আগামী নির্বাচনকে প্রধান লক্ষ্য ধরে দলকে শক্তিশালী ও জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে তিন ইস্যু নিয়ে মাঠে নামছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নবগঠিত কমিটি। দলকে শক্তিশালী, জনসম্পৃক্ততা ও আগামী নির্বাচনকে লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। আর ইস্যু হিসেবে কাজ করবে গৃহহীনদের তালিকা প্রণয়ন, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচার ও জঙ্গি-সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্য দৃঢ় করা। এর মাধ্যমেই সরকার থেকে দলের পৃথক সত্ত্বা নিশ্চিত হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগ এখন থেকেই নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে। আর নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠনকে শক্তিশালী করে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। জনসম্পৃক্ততা বাড়ানোর জন্য গৃহহীনদের তালিকা প্রণয়ন ও সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচারের মাধ্যমে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন হবে। জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে শিগগিরই জেলা সফর শুরু করবেন কেন্দ্রীয় নেতারা।আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করতে এখন থেকেই মাঠে নামতে চায় দলটি। আর মাঠের কাজ বাড়াতেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। দলের অপেক্ষাকৃত তরুণ নেতৃত্বকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে, যাতে তারা দলীয় কাজে প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারে।নেতারা বলছেন, মূলত আগামী নির্বাচনকে মাথায় রেখেই দলকে আরো শক্তিশালী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করতে হবে নবগঠিত কমিটিকে। কমিটির একাধিক নেতার মতে, জাতীয় সম্মেলনে যেমন নেতৃত্বের বিকাশ ঘটে, তেমনি নেতৃত্বের প্রতিযোগিতায় দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে মনোমালিন্য দেখা দেয়। তাই নবগঠিত কমিটির নেতাদের তৃণমূল কর্মীদের মনোমালিন্য ভাঙানোর কাজটা করতে হবে। পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণের মাধ্যমে দলের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করতে হবে। সেই জনপ্রিয়তাই আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের পথ সুগম করবে।আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, আগামী মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের নবগঠিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের প্রথম সভায় জেলায় জেলায় সফরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সংগঠনকে কীভাবে আরো বেশি শক্তিশালী ও গতিশীল করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হবে।এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, ‘নির্বাচিত নতুন কমিটি সারাদেশ সফরে নামবে। আগামী মঙ্গলবার দলের কার্যনির্বাহী সংসদের প্রথম সভায় আমরা কিছু কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করবো। এই কমিটির লক্ষ্যই হবে আগামী নির্বাচনে দলকে জয়ী করা।’এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ শিগগিরই জেলা সফর শুরু করবে। আগামী নির্বাচনে জিততে হলে জনগণের কাছেই বেশি করে যেতে হবে। আওয়ামী লীগ জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে যা করা প্রয়োজন তাই করবে।’দলটির নেতারা মনে করেন, ‘আওয়ামী লীগের পরবর্তী এজেন্ডা জাতীয় নির্বাচন। নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের ভালোবাসা অর্জন ও মন জয় করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা দলের চেয়ে অনেক বেশি। আওয়ামী লীগকেও জনপ্রিয়, শক্তিশালী, আধুনিক এবং গতিশীল করতে হবে। তবেই সরকার যেমন শক্তিশালী হবে তেমনি আওয়ামী লীগও শক্তিশালী হবে।’এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘সরকার শক্তিশালী, আওয়ামী লীগ দুর্বল হলে সরকারের মধ্যে হারিয়ে যাবে। সেটা আওয়ামী লীগের জন্য শুভলক্ষণ নয়। দলের মধ্যে সরকার হারিয়ে যাবে, সরকারের মধ্যে দল হারাবে না।’এইউএ/বিএ/এমএফ/পিআর
Advertisement