আন্তর্জাতিক

জনপ্রিয় অভিনেত্রী থেকে মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা সোমবার রাতে চেন্নাইয়ের অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। রাজনীতিতে প্রবেশ করার আগে দক্ষিণী সিনেমার ডাকসাইটে অভিনেত্রী ছিলেন জয়ললিতা। তামিল-তেলেগু-কন্নড় ভাষায় বহু হিট ছবি উপহার দিয়েছেন তিনি। বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেছেন জয়ললিতা।বর্ণিল জীবন যাপন করেছেন তিনি। জীবনের একটা সময় ছিলেন রূপালি পর্দার নায়িকা। আর একটা সময় রাজনীতিতে নেতৃত্ব দিয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ১৯৪৮ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি মাইসোরের মেলুকোটে তামিল ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জয়ললিতা। তার বাবা জয়রমন এবং মা ভেদাভাল্লি।১৯৬১ শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে আত্মপ্রকাশ ঘটে আম্মাখ্যাত এই নেত্রীর। এপিস্টল নামে একটি ইংরেজি ছবিতে প্রথম শুটিং শুরু করেন। এরপর কন্নড় ও হিন্দি ছবিতেও অভিনয় করেন তিনি।১৯৬৪ সালে কন্নড় ছবি চিন্নাদা গোম্বেতে প্রথম মুখ্যচরিত্রে আত্মপ্রকাশ ঘটে জয়ললিতার। ১৯৬৫ সালে তামিল ছবি ভেন্নিরা আদাইতে প্রথম মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেন। একই বছর তামিলনাড়ুর সাবেক মুখ্যমন্ত্রী গুরু এম জি রামচন্দ্রনের বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন। জয়ললিতা রামচন্দ্রন একসঙ্গে ২৮টি ছবিতে অভিনয় করেন। পরে  অবশ্য দলের কর্মীদের চাপে রামচন্দ্র জয়ললিতার সঙ্গে অভিনয় করা বন্ধ করে দেন।তিনশ’র বেশি ছবিতে অভিনয় করার পর ১৯৮০ সালে নিজেকে সিনেমার জগৎ থেকে সরিয়ে নেন জয়ললিতা। এরপর ১৯৮২ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন এবং রামচন্দ্রনের এইআইডিএমকে দলের সদস্যপদ গ্রহণ করেন।১৯৮৩ সালে জয়ললিতা এইআইডিএমকের প্রচার সচিব নিযুক্ত হন। ১৯৮৪ সালে রাজ্যসভার সদস্য হিসেবে সংসদে প্রবেশ করেন। ১৯৮৯ সালে জয়ললিতা প্রথম বিধানসভায় নির্বাচিত হন। কিন্তু সে বছর সরকার গড়তে পারেননি তিনি। ১৯৯১ সালে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী হন। ২৩৪টি আসনের মধ্যে ২২৫টি আসনেই জয়ী হয় তার দল।১৯৯৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যান জয়া। দুর্নীতির অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। প্রায় এক মাস জেলে কাটাতে হয় তাকে।২০০১ সালের নির্বাচনে এআইডিএমকে আবারও ক্ষমতায় আসে। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলার কারণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় নির্বাচনে লড়তে পারেননি জয়ললিতা। কিন্তু দলীয় বিধায়করা জয়াকেই মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করেন। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাকে সরে যেতে হয়। ২০০৩ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টে ক্লিনচিট পেয়ে নির্বাচনে জিতে আবারো মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০১১ সালে তৃতীয়বারের মত মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি।২০১৪ সালে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলায় চার বছরের জেল এবং ১০০ কোটি টাকা জরিমানা হয় জয়ার। এক মাস জেলে কাটিয়ে জামিন পান তিনি। ২০১৫ সালে ওই মামলায় জয়াকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়।এ বছরের নির্বাচনে আবারো মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। ৩২ বছরে এই প্রথম পরপর দু’বারের জন্য কেউ মুখ্যমন্ত্রী হলেন তামিলনাড়ুতে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন এই জনপ্রিয় নেত্রী। টিটিএন/এমএস

Advertisement