বিশেষ প্রতিবেদন

পরিবেশ ও জলবায়ুর প্রথম আন্তর্জাতিক জুডিশিয়াল সম্মেলন ঢাকায়

বিচারপতিদের নিয়ে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক দক্ষিণ এশিয়া জুডিশিয়াল আন্তর্জাতিক প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশে। এডিবির সহায়তায় আগামী ২৫ নভেম্বর ‘সাউথ এশিয়া জুডিশিয়াল কনফারেন্স অন এনভায়র্নমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক কনফারেন্স রেডিসন ব্লু ঢাকা ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ।পরিবেশসংক্রান্ত আইন কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়, সে সম্পর্কে সম্মেলনে আলোচনা হবে। সম্মেলনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব প্রস্তুতি নিয়েছে। এরই মধ্যে বিদেশি বিচারপতিদের দাওয়াতপত্র পাঠানো হয়েছে।সম্মেলনে সার্কভুক্ত আট দেশের প্রধান বিচারপতি ছাড়াও ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশের প্রধান বিচারপতিদের অংশগ্রহণের কথা রয়েছে। হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার আবু সৈয়দ মো. দিলজার হোসেন জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, কনফারেন্সে সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তি, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, সার্কভুক্ত দেশের প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রদূতসহ যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন ও মালয়েশিয়ার প্রধান বিচারপতি উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও পাকিস্তানের পরিবেশবিদদের অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশের সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের সব বিচারপতি, পরিবেশবিদ এবং পরিবেশ আদালতের বিচারকরাও থাকবেন সম্মেলনে।সুপ্রিমকোর্ট সূত্রে জানা গেছে, এর আগে পৃথিবীর কয়েকটি রাষ্ট্রে ‘জুডিশিয়াল অন এনভায়র্নমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ গোলটেবিল বৈঠক এবং সেমিনার হলেও কোনো সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি এখন পর্যন্ত।হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার মো. সাব্বির ফয়েজ জাগো নিউজকে জানান, দেশের বিচারপতি ও পরিবেশসংশ্লিষ্টদের দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ হিসেবে আন্তর্জাতিক জলবায়ু ও পরিবেশবিষয়ক সম্মেলন করা হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহা দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই তিনি এমন সুযোগ খুঁজছিলেন, যাতে বিচারপতিরা পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিচার কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন। এর আগে ২০১৫ সালে নেপালে অনুষ্ঠিত ‘সাউথ এশিয়া জুডিশিয়াল এনভায়র্নমেন্ট অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ’ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই বৈঠকের পর এ সংক্রান্ত একটি সম্মেলন বাংলাদেশে করার প্রস্তাব দেয়া হয় সংশ্লিষ্টদের কাছে। তখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয় সম্মেলনের। পরিবেশ-সম্পর্কিত আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়নের জন্য দক্ষিণ এশিয়ার উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের নিয়ে ২০১১ সাল থেকে গোলটেবিল বৈঠক এবং সেমিনারের আয়োজন করে আসছে এডিবি। এ পর্যন্ত পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভুটান এবং নেপালে এডিবির সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এসব সেমিনার এবং গোলটেবিল বৈঠক। এবার বাংলাদেশ আয়োজক হিসেবে পঞ্চম।পরিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে কাজ করছে বিভিন্ন সংস্থা। গবেষণারও কমতি নেই। তবে এজন্য সংশ্লিষ্ট আইনের যথাযথ প্রয়োগ জরুরি। এক্ষেত্রে বিচারকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। পরিবেশগত উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক সক্ষমতা বাড়াতে ২৭ লাখ ২৫ হাজার মার্কিন ডলার ব্যয়ে কারিগরি সহায়তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, ‘বাছাইকৃত উন্নয়নশীল সদস্য দেশে (ডিএমসি) উন্নতমানের পরিবেশ আইন বাস্তবায়ন এবং পরিবেশ আইন ও নিয়ম প্রয়োগে বিচারকদের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপদানের পদ্ধতিগত উন্নয়ন, যাতে পরিবেশগত মামলাগুলোতে সুবিবেচনা করতে পারা যায়’।ঢাকায় আন্তর্জাতিক এই সম্মেলন বাস্তবায়নে প্রিপারেটরি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রধান বিচারপতির নির্দেশে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞাকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের প্রিপারেটরি কমিটি রয়েছে। সম্মেলন প্রিপারেটরি কমিটির সদস্যসচিব হলেন সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন- হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন, বিচারপতি এএফএম আব্দুর রহমান, বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ। কমিটিকে সার্বিক সহযোগিতা করছেন হাইকোর্ট বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার শরীফুল আলম ভূঞা এবং সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মঈন উদ্দিন চৌধুরী।এফএইচ/ওআর/এমএফ/আরআইপি

Advertisement