দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজ। এগিয়ে চলছে স্বপ্নের বাস্তবায়ন। তবে মূল পদ্মা সেতুর কাজে খুব বেশি অগ্রগতি না হলেও শেষ হয়েছে দুই প্রান্তের সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ। ফলে নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সর্ব সাধারণের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে এ সংযোগ সড়ক।পদ্মা সেতু প্রকল্পের পিডি শফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে এমনটাই জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মাওয়া প্রান্তে কাজ শেষ হলেও জাজিরা প্রান্তের কাজ সামান্য বাকি। এ মাসেই (ডিসেম্বর) শেষ হবে। এর পরই জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে জাজিরা প্রান্তের ৮ কিলোমিটার সড়ক খুলে দেয়া হবে। এ বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা চূড়ান্ত।এছাড়া সেতু প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাস্তা নির্মাণ শেষ হয়ে গেলে বসিয়ে রাখার কোনো মানে হয় না। ২০২০ সালের আগে সেতুর কাজ শেষ হবে না। ফলে রাস্তা ব্যবহার করতে দিলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। তবে এ বিষয়ে সেতু মন্ত্রণালয় এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়নি।জানা গেছে, মাওয়া এবং জাজিরা প্রান্তে কাজ শেষ হবে চলতি মাসেই (ডিসেম্বর)। মূল সেতুর প্রায় দুই বছর আগেই অ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সর্বসাধারণের জন্য এ সংযোগ সড়ক খুলে দেয়া হচ্ছে।এদিকে নদীপথে মাওয়া প্রান্ত থেকে জাজিরার দিকে যতদূর চোখে পড়ে মূল সেতুর নির্মাণ কাজ। জানা গেছে, জাজিরা প্রান্তের মূল অ্যাপ্রোচ সড়কটি ১০ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের। এর সঙ্গে আশপাশের স্থানীয় সড়কগুলোকে সংযোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হচ্ছে আরও ১২ কিলোমিটার সার্ভিস সড়ক। এছাড়া মাওয়া প্রান্তে ১ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়কের সঙ্গে যোগ হচ্ছে আরও ৩ কিলোমিটার সার্ভিস সড়ক।জাজিরা প্রান্তের অ্যাপ্রোচ সড়কটিতে এর মধ্যেই ১৫০ থেকে ২৭০ মিটার লম্বা পাঁচটি ব্রিজ, ২০টি কালভার্ট ও আটটি আন্ডারপাসের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে সড়কের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ।মাওয়া প্রান্তে কথা হয় আবদুর রহিম নামের একজন গাড়ি চালকের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি খুবই খুশি। কারণ সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। ভাবছিলাম কাজই হবে না। এখন তো খুবই সুন্দর একটা রাস্তা করছে। এটি খুলে দিলে যাতায়াতে অনেক সুবিধা হবে। বেশির ভাগ সময়ই এই রাস্তায় জ্যাম থাকে।সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ৬১৬ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনবার সংশোধন করে বর্তমানে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে (দ্বিতীয় সংশোধিত) ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। একইসঙ্গে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।প্রসঙ্গত, পদ্মা সেতু প্রকল্পের অগ্রগতির মধ্যে মূল সেতু নির্মাণ ৩১ শতাংশ, নদী শাসনের কাজ ২৬, জাজিরা সংযোগ সড়ক নির্মাণ ৮২, মাওয়া সংযোগ সড়ক নির্মাণ ১০০ ও সার্ভিস এরিয়া-২ নির্মাণ ১০০ শতাংশসহ সার্বিক ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ৩৭ শতাংশ।প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন সিরাজুজ্জামান, সায়েম সাবু, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আবু সালেহ সায়াদাত ও এ কে এম নাসিরুল হক।এমএ/আরএস/পিআর
Advertisement