ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসের এক যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। ভাষণে তিনি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বিশ্ব শক্তিগুলোর সঙ্গে তেহরানের হতে যাওয়া চুক্তি ঠেকাতে শেষ মুহূর্তে মার্কিন সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চালাবেন। তার এ উদ্যোগে হোয়াইট হাউস ক্ষুব্ধ হয়েছে। ইসরাইলে নির্বাচনের দুই সপ্তাহ আগে নেতানিয়াহু এ ভাষণ দেবেন। এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন লিকুদ পার্টি চাপে রয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সোমবার ইরানের সঙ্গে বিশ্ব শক্তিগুলোর পারমাণবিক চুক্তি ঠেকানোর চেষ্টা চালাতে ‘ঐতিহাসিক মিশনে’ যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন। নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি তেহরানকে পরমাণু বোমা তৈরি করা থেকে বিরত রাখতে যথেষ্ট নয়।ওয়াশিংটনের উদ্দেশে বিমান উড্ডয়নের আগে তেলআবিবের পাশে বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের টারমাকে নেতানিয়াহু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি এক ঐতিহাসিক মিশনে ওয়াশিংটন যাচ্ছি। আমি ইসরাইলের নাগরিকদের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের ভাগ্য এবং আমাদের সব নাগরিকের জন্য গভীর ও আন্তরিক উদ্বেগ বোধ করছি।’ নেতানিয়াহু সম্প্রতি ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত’ যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন সংসদের প্রধান স্পিকার তাকে যুক্তরাষ্ট্রে এসে তার ভাষ্য উপস্থানের আহ্বান জানিয়েছিলেন। নেতানিয়াহু তাতে সাড়া দিয়ে সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসে পৌঁছেছেন। এদিন বিকেলেই জন কেরির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিনি। সাক্ষাতে গুরুতর কোনো বিষয় নিয়ে কথোপকথন হয়নি। নেতানিয়াহুর একজন সফরসঙ্গী গণমাধ্যমকে জানান, তারা মূলত মার্কিন জনগণের ভুল ভাঙাতে এসেছেন।
Advertisement
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে নেতানিয়াহুর সম্ভাব্য ভাষণ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।নেতানিয়াহু মনে করেন, ইরানের সঙ্গে ওই চুক্তি হলে, সেটি আসলে তেহরানকে পারমাণবিক বোমা বানানোর সুযোগ করে দেবে। আর তাই ইসরাইলকে নিরাপদ করার জন্য সবকিছুই তিনি করবেন বলে জানান। তবে তার এই বক্তব্যের বিষয়ে ওবামা প্রশাসনকে আগে কিছুই জানানো হয়নি, যা হোয়াইট হাউসকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছে।এতে ডেমোক্রেটরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ কংগ্রেসের বেশিরভাগ ডেমোক্রেট সদস্যরা নেতানিয়াহুর ভাষণ দেয়ার উপস্থিত থাকবেন না।এদিকে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্য দেয়ার পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেও, আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলছেন, ‘তিনি আশা করছেন, এটা কোনো রাজনৈতিক খেলার হাতিয়ারে পরিণত হবে না।’জন কেরি বলছেন, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রে সব সময়েই স্বাগত জানানো হবে। কিন্তু আমরা আশা করি না, এর ফলে দু’দেশের সম্পর্ক একটি রাজনৈতিক খেলার বস্তুতে পরিণত হবে। তিনি বলেন, কারণ, আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ইরানকে বাধা দেয়া, যা সবার জন্যই কল্যাণকর হবে। সূত্র : বিবিসি। এসএ/আরআইপি