আল্লাহ তাআলা কুরআনে কিসাসের বিধান সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। পূর্ববর্তী আয়াতে তিনি বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। হত্যার ধরন অনুযায়ী কিসাসের বিধান প্রণয়ন করে জাহেলিয়াতের ভ্রান্ত চিন্তার মূলে কুঠারাঘাত করে সঠিক ফয়সালা দিয়েছেন। কারণ যখন এ বিধান নাজিল হয় তখন ইসলামবিদ্বেষীরা এ বিষয়টি নিয়ে নানারকম অপপ্রচার চালায়।এ বিধান নাজিলের পর থেকে একজন হত্যাকারীর মধ্যে এ ভয় আসবে যে, তাকেও কিসাসের বিধানে হত্যা করা হবে। তখন কেউ এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করতে সাহস পাবে না। সমাজ হত্যাকাণ্ডের মতো নিকৃষ্ট ও জঘন্যতম অপরাধ থেকে মুক্ত থাকবে। ফলে সমাজে নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। আল্লাহ তাআলা একটি জীবন হত্যার পরিবর্তে আরেকটি জীবন হত্যার বিধান প্রণয়নে বিবেকবানদের চিন্তার জগতকে নাড়া দিতে দ্বিতীয়বার জোর তাগিদ দিয়ে বলেন-আয়াতের অনুবাদআয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণসুরা বাকারার ১৭৯ আয়াতটি হত্যাকাণ্ডের বিনিময়ে বাস্তবায়নের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। এ আয়াতের তাৎপর্য হলো- হত্যাকারী যখন জানবে, তার হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য তাকেও জীবন দিতে হবে। তখন প্রত্যেক ব্যক্তিই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর চিন্তা থেকে বিরত থাকবে। আর এটা চিন্তাশীলদের জন্য অনেক বড় উপদেশ।মূলত কিসাসের মাধ্যমেই সমাজে ইনসাফ ও সাম্য বিধি সুপ্রতিষ্ঠিত। এ বিধান সামাজিক ও সংঘবদ্ধ জীবনের সংহতি ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার চাবিকাঠি এবং নিরাপত্তা বিধানের সর্বোত্তম নিশ্চয়তা বিধায়ক। এ বিধানের ফলে কেউ কাউকে জুলুম-নিপীড়ন করবে না; সবল-দুর্বল সবার অধিকারই সংরক্ষিত হবে।পড়ুন- সুরা বাকারা : আয়াত ১৭৮পরিশেষে...এ কথা সুস্পষ্ট, এ বিধান সমাজের সবল ও দুর্বলের সমতায় অত্যন্ত কার্যকর। একটি নির্দিষ্ট সময় ধরে এ আইনের বাস্তবায়ন চলতে থাকলে সমগ্র জাতির স্বভাব ও রুচিবোধ সুষ্ঠু ও সুন্দর রূপ লাভ করবে। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পাবে।সমাজে পরস্পরে আপস-সমঝোতা, সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি ও সেবা-সহায়তা জীবনের প্রতিটি কাজে বাস্তবায়িত হবে। দেশের প্রতিটি মানুষ সুনাগরিক, পুণ্যবান ও ন্যায়পরায়ণ জাতিতে পরিণত হবে। আল্লাহ তাআলার দরবারে উত্তম বান্দা হিসেবে পরিগণিত হবে।মহান দয়ালু আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ বিধানগুলো অন্তর দিয়ে উপলব্ধি করার তাওফিক দান করুন। রাষ্ট্রের দায়িত্বশীলদের এ বিধান বাস্তবায়ন করে সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুশৃঙ্খল সমাজ উপহার দেয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এমএস
Advertisement