ধর্ম

আহলান সাহলান মাহে রবিউল আউয়াল

ইসলামি বর্ষপঞ্জির (আরবি) তৃতীয় মাস হলো রবিউল আউয়াল। মাসটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ। আবেগ-অনুভূতির সেরা মাস এটি। বিশ্বজাহানের শ্রেষ্ঠ নিয়ামত হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ মাসেই ধূলির ধরাতে আগমন করেন এবং এ মাসেই তিনি ইন্তেকাল করেন।যার কারণে মুসলিম উম্মাহর কাছে এ মাস সীমাহীন আনন্দের, আবার সীমাহীন দুঃখের। ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমন ও ওফাত দিবসে তাঁর ভালোবাসার চেতনাবোধে মুসলিম উম্মাহ নিজেদের উজ্জীবিত করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেমে হয়ে ওঠে আত্মহারা পাগলপারা।হে রাসুল! এ পবিত্র মাসে আপনাকে জানাই হাজার সালাম-উম্মতে মুহাম্মাদি এ মাসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রেমে যতটা উজ্জীবিত হয়, তা অন্য মাসে এত অধিকভাবে পরিলক্ষিত হয় না। মানুষ যদি এ মাসটিকে শিক্ষা হিসেবে নিয়ে কুরআন সুন্নার আলোকে বিশ্বনবির ভালোবাসাকে পরিপূর্ণভাবে কাজে বাস্তবায়ন করে, তবে এ সমাজ হবে সোনালি সমাজ।কারণ আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেছেন, ‘হে রাসুল আপনি বলুন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমাকে অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহ ও তোমাদিগকে ভালোবাসেন এবং তোমাদিগকে তোমাদের পাপ মার্জনা করে দেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল, দয়ালু।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ৩১)কুরআনের এ আয়াতের শিক্ষায় মুসলিম উম্মাহ যখন বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শুভাগমন ও ওফাতের মাসে তাঁর অনুসরণ ও অনুকরণের মাধ্যমে তাঁর প্রেমের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন ঘটিয়ে ঈমানের প্রকৃত হক আদায়ে স্বচেষ্ট হবে, তখনই রবিউল আউয়ালের সব অনুষ্ঠান ও আয়োজন সার্থক হবে।রবিউল আউয়াল মাসটি আসলেই আমরা বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ভালোবাসায় মিলাদ-মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠান উদযাপনে ব্যাপকভাবে আত্মনিয়োগ করি। স্মরণ রাখতে হবে যে, এ মাসে নাম সর্বস্ব অনুষ্ঠান আয়োজন মুসলিম উম্মাহর কোনো কল্যাণে আসবে না। সব অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিশ্বনবি আদর্শ কথা ও কর্মের বাস্তবায়নই হবে প্রতিটি মানুষের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।বিশ্বনবির আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়ে নাম সর্বস্ব অনুষ্ঠান আয়োজন এ মাসের দাবি নয়। রবিউল আউয়াল আসলে বিশ্বনবির ভালোবাসায় আবেগ-আপ্লুত পড়া আর মাস চলে গেলে ভুলে যাওয়া। এমনটি যেন না হয়। তাইতো কবি নজরুল ইসলাম যথার্থই বলেছেন, বলেছেন, ‘রবিউল আউয়াল এলে তোমারই গান গাই; রবিউল আউয়াল গেলে তোমায় ভুলে যাই’। এটা মারাত্মক অন্যায়।রাসুলু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ বাস্তবায়নে তাঁর ভালোবাসায় অনুষ্ঠান আয়োজনে কোনো বাঁধা নেই। যদি এ সব অনুষ্ঠানে তাঁর ওপর নাজিলকৃত কুরআন ও তাঁর রেখে যাওয়া সুন্নাহ মোতাবেক মানুষ জীবন পরিচালনা করে।পরিশেষে...বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারে আবদ্ধ হয়ে তাঁর মর্যাদাকে সমুন্নত রাখতে কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের বিকল্প নেই।বিশ্বনবির আগমন ও ইন্তেকালের মাসের আবেগ-অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে তাঁর রঙে নিজেদের রাঙিয়ে তাঁর যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেদের তৈরি করাই হোক এ মাস উদযাপনের দাবি।আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে বিশ্বনবির সঠিক আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রকৃত রাসুলপ্রেমিক ও আল্লাহওয়ালা হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/আরআইপি

Advertisement