ইসলামের জন্য সবচেয়ে বেশি নিবেদিত প্রাণ ছিলেন সাহাবায়ে কেরাম। মৃত্যুশয্যায়ও তারা ইসলামের ব্যাপারে ছিলেন সতর্ক। ইসলামের জন্য নিবেদিত প্রাণ সাহাবাগণ নিজেদের জীবন ও সম্পদ অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন। এমন অনেক প্রমাণ রয়েছে যে, মৃত্যুকালেও তাঁদের সমূদয় সম্পদ ইসলামের জন্য সদকা করতে চাইতেন।কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে সমগ্র বিশ্ব মানবতার জন্য রহমত। তাই তিনি নির্ধারণ করেছেন মৃত্যুকালে কী পরিমান সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান করার ওসিয়ত করা যাবে। আর পরিবার-পরিজনের জন্য কি পরিমাণ সম্পদ রাখতে হবে। এ সম্পর্কিত একটি হাদিস এখানে তুলে ধরা হলো-হজরত সা’দ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি মক্কায় রোগাক্রান্ত হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার পরিচর্যার জন্য আসতেন। আমি বললাম, আমার তো মাল (সম্পদ) আছে। সেগুলো সব আমি ওসিয়ত করে যাই? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তবে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেন, এক-তৃতীয়াংশ করতে পার। এক-তৃতীয়াংশই বেশি।মানুষের কাছে হাত পেতে ফিরবে, এরূপ অসহায় অবস্থায় ওয়ারিশদেরকে রেখা যাওয়ার চেয়ে তাদেরকে ধনী অবস্থায় রেখে যাওয়া উত্তম। আর যা-ই তুমি খরচ করবে, তাই তোমার জন্য সাদকা হবে। এমনকি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দিবে, তাও।আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবী করবেন এই আশা। তোমার দ্বারা অনেক লোক উপকৃত হবে। আবার অন্যেরা (কাফের সম্প্রদায়) ক্ষতিগ্রস্তও হবে। (বুখারি)হাদিসের শিক্ষা০১. কেউ রোগাগ্রস্ত হলে তার সেবা করা সুন্নাত। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সাহাবির সেবা করে তা উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন।০২. ওয়ারিশ থাকলে সম্পদের মালিক তার সমূদয় সম্পদ ইসলামের পথে ব্যয় করা যাবে না। বরং সর্বোচ্চ তিনভাগের একভাগ দান করা যাবে।০৩. কমপক্ষে তিনভাগের দুইভাগ সম্পদ ওয়ারিশদের জন্য রাখা জরুরি বলে বিশ্বনবি তাগিদ দিয়েছেন।০৪. ওয়ারিশদের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচাদি বহনে সাদকার সাওয়াব পাওয়া যাবে।০৫. সর্বোপরি ওয়ারিশদের অসহায় অবস্থায় না রেখে সম্পদশালী হিসেবে রেখে যাওয়ার এবং আল্লাহর রাস্তায় দান করার নির্দেশনা দেয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/আরআইপি
Advertisement