খেলাধুলা

ক্যারিয়ার গড়ার দায়িত্ব মিরাজকেই নিতে হবে : মাশরাফি

কথায় বলে ‘ঘরপোড়া গরু নাকি সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়।’ বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের একাংশ তেমন নতুন কাউকে খুব বেশি ভাল খেলতে দেখলেই ভয় পান। আঁৎকে না উঠলেও চিন্তিত হয়ে পড়েন- এ প্রতিভা টিকবে তো? নাকি অকালে ঝরে পড়বে? কোনরকম নেতিবাচক মানসিকতা থেকে এমন বিষয়ের উদ্রেক ঘটানো হয়নি। ইতিহাস বলছে, গত দুই তিন বছরে বাংলাদেশে অন্তত চার-পাঁচ জন মেধাবী ক্রিকেটারের অভিষেক ঘটেছে। তাদের কারো কারো অভিষেক ছিল দুর্দান্ত। সেই তালিকায় সবার আগে চলে আসবে তিন বোলার ইলিয়াস সানি, সোহাগ গাজী এবং আবুল হাসান রাজুর নাম। স্বপ্নিল সূচনা হয়েছিল তিনজনেরই। শুরুর দিকে কী রকম ভাল পারফরম করা যায় আবুল হাসান রাজু, সোহাগ গাজী ও ইলিয়সা সানি তাই করে দেখিয়েছিলেন। একই টেস্টে সেঞ্চুরি আর হ্যাটট্টিকের দূর্লভ কৃতিত্বের অধিকারি হয়ে বিশ্ব রেকর্ডের স্রষ্টা সোহাগ গাজী। আর টেস্টে ১০ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে শতরানের দূর্লভ কৃতিত্বের অধিকারী আবুল হাসান রাজু। বাঁ-হাতি স্পিনার ইলিয়াস সানিও কম যাননি। তিনিও টেস্ট অভিষেকে ৫ উইকেট শিকারী। এমন নজর কাড়া পারফরমেন্স যাদের, তাদের তিনজনকে সম্ভাবনার প্রতিমূর্তি ভাবাই তো স্বাভাবিক। মনে হচ্ছিল সোহাগ গাজী, ইলিয়াস সানি ও আবুল হাসান রাজু তিনজনই অনেকদুর যাবেন।দলকে দারুন সার্ভিস দেবেন; কিন্তু কঠিন সত্য হলো, তিনজনার কেউ দলে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিতে পারেননি। বরং সময়ের সাথে সাথে তিনজনই বাজে পারফরমেন্সের কারণে দল থেকে ছিটকে পড়েছেন। আজ তিনজনই দলের বাইরে। তাই মেহেদী হাসান মিরাজ প্রথম দুই টেস্টে তিনবার পাঁচ বা ততোধিক উইকেট শিকারসহ ১৯ উইকেট দখল করে বিশ্ব রেকর্ডের স্রষ্টা হবার পর সে সন্দেহ নতুন করে দানা বেঁধে উঠেছে। অনেকের মনেই প্রশ্ন, আচ্ছা মেহেদী হাসান মিরাজের এই যে উল্কার মত আবির্ভাব, অভিষেকে হৈ চৈ ফেলে দিলেন- তা কি বজায় থাকবে? এ অফস্পিনার কি নিজেকে ধরে রাখতে পারবেন? তার পারফরমেন্সের এই ধারাবাহিকতা কী বজায় থাকবে?  নাকি সম্ভাবনার প্রদীপ জ্বেলে আবার কিছু দিন পর নিভে যাবেন অমিত সম্ভাবনার আভাষ দেয়া এ অফস্পিনার? এই প্রশ্ন রাখা হয়েছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার কাছেও। জাগো নিউজের সাথে আলাপে জাতীয় দলের ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের ব্যাখ্যা, ‘আগের যে কোন সময়ের চেয়ে এখন নতুন ও প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের পরিচর্যা অনেক বেশি হয়। দেখা-শোনাও আগের চেয়ে ভাল মত হয়। তারপরও এগুলো আসলে শেষ পর্যন্ত নিজের ওপর নির্ভর করে। আমার মত হলো, এটা মিরাজের ওপরই নির্ভর করবে। তাকেই ভাবতে হবে নিজেকে গড়ে নেয়ার ব্যাপারে। আমি কি করবো, কি করবো না- এসব ঠিক করতে হবে। তা তাকেই ঠিক করতে হবে। নিজেকে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বটাও তার নিজের।`কিছু বিষয় সম্পর্কে মিরাজকে পরামর্শ এবং সতর্ক করে দেন মাশরাফি। তিনি বলেন, ক্যারিয়ার সামনে এগিয়ে নিতে হলে মাঠ ও মাঠের বাইরেও বেশ কিছু বিষয় থাকে। এখন মিরাজকেই বেছে নিতে হবে, আমি কোনটা মন দিয়ে করবো। বেশি বেশি কোনটা করবো। আর কোন কাজ থেকে বিরত থাকবো।`এআরবি/আইএইচএস/বিএ

Advertisement