ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী। তরুণ রাজনীতিক। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটিতে সাংগঠনিক পদে নির্বাচিত হয়েছেন। চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের বিশেষ নেতৃত্ব বাবা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর কাছ থেকেই রাজনৈতিক দীক্ষা নেয়া তার। দলের পাশাপাশি চট্টগ্রামের রাজনীতির নানা প্রসঙ্গ নিয়ে সম্প্রতি মুখোমুখি হন জাগো নিউজ -এর। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সায়েম সাবু। আজ থাকছে এর প্রথম পর্ব।
Advertisement
জাগো নিউজ : তরুণ বয়সে দলের সাংগঠনিক পদে দায়িত্ব পেলেন। গুরুত্বপূর্ণ পদে আসা নিয়ে আপনার অনুভূতি কি? মহিবুল হাসান : তারুণ্যের ডাক এসেছে। সভানেত্রী নিজেও তার কাজকর্মে তারুণ্যের প্রতিনিধিত্ব করেন। তার দিকনির্দেশনাতেই এবারের কমিটি হয়েছে। কমিটিতে তারুণ্যের সম্মিলন ঘটেছে। এ কারণে সভানেত্রীকে সাধুবাদ জানাই।জাগো নিউজ : দায়িত্ব নিয়ে কী ভাবছেন?মহিবুল হাসান : এখনও দায়িত্ব বণ্টন হয়নি। কার্যনির্বাহী সভায় সিদ্ধান্ত হবে কে কোন বিভাগের দায়িত্ব পাচ্ছি। আমি চট্টগ্রামের দায়িত্ব নাও পেতে পারি। তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যেখানে দায়িত্ব দেবে সেখানেই পালন করবো। জাগো নিউজ : চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্ব যদি নাও পান, তবুও চট্টগ্রামকে ঘিরেই আপনার এবং আপনার পরিবারের রাজনীতি।মহিবুল হাসান : এটি সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপট। আমার নির্দিষ্ট কোনো নির্বাচনী আসন নেই। নির্বাচন করার কোনো অভিলাষও নেই। দলের তাগিদেই কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে আনা হয়েছে। এ মুহূর্তে প্রধান লক্ষ্য হবে সেই প্রয়োজন অনুভব করে কাজ করা। দলের যে দর্শন রয়েছে, তার আলোকেই নিবেদিত থাকা।জাগো নিউজ : রাজনীতির লক্ষ্যই হচ্ছে জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে ও জনগণকে নিয়ে কাজ করা। এ প্রশ্নে নিজ এলাকায় নির্বাচন, নির্বাচনী এলাকার মানুষের বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব পায়।মহিবুল হাসান : হ্যাঁ, রাজনীতির প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে জনগণের জন্য কাজ করা। নেত্রী জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বলেই মাথাপিছু আয় ৫০০ থেকে এখন ১৫০০ ডলার হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। আর তার কন্যা এনে দিচ্ছেন অর্থনৈতিক মুক্তি। জনগণের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নিজেই নিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মতো সাংগঠনিক দক্ষতা আর কারো মধ্যে আছে বলে জানা নেই। শুধু মূল দল নয়, তার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে দলের সহযোগী সংগঠনগুলোও এখন অধিক শক্তিশালী ও সংগঠিত। এ মুহূর্তে একটি ইউনিয়ন কমিটিও অনেক বেশি সংগঠিত। শেখ হাসিনার সাংগঠনিক দক্ষতার কিছুটা অনুসরণ করতে পারলেই আমরা সার্থক এবং সফল হতে পারবো বলে মনে করি।জাগো নিউজ : আপনার বাবাও একজন সফল রাজনীতিক। দলের জন্য তারও অবদান রয়েছে। আপনার কেন্দ্রে দায়িত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে বাবার রাজনীতি কতটুকু সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করেন?মহিবুল হাসান : দায়িত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে বাবার রাজনীতি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কারণ বাবার পরিচয়েই আমার পরিচিতি। দলে অনেক উপদল এক সময় ছিল। কিন্তু বাবার পীর শেখ হাসিনাই। আমরা দেখেছি, শেখ হাসিনার নির্দেশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বাবা কারো সঙ্গে আপস করেননি। দলের স্বার্থে দলীয় সভাপতি যে হুকুম দিয়েছেন, বাবা তা সাধ্যের মধ্যে পালনের চেষ্টা করেছেন।নেত্রীর প্রতি বাবার যে আনুগত্য, আস্থা তা আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখে এসেছি। আর এ কারণেই আমার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দায়িত্ব পাওয়া বলে মনে করি।জাগো নিউজ : প্রচার আছে কেন্দ্রীয় এবং চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে আপনার বাবা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ভিন্নতা আছে।মহিবুল হাসান : এটি উপস্থাপনের বিষয়। প্রচার যদি অপপ্রচারে রূপ নেয় তখন অনেক ধারণাই সৃষ্টি হতে পারে। বাবার রাজনীতি আওয়ামী লীগের নীতি-কাঠামো থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্ছিন্ন হয়নি। বিএনপির আমলে বাবা যখন বন্দর রক্ষাসহ বিভিন্ন আন্দোলন করেছেন, তখনও মানুষ এমন অপপ্রচার চালিয়েছেন। বাবা এসব কথা আমলে নেয়নি। নেত্রীর প্রতি আস্থা এবং আনুগত্য রেখেই বাবার সারা জীবনের রাজনীতি। চট্টগ্রাম নিয়ে নেত্রীর যে ভাবনা ছিল, বাবা তা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন। বাস্তবায়ন করতে গিয়ে আমলাদের সঙ্গে হয়তো ঝামেলায় পড়তে হয়েছে।বাবা শ্রমিক শ্রেণির মানুষ নিয়ে রাজনীতি করেন। তবে কেন্দ্রীয় রাজনীতির সঙ্গে তার কোনো দূরত্ব ছিল না। দূরত্ব থাকলে বার বার দলের মনোনয়ন পেতেন না। এতদিন থেকে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে পারতেন না।জাগো নিউজ : গত সিটি নির্বাচনে আপনার বাবা মনোনয়ন না পাওয়া নিয়ে নানা গুঞ্জন ছিল।মহিবুল হাসান : বাবার বয়স হয়েছে। শরীর আর আগের মতো কাজ করে না। এটি নেত্রীও বুঝতে পেরেছিলেন। প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করা অনেক কষ্টের। বাবাকে দেখেছি, রাত-দিন কাজের মধ্যে থাকতে হয়েছে। এই বয়সে সেভাবে কাজ করা তার পক্ষে আর সম্ভব ছিল না। নেত্রী বিষয়টি বলার পর বাবাও সাড়া দিয়েছেন। এএসএস/এএইচ/জেএইচ/এমএফ/এবিএস