যে কোনো দেশের বিমানবন্দর একটি স্পর্শকাতর এলাকা। কাজেই বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে এর আগেও নানা প্রশ্ন উঠেছিল। সেই প্রশ্ন যে অমূলক ছিল না, তার প্রমাণ পাওয়া গেল আবারো। গতকাল রোববার বিমানবন্দরের বহির্গমন টার্মিনালের সামনে এক যুবকের হামলায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক আনসার সদস্য নিহত হয়েছেন। আনসার ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) আরো তিন সদস্য আহত হয়েছেন। পরে নিরাপত্তাকর্মীরা হামলাকারী ওই যুবককে আহতাবস্থায় আটক করেন। গত রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিমানবন্দরের বহির্গমন টার্মিনালে এ ঘটনা ঘটে। ছুরি নিয়ে ওই যুবক এলোপাতাড়ি হামলা চালায়। নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে কী করে এ ধরনের হামলা হতে পারে -তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এর আগেও বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে নানা প্রশ্ন ছিল। এমনকি বিদেশিরাও প্রশ্ন তুলেছিলেন নিরাপত্তার ঘাটতি নিয়ে।বিমানবন্দরে নিরাপত্তার ঘাটতির প্রশ্ন তুলে চলতি বছর অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ থেকে বিমানে সরাসরি পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর বিমানবন্দরের পণ্য ও যাত্রীদের নিরাপত্তা তল্লাশির কাজে ব্রিটিশ একটি নিরাপত্তা কোম্পানিকে নিযুক্ত করা হয়। অন্যদিকে বিশ্বব্যাপীই এখন জঙ্গি হামলা হচ্ছে নানা স্থানে। বিমানবন্দরও তাদের টার্গেটের বাইরে নয়। বাংলাদেশেও ঘটে গেছে গুলশান ট্র্যাজেডির মতো ঘটনা। এ অবস্থায় বিমানবন্দরে হামলার ঘটনায় নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। হামলাকারী যুবককে আটক করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এখনো নিশ্চিত করা হয়নি এটি জঙ্গি হামলা নাকি অন্য কোনো ধরনের নাশকতা। ঘটনা যাই হোক না কেন, নিরাপত্তার ব্যাপারে যে শৈথিল্য আছে -সেটি স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছে। নইলে ছুরি হাতে হামলাকারী কীভাবে নিরাপত্তা ব্যূহ ভেদ করে ভেতরে প্রবেশ করে এত বড় অঘটন ঘটাতে পারলো। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিতরাই যদি নিরাপদ না থাকে, তাহলে তারা অন্যের নিরাপত্তা বিধান করবে কী করে? এ ঘটনাকে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই। হামলাকারীকে আটক করা হয়েছে। এখন এর যোগসূত্র বের করতে হবে। এ ধরনের হামলার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে নিতে হবে নানামুখী পদক্ষেপ। মনে রাখা প্রয়োজন, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তার সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তিও কিন্তু জড়িত। এইচআর/আরআইপি
Advertisement