খেলাধুলা

জিমিদের মিশন হংকং

চাইনিজ তাইপে, হংকং ও ম্যাকাও- গ্রুপে প্রতিপক্ষ নামগুলো দেখলেই পরিষ্কার এশিয়ান হকি ফেডারেশন (এএইচএফ) কাপে কতটা ফেবারিট বাংলাদেশ। যদি অন্য গ্রুপে চোখ দেয়া যায় সেখানেও কিছু দূর্বল দল- সিঙ্গাপুর, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড ও উজেবিকস্তান। এই ৮ জাতি টুর্নামেন্টে বাংলাদেশকে রুখবে কে? হকিভক্তদের আরও আশাবাদী করবে আরেকটি তথ্য-এ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ সর্বশেষ দুইবারের চ্যাম্পিয়ন। যার অর্থ এবার জিতলে হ্যাটট্রিক শিরোপা বাংলাদেশের। এ অর্জনের লক্ষ্য নিয়েই শুরু হয়েছে জিমিদের মিশন হংকং। আগামী ১৯ থেকে ২৭ নভেম্বর হংকংয়ে অনুষ্ঠিত হবে এ টুর্নামেন্ট।এ টুর্নামেন্ট আসলে এশিয়া কাপ হকির বাছাই পর্ব। একমাত্র চ্যাম্পিয়ন দল খেলতে পারবে এশিয়ার সবচেয়ে বড় হকির এ টুর্নামেন্টে। যে কারণে, এএইচএফ কাপের ট্রফির চেয়ে বড় বিষয় হলো এশিয়া কাপে অংশ গ্রহনের সুযোগ। ধরেই নেয়া যায় এ টুর্নামেন্ট বাংলাদেশের জন্য দুধভাত। গত দুটি আসরের দাপটের সঙ্গে প্রতিপক্ষদের উড়িয়ে দিয়ে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট পরেছে লাল সবুজ জার্সিধারীরা। কোনো অঘটনের শিকার না হলে এবার হংকংয়েও উড়বে লাল সবুজ পতাকা। এমন প্রত্যাশার সুবাস ছড়িয়েই বুধবার রাতে হংকং গেছে জিমি চয়নরা। এই প্রথম কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নেয়ার আগে দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়েছে হকি দল। টুর্নামেন্ট আসলেই ‘ওঠ ছেরি তোর বিয়ে’র মতো এবার প্রস্তুতি নেয়া হয়নি। প্রস্তুতির অংশ হিসেবে মাসখানেক হকি দলকে ইউরোপেও রাখা হয়েছে। জার্মানিতে ক্যাম্প করে পোল্যান্ড ও অস্ট্রিয়াতে ৮ টি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছে জিমি চয়নরা। যার ৫টি ড্র করে ৩টিতে হেরেছে। স্থানীয় কোচ মাহবুব হারুনের মতে, ‘ইউরোপে অনুশীলন করে ও ম্যাচ খেলে অনেক নতুন কিছু দিক্ষা নিয়েছেন খেলোয়াড়রা। আশা করি, এগুলো কাজে লাগবে পরবর্তীতে।’প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক- এমন একটা ছোট টুর্নামেন্টে খেলার আগে কেন এত বড় প্রস্তুতি। আসলে এএইচএফ কাপটা বাংলাদেশের জন্য একটা আনুষ্ঠানিকতা। এখানে খেলতে হবে, চ্যাম্পিয়ন হতে হবে-বিষয়টা এখানেই সীমাবদ্ধ নয়। হকির চোখ আরও উপরে। এ টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়ন হলে এশিয়া কাপ। সেখানে এশিয়ার বাঘা বাঘা দলের সামনে পড়তে হবে। ব্যাপক প্রস্তুতির আরও কারণ আছে।  আগামী মার্চে ঢাকায় বসছে ওয়ার্ল্ড হকি লিগের রাউন্ড-২ এর আসর। সেখানে এশিয়ার বাইরের অনেক দলও আছে। এ সব মাথায় রেখেই হকির জন্য লম্বা প্রস্তুতির ব্যবস্থা করেছে ফেডারেশন।বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক এবার ইউরোপের বাইরে অন্য কোথাও হকি দলকে অনুশীলনের কথা বললেন ‘জাতীয় দল হংকং থেকে ফিরলে আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হবে অন্য কোনো মহাদেশে নিয়ে খেলোয়াড়দের অনুশীলনের সুযোগ করে দেয়া। ওই সময় যেহেতু ইউরোপে অনেক ঠান্ডা থাকবে তাই আমরা চিন্তা করছি দক্ষিণ আফ্রিকার কথা। সেখানে দলকে রেখে ক্যাম্প ও প্রস্তুতি ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা করবো।’কিছু দিন আগে ঢাকায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৮ এশিয়া কাপে দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ। কেবল রানার্সআপই হয়নি, এ টুর্নামেন্টে আশা জাগানিয়া খেলাও উপহার দিয়েছে যুবারা। এই দলটির বেশ কয়েকজন খেলোয়াড় আছেন জাতীয় দলে। তাইতো জার্মান কোচ অলিভার কার্টজ বেশ আশাবাদী হংকংয়ে ভালো খেলা উপহার দিতে। যাওয়ার আগে তিনি জাগো নিউজকে বলেছেন, ‘একটি ব্যালান্সড দল আমাদের। আশা করি, ওখানে বাংলাদেশ স্টিকওয়ার্কে সবাইকে মুগ্ধ করবে। আর চ্যাম্পিয়ন? সেটা তো আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। যদি চ্যাম্পিয়ন হতে না পারি তাহলে বলবো আমি ভালো কোচ নই।’অলিভার কার্টজ এখন জাতীয় দলের প্রধান কোচ। এক সময় পিটার গেরহার্ডের সহকারী ছিলেন। পিটার এখন উপদেষ্টা কোচ। আর অলিভারের সহকারী স্থানীয় মাহবুব হারুন। যার কোচিংয়েই সর্বশেষ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। দেশের পরীক্ষিত এ কোচের অধীনে ওয়ার্ল্ড হকি লিগেও দুর্দান্ত খেলেছিল বাংলাদেশ।দলটি অভিজ্ঞ ও তারুণ্যের মিশেলে গঠন হলেও অনভিজ্ঞ কেউ নেই। সবারই আছে জাতীয় দলে খেলার অভিজ্ঞতা। সর্বশেষ এসএ গেমসের দলটিতে মাত্র দুটি পরিবর্তন এনে তৈরী করা হয়েছে এএইচএফ কাপের দল। ভালো খবর হলো এসএ গেমসে দলের বাইরে থাকা দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মামুনুর রহমান চয়ন ও কামরুজ্জামান রানা অন্তর্ভক্ত হয়েছেন এবার। চয়ন অন্তর্ভূক্ত হওয়া মানেই পেনাল্টি কর্নার নিয়ে আরও আশা বেড়ে গেলো। গত যুব এশিয়া কাপে পেনাল্টি কর্নারে প্রতিপক্ষদের কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন আশরাফুল। এবার জুটিতে তিনি পাচ্ছেন চয়নকে। চার বছর পর অধিনায়কত্ব ফিরে পাওয়া রাসেল মাহমুদ জিমিতো দারুন আশাবাদী দুই পেনাল্টি কর্নার স্পেশালিস্টকে এক সঙ্গে পেয়ে ‘চয়ন ও আশরাফুল থাকায় পেনাল্টি কর্নার নিয়ে কোচ অনেক পরিকল্পনা করেছেন। ওরা যেভাবে পেনাল্টি কর্নার নেয় তার ৮০ ভাগও যদি ওখানে পারেন তাহলে সবক’টিতেই গোল হবে আমার বিশ্বাস।’জাগো চ্যাম্পিয়নের ১৫তম সংখ্যা পুর্নাঙ্গ পড়তে ক্লিক করুন এই লিংকে...আইএইচএস/পিআর

Advertisement