সংবাদপত্র ও প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা চলছে বলে মনে করছে সম্পাদক পরিষদ। মঙ্গলবার `ডেইলি স্টার` সম্মেলন কক্ষে সম্পাদক পরিষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ আনাম। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদপত্র ও জাতীয় প্রচার মাধ্যমের পক্ষে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। একদিকে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে দায়িত্বরত সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে অন্যদিকে সংবাদপত্র ও প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা চলছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রচার মাধ্যমের অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে- উল্লেখ করে এতে বলা হয়, সরকার ও প্রশাসন স্বাধীন ও নিরপেক্ষ সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশনায় বাধা সৃষ্টি করছে। কখনো কখনো কোনো কোনো পত্রিকা বা টেলিভিশনকে অন্যায়ভাবে বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর মুখপাত্র হিসেবে তকমা দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বিশেষত সম্প্রতি দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় প্রকাশিত একটি ছবি ও ক্যাপশন ছাপানোকে কেন্দ্র করে সংসদে দেওয়া প্রতিক্রিয়া প্রচার মাধ্যমের প্রতি বৈরী মনোভাবেরই প্রকাশ, যা কোন সরকারের কাছ থেকে কাম্য নয়। সংসদে সম্পাদক ও প্রকাশকদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়েছে, যা তাদের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ। ইতোমধ্যে একাধিক সম্পাদক ও প্রকাশকের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে- উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ পত্রিকার অফিসে তল্লাশির নামে পুলিশি হয়রানির মতো ঘটনাও ঘটানো হয়েছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। এছাড়াও একাধিক টিভি মালিককে গ্রেফতার করে ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, টিভি টকশোতে নানাভাবে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কিছু টকশো বন্ধ করা হয়েছে। টকশোর অতিথি তালিকা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। লাইভ অনুষ্ঠান প্রচার নিয়ে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। কী প্রচার হবে আর হবে না তা নিয়ে টেলিফোনে নির্দেশনাও স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর হস্তক্ষেপ বলে আমরা মনে করি। কোনো কোনো সাংবাদিককে সরকারি অনুষ্ঠানে ও দলীয় কার্যক্রমের খবর সংগ্রহের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না- জানিয়ে সম্পাদক পরিষদের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণমাধ্যমের কোন কোন সাংবাদিককে সরকারি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ও দলীয় কার্যক্রমের খবর সংগ্রহের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। প্রচার মাধ্যমসহ অন্যান্য পক্ষকে বিরুদ্ধ শক্তি হিসেবে দাঁড় করিয়ে অযথা হয়রানি করাটা স্বাধীন গণমাধ্যমের সহায়ক হতে পারে না। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সংবাদপত্রসহ সকল প্রচার মাধ্যমের স্বাধীনতা, বস্তুনিষ্ঠতা ও দলনিরপেক্ষতা সংরক্ষণে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে অধিকতর দায়িত্বশীল ও সহযোগিতামূলক আচরণ আশা করি।এএইচ/পিআর
Advertisement