চট্টগ্রাম পর্বের শুরুটা হয়েছিল পরাজয়ের হতাশা দিয়ে। তবে শেষে এসে সেই হতাশা আর ভর করেনি চিটাগাং ভাইকিংসের ওপর। চট্টগ্রামে ঢাকার কাছে হারের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছিল তামিম ইকবালের দল। মঙ্গলবার প্রতিশোধের ম্যাচে বরিশাল বুলসকে ৭৮ রানে হারিয়ে নিজেদের মাঠে টানা তৃতীয় জয় তুলে নিলো ভাইকিংসরা।জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৮৫ রান করেছে চিটাগাং ভাইকিংস। জবাবে ১৮.৪ ওভারে বরিশালের ইনিংস থামে ১০৭ রানে।লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বরিশাল। চিটাগাংয়ের বোলারদের তোপে একে একে সাজঘরে ফিরে যান ডেভিড মালান, শাহরিয়ার নাফীস, মুশফিকুর রহীমরা। এ কী দশা বরিশালের? বড় লক্ষ্য দেখে ভড়কে গেলেন মুশফিকরা? নাকি উইকেটের চরিত্র বদলে বরিশালের ইনিংসে?যত প্রশ্নই আসুক। হারটাই বড় কথা। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় বরিশালের সামনে তো বড় লজ্জাই অপেক্ষা করছিল। বিপিএলে এক ইনিংসে সর্বনিম্ন রানের লজ্জার রেকর্ড (৪৪ রান)! সেটা অবশ্য হয়নি। বেচে গেছে অষ্টম উইকেটে এনামুল হক ও তাইজুল ইসলামের কল্যাণে।তার আগে বরিশালের হতশ্রী অবস্থা ছিল চোখে পড়ার মতোই। উইকেট পতনের মিছিলের রেওয়াজটা সবার আগে তোলেন ডেভিড মালান। ইংল্যান্ডের হার্টহিটার এই ব্যাটসম্যানের কাছে প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি। সে আশায় গুড়ে বালি। মোহাম্মদ নবীর বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে মালান সাজঘরে ফিরেছেন মাত্র ৫ রান করেই।ভাইকিংসের বিপক্ষে ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নামা নাদিফ চৌধুরীও শিকার নবীর। বরিশালের এই খেলোয়াড় আউট হন ব্যক্তিগত চার রানের মাথায়। শাহরিয়ার নাফীসও নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেন। আসরের শুরু থেকেই জ্বলে থাকা নাফীস এদিন নিভে গেছেন ব্যক্তিগত ১ রানের মাথায়। শুভাশিষ রায়ের কাছে পরাস্ত হন তিনি।এরপর দলের হাল ধরতে চেয়েছিলেন মুশফিকুর রহীম। তবে দলকে বেশি দূর টানতে পারেননি। ১৯ রান করে তাসকিন আহমেদের বলে নবীর তালুবন্দী হন বরিশাল অধিনায়ক। এরপর জীবন মেন্ডিস ১ আর রিয়াদ এমরিট করেন ৬ রান। শোয়েব মালিকের বলে বোল্ডআউট হওয়া থিসারা পেরেরা তো রানের খাতাই খুলতে পারেননি। এরপর তাইজুল ১২ ও আবু হায়দার রনি ৮ রান করেন।৪ রান করে রানআউটে কাটা পড়েন কামরুল ইসলাম রাব্বি। ৩৭ বলে একটি চার ও ৪টি ছক্কায় ৪২ রানে অপরাজিত থাকেন এনামুল হক। চিটাগাংয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মোহাম্মদ নবী। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন শুভাশিষ রায় ও তাসকিন আহমেদ। একটি করে উইকেট নিয়েছেন ইমরান খান ও শোয়েব মালিক।এর আগে চিটাগাংয়ের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৪৩ রান। ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচে তামিমের ব্যাট থেকে লম্বা ইনিংসই হয়তো আশা করেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। সেটা অবশ্য পূরণ করতে পারেননি দলীয় অধিনায়ক। ১৯ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ১৯ রান করে কামরুল ইসলাম রাব্বির শিকার হন।তবে এদিন বরিশালের বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দিয়েছেন চিটাগাংয়ের আরেক ওপেনার ডোয়াইন স্মিথ। ৪৯ বলে ৬টি চার ও তিনটি ছক্কায় ৬৯ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন। ক্যারিবিয় এই অলরাউন্ডার ধরাশায়ী থিসারা পেরেরার কাছে। ব্যক্তিগত ১১ রান করতে পেরেছেন আগের ম্যাচে ফিফটি করা এনামুল হক বিজয়।চার নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ঝড় তোলেন শোয়েব মালিক। ৩০ বলে ৯টি চার ও দুটি ছক্কায় ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন পাকিস্তানি এই অলরাউন্ডার। তিনি প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন রিয়াদ এমরিটের বলে আবু হায়দার রনির হাতে ক্যাচ দিয়ে। আগের ম্যাচে চিটাগাংয়ের জয়ের নায়ক মোহাম্মদ নবী এদিন ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি।মাত্র ৪ রানেই থেমে গেছেন আফগানিস্তানের এই অলরাউন্ডার নবী। ৭ রানে অপরাজিত থাকেন জহিরুল ইসলাম অমি। বরিশালের পক্ষে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন কামরুল ইসলাম রাব্বি ও থিসারা পেরেরা। একটি উইকেট দখলে যায় রিয়াদ এমরিটের।এনইউ/আরআইপি
Advertisement