সব হিসাব-নিকাশ আর জল্পনা-কল্পনা উল্টে দিয়ে আগামী চার বছরের জন্য হোয়াইট হাউসের অধিবাসী হচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার জনগণ তাকে দেশের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেছেন। আমেরিকাকে শ্রেষ্ঠত্বের শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার যে স্বপ্ন তিনি ভোটারদের দেখিয়েছিলেন, সেই স্বপ্নপূরণে তার ওপর আস্থা রেখেছেন বেশির ভাগ ভোটার। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দই জানাই। এবারের মার্কিন নির্বাচন ছিলো নানা দিক থেকেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। বাংলাদেশেও এ নির্বাচনের ঢেউ এসে লেগেছিলো। সাবেক ফার্স্ট লেডি ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের মতো ক্যারিশম্যাটিক প্রার্থীর সঙ্গে ট্রাম্পের নির্বাচনী লড়াই সহজ ছিলো না। বস্তুত প্রভাবশালী সব মার্কিন গণমাধ্যমই প্রকাশ্যে হিলারির পক্ষ নিয়েছিল। এমনকি দল থেকেও খুব একটা সাহায্য-সহযোগিতা পাননি ট্রাম্প। এরপরও সব বাধা-বিপত্তি উজিয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে উচ্চতর আসনে নিজেকে নিয়ে যেতো সক্ষম হয়েছেন ট্রাম্প। নিজের ওপর প্রবল আস্থা আর দৃঢ় সংকল্পই তাকে সফলতা দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার অনেক আগে থেকেই মার্কিন সমাজে তিনি একজন ধনকুবের হিসেবে পরিচিত। মার্কিনেরা ট্রাম্পকে চেনেন বর্ণাঢ্য ও জাঁকালো জীবনের অধিকারী ব্যবসায়ী হিসেবে। সেই ব্যবসায়ী যে বিশ্বরাজনীতির ক্ষমতার একেবারে কেন্দ্রে চলে যাবেন, সে কথা হয়তো তার অনেক ঘনিষ্ঠরাও ভাবতে পারেননি। তবে তারা যা ভাবতে পারেননি, তা তিনি করে দেখিয়েছেন। এখন বিশ্ববাসী তাকিয়ে আছে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি কতোটা পারঙ্গমতার পরিচয় দিতে পারেন। এবারের নির্বাচনে ছিলো নানা বিতর্ক। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী ও মুসলিমবিদ্বেষী কিছু বক্তব্য সমালোচনারও ঝড় তুলেছিল। অন্যদিকে হিলারি ক্লিনটনের ই-মেইল ফাঁস ও নির্বাচনের আগে দু’বার করে এফবিআইয়ের তদন্তে নামার বিষয়টিও নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে বলে বিশ্লেষকেরা বলছেন। তবে নির্বাচন-পরবর্তী সমাবেশে ট্রাম্প সবাইকে নিয়ে এক সঙ্গে চলার কথা বলেছেন। হিলারি ক্লিনটনও পরাজয় মেনে নিয়ে ট্রাম্পকে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সারা দুনিয়ার রাজনীতি-অর্থনীতিতেও যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রভাব রয়েছে। এ কারণেই দেশটির নেতৃত্ব নির্বাচনকে গোটা বিশ্বই গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন নেতৃত্বের অধীনে আরো জোরদার ও গতিশীল হবে। ট্রাম্প বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় জোরালো ভূমিকা রাখবেন বলেও আমাদের বিশ্বাস। এইচআর/এবিএস
Advertisement