মতামত

জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে কে?

প্রকাশ্যে গুলি করে ও কুপিয়ে চেয়ারম্যান হত্যা, ঢাকায় ছিনতাইকারীর মারধরে সাংবাদিক আহত, রাজধানীতে বাসায় ঢুকে নারীকে গলা কেটে হত্যা, টেন্ডার না পেয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের ঘটনা দেশের নাজুক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকেই তুলে ধরছে। একদিকে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা অন্যদিকে খুন-খারাবি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, নৃশংসতা ও অমানবিকতা। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। জননিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো সক্রিয় হতে হবে। মানুষকে দিতে হবে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। কুমিল্লায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিতাস উপজেলার জিয়াকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন সরদার (৪৮) এবং তার শ্যালক মহি উদ্দিন (৩৫) নিহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার ভোরে দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে। পূর্বশক্রতার জের ধরে সকাল ৭টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের ওপর হামলা এবং গুলি চালায়। এতে অন্তত আটজন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে গৌরিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর মহিউদ্দিন এবং ঢামেকে ভর্তির পর চেয়ারম্যান মনির হোসেনের মৃত্যু হয়। অন্যদিকে খোদ রাজধানীতে ঘটছে একাধিক খুনের ঘটনা। ছিনতাইকারীর কবলে পড়াটা যেন এখন নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে-সেখানে নানা বেশে ওতপেতে আছে ছদ্মবেশী ছিনতাইকারী। এদের কবল থেকে কেউ রেহাই পাচ্ছে না।গত বুধবার সকালে কাজলা থেকে গুলিস্তান যেতে একটি মাইক্রোবাসে উঠে যাত্রীবেশী ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন  বিডিনিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকমের আদালত প্রতিবেদক প্রকাশরঞ্জন বিশ্বাস। ছিনতাইকারীরা মারধর করে টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাইক্রোবাসে ওঠেন তিনি।  সেটিতে আগে থেকেই পাঁচজন লোক ছিল। মাইক্রোবাসে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে তারা ওই সাংবাদিকের হাত-পা এবং চোখ বেঁধে ফেলে। গাড়ি নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরির মধ্যেই হাতুড়ি দিয়ে তার বাম হাত, বুক ও পায়ে আঘাত করে। এরপর  বিকাশের মাধ্যমে ২০ হাজার টাকাও আদায় করে। ছিনিয়ে নেয় মোবাইল ফোন। এরপর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে একটি মাদ্রাসার উল্টো দিকে রাস্তায় তাকে ফেলে যায়।মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকারসহ গাড়ি নিয়ে ছিনতাইকারী চক্র দীর্ঘদিন ধরে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। খোদ রাজধানীতে পুলিশের নাকের ডগায় এমন গুরুতর অপরাধ সংঘটিত হলেও এদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করার যেন কেউ নেই। অনেক ঘটনা ঘটলেও তা নানা কারণে প্রকাশ করে না ক্ষতিগ্রস্তরা। অভিযোগ আছে সর্ষের মধ্যে ভূত আছে। নইলে গাড়িতে করে দিনের পর দিন এভাবে ছিনতাই-রাহাজানি চালায় কী করে দুর্বৃত্ত চক্র। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো সক্রিয় হতে হবে। যে কোনো মূল্যে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। কারো কোনো দায়িত্বে অবহেলা থাকলে তার বিরুদ্ধেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এইচআর/পিআর

Advertisement