দলের ভীষণ বিপদের মুহূর্তে আরও একবার ত্রাতা হয়ে দাঁড়ালেন। টেনে তুললেন দলকে। টানা তিন বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে ফিফটি। সাকিব আল হাসানের অর্জনের তালিকায় যুক্ত হয়েছে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে চার হাজার রান করার কীর্তিও। নিঃসন্দেহে সাকিব বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন। বাংলাদেশের সব ক্ষেত্র মিলিয়ে সবচেয়ে বড় তারকাও। কিন্তু সাকিবের ওপর যতটা আলো পড়া উচিত, ততটা নজর কি দেয় আন্তর্জাতিক মাধ্যম?মাস তিনেক আগেও কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কার বলেছিলেন, সাকিব তার প্রাপ্য কৃতিত্ব পায় না। কিন্তু ওর বিপক্ষে যারা খেলেছে তারা জানে, ও এমন একজন ক্রিকেটার, যে ব্যাট কিংবা বল দুটি দিয়েই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।অজস্র আক্ষেপ নিয়ে এই কথাটিই বহুমুখ ঘুরে ফিরে প্রতিনিয়ত। একজন সাকিব তো বিশ্ব ক্রিকেটের আকাশেই উজ্জ্বল তারা! র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশকে প্রথম বিশ্বসেরার সম্মান এনে দিয়েছেন, ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে একসঙ্গে তিন সংস্করণেই র্যাঙ্কিং শীর্ষে থাকার অনন্য নজির গড়েছেন সম্প্রতি। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে ভাসিয়েছেন অজস্র গৌরবে। কিন্তু একজন সাকিব আল হাসান শুধু বাংলাদেশের বলেই কি যত অবজ্ঞা? ব্রিটেনের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রভাবশালী পত্রিকা গার্ডিয়ান অন্তত তা–ই মনে করে। সম্প্রতি গার্ডিয়ানের একটি লেখায় সাকিবকে অভিহিত করা হয়েছে ‘আনসাং হিরো’ নামে।খেলার মাঠ থেকে রাস্তার পাশের দৈত্যাকার বিলবোর্ড, কিংবা টেলিভিশনের পর্দা—সব জায়গাতেই সাকিব আল হাসানের উপস্থিতি। কিন্তু বাংলাদেশের পোস্টারবয়ের ক্রিকেটবিশ্বে ততটা আলোচিত না হওয়ায় রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছে, ‘সম্প্রতি বিগব্যাশে খেলে যাওয়া সাকিবকে দেখে স্থানীয় কিছু ধারাভাষ্যকারের চোখে-মুখে বিস্ময়, কে এই ছেলে? একজন বাংলাদেশি! সত্যিই! সম্ভবত প্রতিপক্ষ দলগুলোর মধ্যে সাকিব সম্পর্কে জানাশোনা কিংবা মূল্যায়নের অভাব আছে। না হলে পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওয়ানডে ইতিহাসেরই তৃতীয় সেরা অলরাউন্ডারকে তো আর না চেনার কারণ নেই! প্রায় চার হাজার রান (৬ সেঞ্চুরি, ২৬ ফিফটি) এবং ১৪১ ওয়ানডেতে ১৮২ উইকেট নেওয়া একজন খেলোয়াড়কে উন্নত ক্রিকেট দেশের মানুষজন চেনে না, এটা বিস্ময়ের বৈকি!’ সাকিব এমনিতেই হিরো, তবে সাকিবের মধ্যে বিশ্বকাপের হিরো হয়ে ওঠার সমূহ সম্ভাবনা দেখছে গার্ডিয়ান, ‘যেকোনো ম্যাচে বাংলাদেশের যদি কোনো সম্ভাবনা থেকে থাকে, তবে তা নির্ভর করছে সাকিবের ওপরই। সব সময় তাঁকে কেন্দ্র করেই সবকিছু হয় এবং সে সব সময়ই নিজের শতভাগেরও বেশি নিংড়ে দেয়। বিগ ব্যাশে খেলতে পারাটাও তাকে কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে।এএইচ/পিআর
Advertisement