মার্কিন নির্বাচনে এই প্রথমবারের মতো দেশটির দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থী রাশিয়ার সম্পর্কে কথা বলছেন, যুক্তি-পাল্টা যুক্তি দিচ্ছেন। নির্বাচনী হাওয়ায় ডেমোক্রেট দলীয় প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের কম্পিউটার হ্যাকিং, মেইল ফাঁস ও অন্যান্য বিভিন্ন বিষয়ের মূল হোতারা মস্কোতে রয়েছে বলেও সমালোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। কিন্তু রাশিয়ার জনগণ জানেন যে, তারা একটি ব্যাপক শক্তিশালী রাজনৈতিক বেড়াজালে রয়েছেন। তারা এই রাজনীতি নিয়ে তেমন সচেতন নন। রাশিয়ার উদ্যোক্তা ইয়েতকাটেরিনা রোমানোভস্কায়া বলেন, মস্কোর টেলিভিশনগুলো তাদের সংবাদের অর্ধেক সময় ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্র কতটা খারাপ; রাশিয়াকে ধ্বংস করার জন্য ওবামা কীভাবে আমাদের জগতে এসেছেন, সেই সব বিষয় নিয়ে। আমরা মনে করি; সবকিছু আমাদের বিপক্ষে, তাই নির্বাচনের ফলে এখানে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যাবে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে রাশিয়ার সাধারণ জনগণের তেমন কোনো আগ্রহ নেই বলে মন্তব্য করছেন দেশটির বিশ্লেষকরা। সাধারণ জনগণ তাদের নিজস্ব বিষয় নিয়ে চিন্তিত; যেমন অর্থনৈতিক মন্দা, জাতীয় বাজেট ও প্রকৃত পারিশ্রমিকের ওঠানামার কারণে সবসময়ই তাদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। মস্কোর কার্নেজাই ইনস্টিটিউটের জ্যেষ্ঠ গবেষক আন্দ্রে কোলেসনিকভের মতে, তারপরও মার্কিন নির্বাচন পরিতৃপ্তির বিষয় ছাড়া কিছুই নয়।তিনি বলেন, রাশিয়ানরা মার্কিন নির্বাচন নিয়ে তেমন আগ্রহী নন। এটা দূরবর্তী একটি ক্রীড়া ইভেন্ট পর্যবেক্ষণের মতো। দৃষ্টিভঙ্গি খুব বেশি অথবা কম নিরপেক্ষ, কিন্তু আপনি যদি জানতে চান তাহলে সম্ভবত তারা ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন; কারণ তিনি রাশিয়ার ঝিরিনোভস্কির মতো বিখ্যাত নেতার প্রতিনিধিত্ব করেন। ভ্লাদিমির ঝিরিনোভস্কি উদার গণতান্ত্রিক পার্টির অতি-জাতীয়তাবাদী নেতা। মার্কিন নির্বাচন নিয়ে ৭০ বছর বয়সী এই নেতা বলেছেন, মার্কিনিদেরকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে, যদি তারা ট্রাম্পকে ভোট দেন; তাহলে পৃথিবীর শান্তির জন্য ভোট দেবেন। কিন্তু তারা যদি হিলারি ক্লিনটনকে ভোট দেন, তাহলে তা হবে যুদ্ধের শামিল। তবে মার্কিন নির্বাচন নিয়ে রাশিয়ার এলিট শ্রেণির মতাদর্শ বোঝা যাচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট পুতিন, হিলারির সঙ্গে তার শত্রুতা গোপন রাখতে পারেননি। এটা স্পষ্টভাবে বলা যায়, হিলারি ক্লিনটন ও তা দল একইভাবে এটি বুঝে ফেলেছে যে, রাশিয়ার পরিকল্পনায় হিলারির মেইল সার্ভারে সাইবার হামলা ট্রাম্পকে জয়ী করার জন্যই করেছে মস্কো। কিন্তু পুতিনের ম্যাজিক সার্কেল আসলেই কী চায় ট্রাম্প জয়ী হোক? যত সহজে এ বিষয়টি কল্পনা করা হোক এর জবাব তেমন সহজবোধ্য হবে না। উদ্যোক্তা ইয়েতকাটেরিনা রোমানোভস্কায়া বলেন, পুতিনের এলিট শ্রেণির লোকজন মেঘাচ্ছন্ন, আপনি কখনোই বুঝতে পারবেন না তারা কী চিন্তা করছেন? তাদের নিজস্ব স্বার্থ রয়েছে এবং তারা ব্যক্তিগত অবস্থার উন্নতি ঘটানোর চেষ্টা করবে; তবে এখানেও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হচ্ছে, তারা এখানে যতটা ঘনিষ্ঠ, ট্রাম্পের ক্ষেত্রে তা কেমন হবে? তবে দুই দেশে বসবাসকারীদের নারী ব্যবসায়ীরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রে যিনিই ক্ষমতায় আসুন না কেন কংগ্রেস তাদের জন্য কঠিন হবে। আর মার্কিন নির্বাচনে কে জিতলো তাতে এ অবস্থার কোনো পরিবর্তন হবে না।একটা বিষয় পরিষ্কার; আমেরিকার প্রতি যে আকর্ষণ এবং আতঙ্ক রয়েছে রুশদের তা অব্যাহত থাকবে। সূত্র : স্কাই নিউজ, আরটি।এসআইএস/এবিএস
Advertisement