আসরের যোগ্য দল হিসেবেই বিপিএলের ফাইনালে উঠেছে ঢাকা ডায়নামাইটস ও রাজশাহী কিংস। এটা বলা বাহুল্য। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে তৃতীয়বারের মতো শিরোপা জয়ের মিশনে নামবে ঢাকা। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে দুইবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ড্যারেন স্যামির নেতৃত্বে রাজশাহী কিংস নামবে প্রথমবারের মতো ট্রফি জয়ের মিশনে। দুই দলই তারকায় ঠাসা। রাজশাহী কিংসে যেমন আছেন ড্যারেন স্যামি, সামিত প্যাটেল, সাব্বির রহমান, আফিফ হোসেন, জেমস ফ্রাঙ্কলিন, মেহেদী হাসান মিরাজ, ফরহাদ রেজা, নুরুল হাসান হোসান, মুমিনুল হক, কেসরিক উইলিয়ামসরা। অপরদিকে ঢাকায় আছেন সাকিব আল হাসান, আন্দ্রে রাসেল, ডোয়াইন ব্রাভো, নাসির হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আলাউদ্দিন বাবু, এভিন লুইস, কুমার সাঙ্গাকারা, মেহেদী মারুফরা। ফাইনালে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স দিয়েই নজর কাড়তে চাইবেন ঢাকা-রাজশাহীর খেলোয়াড়রা। তাহলে কে হবেন ফাইনালের নায়ক?টি-টোয়েন্টি ম্যাচে তো ওয়ান ম্যান শোও দেখা যায়। চলতি বিপিএলে খুলনা টাইটান্সে এটা বেশি দেখা গেছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদে সওয়ার হয়েছিল তারা। দুর্ভাগ্য মাহমুদউল্লাহর। শেষটা ভালো হলো না তার। প্রথম ও দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খুলনা হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত করেছে। এবারের ফাইনালে ওঠা দুই দল ঢাকা ও রাজশাহীতে যারা আছেন, তাদের মধ্যেও অনেকেই ওয়ান ম্যান শো দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। ধরা যাক, প্লে-অফ। প্রথম কোয়ালিফায়ারে খুলনার বিপক্ষে ৫৪ রানে জয় পেয়েছিল ঢাকা। ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই ঢাকার সেরা পারফর্মার আন্দ্রে রাসেল। ব্যাট হাতে ঢাকার পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৬ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। আবার বল হাতে ৪ ওভারে ১৬ রান খরচায় ৩ উইকেট নিয়েছেন। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ঢাকার জয়ের নায়ক রাসেল।প্লে-অফে রাজশাহী খেলেছে দুই ম্যাচ। এলিমিনেটর ম্যাচে চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে হারা ম্যাচটা জিতে নিয়েছিল রাজশাহী। ১৪৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ৫৭ রানের মাথায় ৬ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছিল রাজশাহী। ঠিক তখনই ঝলসে ওঠে স্যামির ব্যাট। ২৭ বলে ৭টি চার ও দুটি ছক্কায় হার না মানা ৫৫ রানের ইনিংস খেলে রাজশাহীকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। এখানেও ক্যারিয়ান শো, যা ওয়ান ম্যান শোও বটে।আবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে খুলনার বিপক্ষে একক নৈপুণ্য বলা যায় না। তবে ৪ ওভারে ১৯ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকারি সামিত প্যাটেলের পারফরম্যান্সই নজর কেড়েছে ম্যাচ বিশ্লেষকদের। তাই ম্যাচ সেরা হন তিনি। দলের বিপর্যয়ে সাব্বির রহমানের ৫২ বলে দুটি চার ও ১ ছক্কায় হার না মানা ৪৩ রানের দায়িত্বশীল ইনিংসটাও রাজশাহীর ফাইনালের পথ সুগম করেছে।চলতি আসরে একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান সাব্বির রহমান। বরিশাল বুলসের বিপক্ষে ৬১ বলে ১২২ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন তিনি। যা সাজানো ৯টি চারের সঙ্গে ৯টি ছক্কায়। ফাইনালেও নিজেকে মেলে ধরতে চাইবেন রাজশাহীর এই হার্টহিটার ব্যাটসম্যান। নায়ক বনে যেতে চাইবেন ফাইনালের। এছাড়া ১৭ বছর বয়সী আফিফ হোসেনও ফাইনালে পাখা মেলতে পারেন। যেমনটা মেলেছিলেন বিপিএলের অভিষেক ম্যাচে গেইল-তামিমদের চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে। ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন আফিফ। পরে জানান, তার ব্যাটই নাকি বেশি জ্বলে। প্রমাণ রাখলেন গতকাল খুলনার বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। ২৭ বলে ২৬ রান করে রাজশাহীর বিপর্যয় এড়ান তিনি।সাকিব আল হাসান এখনো অবশ্য স্বমহিমায় জ্বলে উঠতে পারেননি। সেই পারফরম্যান্সটা কি ফাইনালের জন্য জমা রাখলেন সাকিব? বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার একাই তো ম্যাচ জেতানোর ক্ষমতা রাখেন! মেহেদী হাসান মিরাজ, ফরহাদ রেজা, এভিন লুইস, কুমার সাঙ্গাকারা, ডোয়াইন ব্রাভো, মেহেদী মারুফরা নিজেদের দিনে প্রতিপক্ষকে ধরিয়ে দিতে পারেন। ফাইনালের নায়ক হওয়ার দৌড়ে রয়েছেন রাজশাহীতে খেলা নিউজিল্যান্ডের তারকা অলরাউন্ডার জেমস ফাঙ্কলিনও।এনইউ/বিএ
Advertisement