বিশেষ প্রতিবেদন

মালয়েশিয়া ভিসাপ্রার্থীদের সঙ্গে ভিএলএনের প্রতারণা

ভিসা লুয়ার নিগারার (ভিএলএন) সাইনবোর্ড টানিয়ে মালয়েশিয়া ভিসাপ্রার্থীদের কাছ থেকে বছরে প্রায় ১০০ কোটি টাকা লোপাট করেছে প্রভাবশালী একটি চক্র। ভিসা স্টিকারে ৬০০ টাকা ফি লেখা থাকলেও কৌশলে তার ১০ গুণের বেশি টাকা (৫ হাজার ৪০০ টাকা) আদায় করা হচ্ছে ভিসাপ্রার্থীদের কাছ থেকে। বাকি ৪ হাজার ৮০০ টাকার কোনো রসিদ বা প্রমাণ ভিসাপ্রার্থীদের দেয়া হয় না।এই অর্থ হাইকমিশনের ছত্রচ্ছায়ায় গড়ে ওঠা জালিয়াত চক্র প্রতারণার মাধ্যমে লোপাট করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অবৈধভাবে নানা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ভিসাপ্রার্থীদের সঙ্গে এমন প্রতারণা করা হলেও ভয়ে ভিসাপ্রার্থীরা কেউ মুখ খুলছেন না।জাগো নিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিয়মমাফিক যে পরিমাণ ভিসা ইস্যু করা হয় তার দ্বিগুণেরও বেশি ভিসা ইস্যু করা হয় মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে। দালালদের মাধ্যমে বাড়তি অর্থ দিলে ভিসা মিলছে সহজেই। আর না দিলে অনেক হাইপ্রোফাইল লোকদেরও রিফিউজ করা হয়। এসব অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার কারণে খেসারত দিচ্ছেন অনেকে।মালয়েশিয়া কেএলএআই বিমানবন্দরে হয়রানি ও নাজেহাল হচ্ছেন বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রকৃত পর্যটক। সম্প্রতি নিটল নিলয় গ্রুপের ৭৯ জন কর্মকর্তাকে বৈধ ভিসা ও রিটার্ন টিকিট থাকার পরও কেএলএআই বিমানবন্দর থেকে দেশে ফেরত পাঠায়। পাশাপাশি একই ফ্লাইটে গমন করা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ইমিগ্রেশন পার হয়েছেন মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে।সম্প্রতি মালয়েশিয়া বেড়াতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে মালিন্দু এয়ারলাইন্সে কেএলএআই বিমানবন্দর থেকে দেশে ফেরত এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মাহানুর রশিদ। অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বাংলাদেশিদের মানুষই ভাবে না।পাঁচদিনের জন্য বেড়ানোর পরিকল্পনায় মালয়েশিয়া যান তিনি। জানান, ইমিগ্রেশন পুলিশ তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছে এবং পরের ফ্লাইটে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। নির্মম ব্যবহারের প্রতিবাদে মাহানুর রশিদ বলেন, এদের বিচারিক শক্তি নেই। টাকা খেতে খেতে অভ্যাস এতোটাই খারাপ হয়েছে যে, এখন প্রকৃত পর্যটকদেরও ছাড় দিচ্ছে না।   ভিএলএনের এক এজেন্টে চাকরি করেন সিকু বড়ুয়া। তিনি জানান, বছর চারেক আগে ভিএলএন যুক্ত হয় মালয়েশিয়ান হাইকমিশনের সঙ্গে। এরপরই ৬০০ টাকার বদলে সাড়ে ৫ হাজার টাকার অযৌক্তিক ফি চাপিয়ে দেয়া হয়।এটি নিয়ে এজেন্ট ও আবেদনকারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তিনি বলেন, আসলে আমাদের কিছুই করার নেই। তবে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে ভিএলএনের কোনো কর্মকর্তা রাজি হননি। ভিসা আবেদনকারী অনেকের অভিযোগ, চলতি বছরের আগস্টের পর থেকে মালয়েশিয়া ভ্রমণের জন্য কাউকে মাল্টিপল ভিসা দেয়া হয়নি। ফলে যারা ভ্রমণপিয়াসু তারা চাইলেও তিন-চার মাসের মধ্যে একবারের বেশি মালয়েশিয়া যেতে পারছেন না। প্রয়োজনের তাগিদে বারবার ভিসা করার ফলে লাভবান হচ্ছে ভিএলএন আর আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভিসাপ্রার্থীরা।আরএম /ওআর/আরআইপি

Advertisement