মতামত

লজ্জা!

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে নিজের ব্যাগ খুইয়েছেন নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত লিওনি মারগারেথা কোয়েলিনেয়ার। বিষয়টি আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জার। এটিকে কেবল আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা হিসেবে দেখলে চলবে না। কেননা এর সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তির বিষয়টিও জড়িত। গত সোমবার বিকেলে ফটোগ্রাফি বিভাগের চার বছর পূর্তি উপলক্ষে ‘কাউটার ফটো’ শীর্ষক পাঁচ দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন ডাচ রাষ্ট্রদূত। বিকেল ৫টায় মোমবাতি প্রজ্বলনের জন্য চেয়ারে ব্যাগ রেখে মঞ্চের সামনে দাঁড়ান তিনি। এ সময় পেছন থেকে এক ছেলে ব্যাগটি হাতে নিয়ে দৌড় দেয়। ব্যাগে মোবাইল ফোন, নোটপ্যাডসহ অনেক মূল্যবান জিনিস ও ডকুমেন্ট ছিল। অতি প্রয়োজনীয় জিনিস হারিয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি লিওনি। তার এই কান্না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা এটাকে নিজেদের লজ্জা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। লিওনি এমন এক দেশের রাষ্ট্রদূত, যেখানে কয়েদির অভাবে কারাগার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গত কয়েক বছরে  নেদারল্যান্ডসের ১৯টি কারাগার বন্ধ হয়ে গেছে। বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, অপরাধীদের পুনর্বাসন করেছেন সে দেশের সরকার। তাই অপরাধীদের সংখ্যা কমে গেছে। বলা যায়, অপরাধমুক্ত একটি দেশের রাষ্ট্রদূতকে দায়িত্ব পালন করতে অন্য দেশে এসে যে রকম অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে, তা তার জন্য অভাবনীয়। রাষ্ট্রদূতদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া জঙ্গিবাদজনিত সমস্যার কারণে বিদেশিদের নিরাপত্তার ব্যাপারে যেখানে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, সেখানে একজন রাষ্ট্রদূতের  নিরাপত্তা ব্যবস্থার এই হাল হয় কী করে? কোথাও কোনো ঘাটতি ছিল কিনা- সেটি খুঁজে বের করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা অপরাধীদের অভয়ারণ্য হবে- সেটিও কোনো ভালো কথা নয়। শুধু অপরাধীকে গ্রেফতারই নয়, এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে- সে ব্যাপারেও সচেতন থাকতে হবে। এইচআর/এনএইচ/পিআর

Advertisement