দেশজুড়ে

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অস্বীকারের অবকাশ নেই : বিজিবি মহাপরিচালক

কঠোর নজরদারি থাকার পরও কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটেছে স্বীকার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেছেন, ৬৩ কিলোমিটার জল সীমান্তসহ ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের সব এলাকা সিলগালাভাবে বন্ধ করা সম্ভব নয়। টহল জোরদার এলাকা বাদে যেখান থেকে সুযোগ পেয়েছে বিপদাপন্ন রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করেছে এটি অস্বীকার করার অবকাশ নেই। শুক্রবার দুপুর ১২টায় টেকনাফ সীমান্তের স্থলবন্দরের মালঞ্চ কটেজ প্রাঙ্গণে বিজিবি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির ডিজি একথা বলেন।তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন সীমান্তের দুই পাড়েই কিছু দালাল রয়েছে। তাদের সহযোগিতায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা চলছে। যেসব এলাকা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঘটছে, সেসব এলাকা চিহ্নিত করে টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হলে লোকাল কমিউনিটি এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন। তবে কী পরিমাণ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঘটেছে তার পরিসংখ্যান বিজিবির কাছে নেই বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এ সময় মিয়ানমারের এক গণমাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে পার হওয়া সন্ত্রাসীর সহযোগিতায় ৯ অক্টোবর বিজিপি চৌকিতে হামলার কথা উল্লেখ করেছে বলে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জবাবে ডিজি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ত্রাসীদের বিষয়ে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। সুতরাং এখানে দেশি-বিদেশি কোনো সন্ত্রাসীর অপতৎপরতা চালানোর কোনো সুযোগ নেই। আমরা কারো শত্রু নই, সীমান্তের সব রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের ভ্রাতৃত্যপ্রতিম সম্পর্ক রয়েছে। হয়তো তাদের বিশ্বাসে ঘাটতি রয়েছে, তাই এমনটি (হামলায় বাংলাদেশ থেকে সন্ত্রাসী যাওয়া) চিন্তা করছে। আমরা ইতোমধ্যে মিয়ানমার থেকে আসা গুলিবিদ্ধ দু’অপরাধীকে ধরে যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাদের কাছে হস্তান্তর করেছি। একারণে সংবাদে উল্লেখিত তথ্যের বিষয়ে বিজিবির তরফ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে ডিজি বলেন, এটি বিশ্বায়নের যুগ। কোনো কিছু গোপন করার সুযোগ নেই। মিয়ানমারে কী হচ্ছে এটি বিশ্ববাসী দেখছে। এরপরও বিজিবি যেসব রোহিঙ্গা আটকের পর ফেরত পাঠায় তাদের মানবিক সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে থাকে। অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত সম্পর্কে তিনি বলেন, এ সম্পর্কে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ চিন্তা করছে। বিজিবির কাজ হচ্ছে বর্ডার পাহারা দেয়া। অনুপ্রবেশ রোধে সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করছে বিজিবি।সীমান্তের নিরাপত্তা জোরদার করতে কাটাতারের বেড়া দেয়ার বিষয়ে ডিজি বলেন, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্ট করা হয়েছে। তবুও অনুপ্রবেশ রোধ করা সম্ভব হয় না। এরপরও বর্তমান সরকার সীমান্তে কাটাতারের বেড়া, সড়ক ও টাওয়ার স্থাপনের চিন্তা করছে। তবে, এটি সহসা সম্ভব নয়। ডিজি আরো বলেন, আমরা সৌহাদ্যপূর্ণ সম্পর্ক দিয়ে সীমান্ত সমস্যা নিরসনের চেষ্টা চালায়। গত দু’দিন ধরে আমি স্থল ও জলসীমান্ত পরিদর্শন করেছি। এসময় এবং সম্প্রতি কক্সবাজারে রিজিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠকে মিয়ানমার বর্ডার পুলিশ চোরাচালানসহ সকল বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি চট্টগ্রাম রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ফরিদ হাসান, কক্সবাজার সেক্টরের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার কর্নেল এম এম আনিসুর রহমান, টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল আবুজার আল জাহিদ, টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শফিউল আলমসহ পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন গত দুই দিন আগে কক্সবাজার আসেন। বৃহস্পতিবার স্থল সীমান্ত ও শুক্রবার স্পিড বোটে শাহপরীরদ্বীপসহ নানা সীমান্ত পরিদর্শন করেন বিজিবি মহাপরিচালক।   সায়ীদ আলমগীর/এফএ/পিআর

Advertisement