প্রায় চার লাখ ডলার অর্থাৎ ৩ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে জাতীয় সংসদের মূল নকশা সংগ্রহ করেছে সরকার। লুই আই কানের তৈরি করা জাতীয় সংসদ ভবনের মূল নকশা বৃহস্পতিবার ৪০টি বাক্সে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকায় আনা হয়।লুই আই কানের মূল নকশা ঢাকায় আনার উদ্দেশ্য হল জাতীয় সংসদের মূল নকশায় নেই এমন স্থাপনা সেখান থেকে সরিয়ে ফেলা। এর মধ্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর রয়েছে। এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কবে সরানো হবে জিয়াউর রহমানের কবর? গতকাল বৃহস্পতিবার নকশা আসার পর আজ শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন। তবে সংসদ অধিবেশন আহ্বান করায় আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত সচিবালয় খোলা ছিল। কিন্তু লুই কানের নকশা নিয়ে কবে বৈঠক হবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। দুই একদিনের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত হবে বলে জানা গেছে। স্থাপত্য অধিদফতরের প্রধান স্থপতি কাজী গোলাম নাসির শুক্রবার জাগো নিউজকে বলেন, নকশা যাচাই-বাছাই শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দেবেন। সেই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরকার সিদ্ধান্ত জানাবে। তারপর গণপূর্ত অধিদফতর প্রয়োজন অনুযায়ী সংস্কার কাজ শুরু করবে। তবে কবে যাচাই বাছাই হবে সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, শুধু জিয়ার কবর কেন, বিধি বহির্ভূত কিছুই জাতীয় সংসদ এলাকায় থাকবে না। তবে কবে এসব স্থাপনা সরানো হবে এবং নকশা বহির্ভূত কি কি আছে তা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে করা হবে। এতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম জানান, এই সরকার সচেতনভাবে চেষ্টা করছে জিয়াউর রহমানের নাম বাংলাদেশের মাটি থেকে মুছে ফেলতে। এটা কোন দিনই সম্ভব হবে না। তার নাম বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে গেঁথে রয়েছে এবং কোনো ষড়যন্ত্র তাকে বাংলাদেশের মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিতে পারবে না। তাদের হটকারি এ সিদ্ধান্ত দেশের মানুষ মেনে নেবে না। জিয়ার কবর সরানো হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে সংসদ কমিশন বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদ ভবনের মূল নকশা সংগ্রহের নির্দেশ দেন। এর আগে সংসদ ভবন এলাকায় স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকারের আবাসিক ভবন নির্মাণের বৈধতা নিয়ে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ গত বছরের নভেম্বরে লুই কানের তৈরি করা নকশা আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দেন।জানা যায়, পঁচাত্তর-পরবর্তী সময় থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত আটজন নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিকে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় কবর দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া শেরে বাংলা নগরে আছে লুই কানের নকশা বহির্ভূত আরও সাতটি স্থাপনা। মূল নকশা অনুযায়ী, সংসদ ভবন কমপ্লেক্সের পাশাপাশি নতুন সচিবালয় শেরে বাংলা নগরে হওয়ার কথা। এইচএস/এআরএস/এমএস
Advertisement