মানসিক নানামুখি সমস্যা হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতেই আদালত এ সংক্রান্ত এক শুনানি শেষে গত বুধবার রায় দিয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ভারি ব্যাগ বহন নিষিদ্ধ করে একটি সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের জন্য। আর আইন প্রণয়নের আগ পর্যন্ত একটা সরকারি সার্কুলারের মাধ্যমে শিশুদের ভারি ব্যাগ বহনের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে হবে। আগামী ৩০ দিনের মধ্যেই সার্কুলারটি জারির নির্দেশ দেয়া হয়েছে আদালত থেকে।আদালতের এই নির্দেশনা অবশ্যই স্বস্তির বিষয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যে শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ, পড়াশোনার নাম করে তাদের যদি স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ফেলা দেয়া হয় সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। অভিভাবকদেরও এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। শিশুর কাঁধ থেকে বিদ্যার ভারি বোঝা নামিয়ে ফেলতে হবে। আনন্দময় শৈশব উপভোগ করে প্রতিটি শিশু যেন বেড়ে উঠতে পারে নিশ্চিত করতে হবে সেটিও। এইচআর/এমএস

Advertisement