ধর্ম

রোজার বিধান সহজ ও কোমলে আল্লাহর ঘোষণা

রোজার বর্তমান বিধানের ন্যায় ইসলামের প্রথমিক সময়ে এরূপ অনুমতি ছিল না। প্রাক ইসলামী যুগে রোজা পালনের সময় দিনের মতো রাতের বেলায়ও স্ত্রীদের নিকট থেকে পৃথক থাকার নির্দেশ ছিল। পরবর্তীতে রোজার বিধানের ব্যাপারে সহজ ও কোমলতা অবলম্বন করা হয়েছে। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা এ বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন-আয়াতের অনুবাদআয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণসুরা বাকারার ১৮৭নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মাসব্যাপী রোজা পালনের সময় দৈনন্দিন সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিধি-নিষেধ ছিল; এ আয়াত দ্বারা রোজার সময় আল্লাহ তাআলা স্বামী-স্ত্রীর জীবন-যাপনের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।পবিত্র রমজান মাসে রোজা পালনের হুকুম জারি হওয়ার পর বিধান ছিল- ইফতারের পর ইশার নামাজের বা ঘুম যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত পানাহার এবং স্ত্রী-সহবাস বৈধ ছিল। কিন্তু কেউ ঘুমালে বা ইশার নামাজ আদায় করলে পানাহার ও স্ত্রী-সহবাস নিষিদ্ধ হয়ে যেতো। এ নির্দেশ পালন করা ছিল অত্যন্ত কঠিন।ইমাম বুখারিসহ সকল হাদিসবেত্তাগণ বিখ্যাত সাহাবি হজরত বারা ইবনে আজেব রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদিস সংকলন করেছেন, ‘প্রথম যখন রমজানে রোজা ফরজ হলো তখন উপরোক্ত নির্দেশের কারণে অনেক সাহাবির কষ্ট হতে লাগলো।যেমন- একবার আনসারি সাহাবি হজরত কায়েস বিন ছারমা রাদিয়াল্লাহু আনহু রোজা রেখেছিলেন। যখন ইফতারের সময় হলো তখন তিনি তাঁর স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলে ঘরে খাবার কিছু আছে কি-না। স্ত্রী জবাব দিলেন, ‘খাবার কিছু নেই তবে আপনার জন্য কোথাও থেকে নিয়ে আসি।’হজরত কায়েস বিন ছারমা রাদিয়াল্লাহু আনহু সারাদিন কাজ করতেন। স্ত্রী চলে যাওয়ার পর তিনি ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়লেন। যখন স্ত্রী- ফিরে আসলেন তখন তাঁকে ঘুমাতে দেখে আফসোস করে বললেন, দুর্ভাগ্য আমার, এখন ইনি খাবেন কি করে! পরদিন যখন দ্বিপ্রহর হলো তখন তাঁর দুর্বলতা এত বেড়ে গেল যে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লেন।এ ঘটনা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে পেশ করা হলো। তখন এ আয়াতটি নাজিল হয়।তিনি আরো বর্ণনা করে যে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর সারা রমজান মাসে কেউ স্ত্রীর কাছে যেতো না। এখানে তাও শিথিল করা হয়েছে। তাছাড়া ই’তিকাফ অবস্থায় রোজাদারের করণীয় ও বিধান এ আয়াতে নির্ধারণ করা হয়েছে।সর্বোপরি এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা রোজার সাহরি গ্রহণ এবং ইফতার সম্পর্কিত আলোচনা ও রোজাদার কতক্ষণ পর্যন্ত রোজা পালন করবে এ বিষয়গুলো সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছে।পড়ুন- সুরা বাকারার ১৮৬ নং আয়াতপরিষেশে...আল্লাহ তাআলা রমজানের রোজার প্রাথমিক ও কষ্টকর বিষয়গুলো বান্দার সহজ করতে এ আয়াত নাজিল করেন। যা বান্দার জন্য মহান রবের পক্ষ থেকে করুণা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর বিধি-বিধান পালনে সতর্ক হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এমএস

Advertisement