আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্ত মানবতাবিরোধী অপরাধীদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে । মঙ্গলবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক গণমাধ্যমকে জানান, আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত সাজাপ্রাপ্তদের ফিরিয়ে আনার। আইনি প্রক্রিয়ায় তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। আইন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৭টি মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ১৮ জনের পাঁচ আসামি পলাতক রয়েছেন। এ পাঁচজনকেই দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। তবে এসব আসামিদের মধ্যে বাচ্চু রাজাকারের অবস্থান নিশ্চিত হওয়া যায়নি। অন্য চারজনের অবস্থান স্পষ্ট হলেও যথাযথ নিয়ম মেনেই তাদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে সরকারকে। জামায়াতের সাবেক রোকন আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চু রাজাকার বিচার শুরুর সময়ই ভারতে পালিয়ে যান। ওই সময় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করে সরকার। প্রথমে ভারতে আছে এমন তথ্যে দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তবে ভারত থেকে তার কোনো হদিস দিতে পারেনি। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে সরকারের কাছে খবর আসে বাচ্চু রাজাকার পালিয়ে পাকিস্তানে আত্মগোপনে রয়েছেন। পাকিস্তানে তার খোঁজ করা হয়েছে কিনা নিশ্চিত হওয়া যায়নি মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত। মুক্তিযুদ্ধের সময় বুদ্ধিজীবী হত্যার দুই ঘাতক আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মাঈনুদ্দিনের অনুপস্থিতিতেই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার সম্পন্ন হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আশরাফুজ্জামান খান যুক্তরাষ্ট্রে এবং চৌধুরী মাঈনুদ্দিন যুক্তরাজ্যে রয়েছেন বলে তথ্য পেয়েছে সরকার। এরপরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এদের ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। স্ব-ঘোষিত রাজাকার, ফরিদপুরের নগরকান্দা পৌরসভার মেয়র ও পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি জাহিদ হোসেন খোকনও বিচার শুরুর আগেই দেশ থেকে পালিয়ে যান। পলাতক অবস্থায়ই তার বিচার সম্পন্ন হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। স্ব-ঘোষিত এই রাজাকার রয়েছেন সুইডেনের স্টকহোমে বড় ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক এসব আসামিদের সঙ্গে সর্বশেষ যোগ হয়েছে ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বারের নাম। জাতীয় পার্টির সাবেক এ নেতাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি একটি অভিযোগে তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এই আসামি রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। তবে তদন্তকারী সংস্থার সদস্য হেলাল উদ্দিন দাবি করেন আব্দুল জব্বার বাংলাদেশেই আছেন। ২০০৯ সালে তিনি আমেরিকায় গিয়েছিলেন। পরে চলে এসেছেন। এরপর থেকে তিনি কোথায় আছে আর কেউ বলতে পারছে না। পালিয়ে থাকা এসব আসামিদের কবে নাগাদ ফেরত আনা সম্ভব হতে পারে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, এখনই তা বলতে পারবো না।এসআরজে
Advertisement