তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ডের চার বছর পূর্তিতে নিহত শ্রমিকদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা জানিয়েছে পোশাক শ্রমিক, বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ মানুষ। আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে পুড়ে যাওয়া তাজরীন ফ্যাশনসে বৃহস্পতিবার সকালে এই শ্রদ্ধা জানায় তারা। এতে হতাহত শ্রমিকদের স্বজন ও অনাথ শিশুরাও অংশ নেয়।সকাল থেকেই অশ্রুসিক্ত নয়নে স্বজন হারানো শত শত মানুষ সমবেত হন আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরের তাজরীন ফ্যাশনসের সামনে। তাদের সঙ্গে যোগ দেন সাধারণ শ্রমিকরাও। একে একে নিহত শ্রমিকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান সবাই।তাজরীন ফ্যাশনসের প্রধান ফটকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান বিভিন্ন সামাজিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ স্থানীয় জনতা। এসময় স্বজনরা অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন।তাজরীন ট্র্যাজেডিতে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে জনতা। পুড়ে যাওয়া ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে শ্রমিক সংগঠনগুলো। মিছিল নিয়ে নিশ্চিন্তপুরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে তারা।সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নিজেদের বেদনা ও দুর্ভোগের কথা তুলে ধরেন হতাহতদের স্বজনরা। তারা দাবি জানান, পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের। মালিক দেলোয়ার হোসেনের শাস্তির দাবিও জানান তারা।বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, একের পর এক দুর্ঘটনায় শত শত প্রাণ হারালেও গাফিলতির জন্য মালিকদের কোনো শাস্তি হচ্ছে না। এ কারণে মালিকরা দিন দিন উদাসীন হচ্ছেন। তাজরীন ফ্যাশনসের মালিক দেলোয়ার হোসেন বর্তমানে জামিনে। এটি খুবই দুঃখজনক বিষয়। জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর দাবি জানায় তারা।বাংলাদেশে গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতি সভাপ্রধান তাসলিমা আক্তার লিমা বলেন, এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়। এটি পরিকল্পিত একটি হত্যাযজ্ঞ। মালিক দেলোয়ার হোসেনের নির্দেশেই ফটকে তালা লাগিয়ে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। বীমা কোম্পানির টাকা হাতে পাওয়ার জন্যই পরিকল্পিতভাবে দেলোয়ার হোসেন এই আগুনের ঘটনা ঘটায়। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করি।২০১২ সালের এই দিনে তাজরীন ফ্যাশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনের সূত্রপাত হওয়ার পর তালাবদ্ধ কারখানা থেকে বাইরে বের হতে না পারায় ঘটে প্রাণহানির ঘটনা। সরকারি হিসেবে প্রাণ হারায় ১১১ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে মারা যায় আরো দুইজন। আগুনের হাত থেকে বাঁচতে ভবন থেকে মাটিতে লাফিয়ে পড়ে আহত হয় আরো অনেক শ্রমিক।অাল-মামুন/এআরএ/পিআর
Advertisement