রাজধানীর পল্টনের ৬১ কেজি স্বর্ণ উদ্ধারের চাঞ্চল্যকর মামলায় বিমান, সিভিল অ্যাভিয়েশন ও এক আওয়ামী লীগ নেতার জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এদের জড়িত থাকার প্রমাণ পায় মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত ১২ জনের বিরুদ্ধে বুধবার সন্ধ্যায় আদালতে চার্জশিট দিয়েছে ডিবি।তদন্তে বলা হয়, দেশি-বিদেশি একটি সমন্বিত সিন্ডিকেট চোরাচালানের উদ্দেশে স্বর্ণ আমদানি করে বিমানবন্দর পর্যন্ত নিয়ে আসতো। এরপর বাংলাদেশ বিমান ও সিভিল অ্যাভিয়েশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কৌশলে সেই স্বর্ণ বিমানবন্দর থেকে বের করে নিয়ে আসতেন। এদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতার জড়িত থাকার প্রমাণও মিলেছে।চার্জশিটভুক্ত ১২ জনের মধ্যে ১১ জনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- মো. আলী হোসেন, রিয়াজ উদ্দিন, হাজী মুজিবর রহমান, সালেহ আহমেদ, আবু আহমেদ, নবী নেওয়াজ খান, ওমর ফারুক, আলী হোসেন, উজ্জ্বল ঘোষ, পঙ্কজ সাহা ও নুরুল ইসলাম। এদের মধ্যে রিয়াজ উদ্দিন সিরাজগঞ্জ সদরের উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং নুরুল ইসলাম সিভিল অ্যাভিয়েশনের চাকরিচ্যুত এক কর্মকর্তা।এদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী, রিয়াজ উদ্দিন ও হাজী মুজিবর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। তবে রিয়াজ বর্তমানে জামিনে রয়েছেন। আলী হোসেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তার জবানবন্দির মধ্যে বাকিদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় ডিবি।ডিবির তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, বিদেশ থেকে স্বর্ণ নিয়ে আসতেন পাঁচ ব্যক্তি। জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা পাঁচজনের নাম বললেও বিস্তারিত পরিচয় বলতে পারেননি। ফলে তাদের আইনের আওতায় আনতে পারেননি তদন্তকারী কর্মকর্তারা।এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিসি উত্তর) শেখ নাজমুল আলম জাগো নিউজকে বলেন, তদন্তে স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে ১২ জনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। তাদের অভিযুক্ত করে আজ চার্জশিট জমা দেয়া হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পুরানা পল্টনের ২৯/১ নম্বর বাসার ছয়তলার ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এ সময় ৬১ কেজি ৫৩৮ গ্রাম ওজনের ৫২৮টি স্বর্ণের বার ও বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া স্বর্ণ চোরাচালান ও হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মোহাম্মদ আলীকে আটক করা হয়।এআর/বিএ
Advertisement