`স্বপ্ন পূরণের অপেক্ষায় আমরা, স্বপ্ন পূরণে সামনে বাঁকি আর অল্প কিছু সময়। পদ্মাসেতু নির্মাণের মাধ্যেমে আমাদের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে`। জাগোনিউজের সঙ্গে পদ্মাসেতুর কাজ নিয়ে এভাবেই নিজের অভিমত প্রকাশ করছিলেন মাওয়ার কান্দিপাড়া গ্রামের নদী তীরের বাসিন্দা বশির আহমেদ।তিনি বলেন, পদ্মা পাড়ের মানুষের চোখেমুখে এখন স্বাবলম্বী হবার ঝিলিক। দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে। দেশের দীর্ঘতম এ সেতু ২০১৮ সালে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে এমন প্রত্যাশাই করছি আমরা।শুধু বশির আহমেদই নয় পদ্মা পাড়ে, ফেরি ঘাটে, হোটেলে, চায়ের দোকানে আলোচনায় শুধু স্বপ্নের সেতুর কাজ এগিয়ে চলার আলোচনা। এই সেতুকে ঘিরে এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কারখানা, কৃষি সর্বত্রই বৈপ্লবিক পরিবর্তনের বাতাস বইছে। সবাই পদ্মাসেতু বাস্তবায়নের অপেক্ষায়।ধারণার চেয়েও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে পদ্মাসেতুর কাজ। মূল সেতুর কাজ ছড়িয়ে পড়েছে উভয় তীর এবং পদ্মায়। প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, ২০১৭ সালের জানুয়ারিতেই দুটি পিলারের ওপর স্প্যান গার্ডার বসিয়ে দেয়া সম্ভব হবে। এতে পদ্মা নদীর ওপর সেতুর কাঠামো দৃশ্যমান হবে।সোমবার পদ্মাসেতু এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের শেষ দিকের নদীপ্রান্তে বালু বস্তাভর্তি করা হচ্ছে। বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান নূর বিজনেজ লাইন এই বালু সরবরাহ করছে। সেতু প্রকল্পের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। দেশি-বিদেশি হাজারো শ্রমিক ও প্রকৌশলীদের ব্যস্ততা। এলাকাবাসী বলছেন, পদ্মাসেতুতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি বাড়বে। যোগাযোগ ক্ষেত্রে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। স্থানীয়ভাবে হবে শিল্পায়ন। যা অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রায় বাংলাদেশকে পৌঁছাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।জানা গেছে, পদ্মাসেতু প্রকল্পের অগ্রগতির মধ্যে মূল সেতু নির্মাণ ৩১ শতাংশ, নদী শাসন কাজ ২৬, জাজিরা সংযোগ সড়ক নির্মাণ ৮২, মাওয়া সংযোগ সড়ক নির্মাণ ১০০, সার্ভিস এরিয়া-২ নির্মাণ ১০০ শতাংশ সব মিলিয়ে সার্বিক ভৌত অগ্রগতি ৩৭ শতাংশ।বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, স্বপ্নের সেতুটি বাস্তবায়িত হলে জাতীয় জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ১ দশমকি ২ ভাগ বৃদ্ধি পাবে এবং প্রতি বছর ০.৮৪ ভাগ দারিদ্র্য নিরসনের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৫ জেলার প্রায় ৫ কোটি মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পদ্মাসেতু নির্মাণ প্রকল্পে বিগত অক্টোবর মাস পর্যন্ত মোট ১১ হাজার ৬১৬ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। তিনবার সংশোধন করে বর্তমানে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণে (দ্বিতীয় সংশোধিত) ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুর কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারিত রয়েছে।প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন- সিরাজুজ্জামান, সায়েম সাবু, আব্দুল্লাহ আল মামুন, আবু সালেহ সায়াদাত ও এ কে এম নাসিরুল হক।এএস/এমএমজেড/আরআইপি
Advertisement