জাতীয়

জব্বারের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য পলাতক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।জব্বারের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো হলো :এক. একাত্তরে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া থানাধীন তুষখালীতে দুই মুক্তিযোদ্ধাকে জব্বারের নির্দেশে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডটি রাজনৈতিক কারণে সংগঠিত হওয়ায় আসামির বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়।দুই. হিন্দু সম্প্রদায়কে পুরোপুরি ধ্বংস করার জন্য আসামির নির্দেশ মোতাবেক রাজাকার বাহিনী গ্রামের নিরীহ নিরস্ত্র হিন্দুদের ওপর গুলি চালিয়ে সারদা কান্ত পাইক হত্যা ও গ্রামের ৩৬০টি বাড়ির মালামাল লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।তিন. মঠবাড়ীয়া থানাধীন নলীগ্রামে আসামির নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে এবং আসামি নিজে গুলি করে এবং তার নির্দেশে রাজাকার বাহিনী নির্বিচারে গুলি করে গ্রামের নিরীহ নিরস্ত্র মোট ১১ জন হিন্দু জনসাধারণকে হত্যা করে এবং গ্রামের ৬০টি বাড়ির সমস্ত মালামাল লুটপাট করে।চার. আসামির নির্দেশে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়ীয়া থানার তুষখালী গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় দুইশ নিরীহ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক কলেমা পড়িয়ে এবং নামাজ আদায়ে বাধ্য করে মুসলমান ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয় এবং তাদের সকলকে মুসলমান নাম দেয়া হয়।পাঁচ. আসামির নির্দেশ, পরামর্শ ও প্ররোচনায় পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া সদর এবং আশুলকাটা গ্রামের মোট ৩৭ জন নিরীহ নিরস্ত্র হিন্দু ব্যক্তিকে দড়ি দিয়ে বেঁধে সূর্য্যমণি বধ্যভূমির কাছে নিয়ে যায়। আসামির গঠিত রাজাকার বাহিনী তাদের মধ্যে ২২ জনকে গুলি করে হত্যা করে আর বাকি ১৫ জন গুলিতে মারাত্মক জখম হয়।মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ পলাতক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বারকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন।আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে আনা পাঁচটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। রায়ে ১, ২, ৩ ও ৫ নম্বর অভিযোগে আমৃত্যু কারাদাণ্ড দেয়া হয়। পাঁচ নম্বর অভিযোগে ২০ বছর কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।১৯৮৮ ও ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার জব্বার। ৮০ বছর বয়সী জব্বার যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় ছেলে-মেয়ের কাছে পালিয়ে আছেন বলে প্রসিকিউশন ধারণা করছেন।বিএ/আরআইপি

Advertisement