ফিচার

প্রাচীন মিশরের অভিনব স্বাস্থ্যজ্ঞান

প্রাচীন সভ্যতাগুলোর ওপর নানা গবেষণা করে দেখা যায়, প্রায় সবকিছুর দিক থেকে মিশরীয় সভ্যতা এগিয়ে ছিল। এমনকি স্বাস্থ্যবিধিতেও। প্রাচীন মিশরের ১০টি স্বাস্থ্যবিধি নিয়েই আজকের আয়োজন-দুর্গন্ধ দূরকারী পুদিনাতিন হাজার খ্রিস্টপূর্বের এক ডেন্টিস্টের খোঁজ পাওয়া যায়। তার নাম ছিল এডউইন স্মিথ। ধারণা করা হয়, তিনি বিশ্বের প্রথম দাঁতের চিকিৎসক। গবেষকেরা মিশরীয় প্যাপিরাসে এমনটাই প্রমাণ পেয়েছেন। সেই সময়ে দাঁত তোলা আর দাঁতের ক্যাভিটি দূর করা ছিল অন্যতম চিকিৎসা। দাঁতের চিকিৎসা করার সময় রোগীর মুখ থেকে দুর্গন্ধ আসতো, যা দূর করার জন্য মধুর সঙ্গে সিদ্ধ দারুচিনি বা পুদিনা পাতা মিশিয়ে রোগীর মুখের ভেতরে দেয়া হতো।ক্ষতিকর পোকামাকড় মিশরীয়রা প্রায়ই নানা ক্ষতিকর পোকামাকড়ের সংক্রমণের শিকার হতো। যেমন- উঁকুন, ছারপোকা, ইঁদুর ইত্যাদি। উঁকুন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তারা নিজেদের শরীরের চুল সব কামিয়ে ফেলতো। ইঁদুর তাড়ানোর জন্য তারা বিড়াল পালতো। লবণমিশ্রিত পানি দিয়ে ঘর এবং কাপড় পরিষ্কার করতো।খাতনা খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ সালে মিশরে খাতনা করা একটি সামাজিক রীতি ছিল। শুধু সমাজের ধনীরা বয়ঃসন্ধির সময়কালে এটা করাতেন। এটা শুধু একটি প্রথাই ছিল না বরং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতারও প্রতীক ছিল।দুর্গন্ধনাশকমিশরীয়রাই সর্বপ্রথম দুর্গন্ধনাশক আবিষ্কার করে। শরীরের এবং ঘামের গন্ধ দূর করার জন্য তারা বিভিন্ন লতাপাতা, প্রাকৃতিক উপাদান, ফুলের নির্যাস ব্যবহার করে এক ধরনের সুগন্ধি বানাতো এবং ব্যবহার করতো।প্রাচীন রেসিপিমিশরের পূর্বে ব্যবিলনীয় সভ্যতার সময়েও টুথস্টিক এবং টুথপেস্টের প্রচলন ছিল। গাছের ডাল কেটে তা দিয়ে বানানো হতো টুথস্টিক। এছাড়া শুকনো আইরিস ফুল, লবণ, পুদিনা এবং মরিচ দিয়ে পেস্ট বানানো হতো।প্রতিষেধকমিশরীয়রা অনেক স্বাস্থ্যসচেতন ছিল। স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য তারা নানা প্রতিষেধক গ্রহণ করতো। তারা শ্রমিকদের পেঁয়াজ, রসুন এবং মুলা খাওয়াতো। যাতে তারা সুস্থ থাকে এবং তাদের দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণে কোনো বাধা না আসে।চোখের মেকআপমিশরীয়রা প্রায় সবাই চোখে মেকআপ করতো। চোখের মেকআপ তাদের চোখের যত্নের পাশাপাশি চিকিৎসার কাজে ব্যবহৃত হতো। ল্যুভর মিউজিয়ামে প্রায় ৫২ রকমের চোখের মেকআপের নমুনা রয়েছে।ব্যবস্থাপত্রমিশরীয়রা চিকিৎসাবিজ্ঞানে অন্যান্য সভ্যতার তুলনায় এগিয়ে ছিল। সে সময় প্রেসক্রিপশন বা ব্যবস্থাপত্রের প্রচলন ছিল। প্যাপিরাসে লিপিবদ্ধ এমন কিছু ব্যবস্থাপত্র পাওয়া যায়, যা থেকে মিশরীয়দের চিকিৎসা জ্ঞান জানা যায়।নারী চিকিৎসকপ্রাচীন মিশরে পুরুষ চিকিৎসকের পাশাপাশি নারী চিকিৎসকও ছিলেন। সে সময় নারীদের খুব সম্মান করা হতো। ১০০ জনের উপরে নারী চিকিৎসকের নাম খুঁজে পাওয়া গেছে। যাদের অনেকে গাইনি চিকিৎসায় পারদর্শী ছিলেন।এসইউ/এনএইচ

Advertisement