চট্টগ্রাম টেস্ট ঢাকা টেস্টের ওপর একটা দারুণ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। চট্টগ্রামে ফল পক্ষে না এলেও বাংলাদেশ দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছে। টেস্টের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করতে পেরেছে। ইংল্যান্ডের মতো দলের ২০ উইকেট নিয়েছে। জয়ের সম্ভাবনা ধরে রাখতে পেরেছিল একবারে খেলার শেষ বল পর্যন্ত।ঢাকা টেস্টে কী হবে- এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে। সবাই বলাবলি করছে, ঢাকায় কেমন খেলবে বাংলাদেশ? তবে আমার মনে হচ্ছে, চট্টগ্রামের মতো ঢাকাতে এমন খেলা খুব একটা সম্ভব নয়। কারণ, উইকেট।চট্টগ্রামে দেখা গেছে বাদামি রঙের মাটি দিয়ে উইকেট বানানো হয়েছে। ঢাকায় কালো রঙের। মাটির রঙই অনেক বড় ব্যবধান গড়ে দেবে। চট্টগ্রামে যে উইকেট বানানো হয়েছিল, আমার ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে এমন উইকেট কখনো দেখিনি। অসাধারণ উইকেট ছিল চট্টগ্রামে। প্রথম থেকেই দেখা গিয়েছিল স্পিননির্ভর। শুরু থেকেই দুর্দান্ত টার্ন। খেলার পঞ্চম দিন পর্যন্ত একই রকম।ঢাকায় এমন উইকেট বানানো অনেকটা অসম্ভব। কারণ এখানকার মাটি আর চট্টগ্রামের মাটি এক নয়। সুতরাং, চট্টগ্রামের মতো ঢাকায়ও বাংলাদেশ দলের ভালো খেলাটা তাই বড় একটি চ্যালেঞ্জ।ইতিহাস কিন্তু ভিন্ন কথা বলছে। গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনায় দুর্দান্ত টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ। ওই টেস্ট খেলে আসার পর সবারই প্রত্যাশা ছিল, ঢাকায় আরও অনেক ভালো খেলবে বাংলাদেশ; কিন্তু, দেখা গেলো ঢাকায় ভিন্ন চিত্র। এ বিষয়টাই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ, যে বাইরে ভালো খেলে এসে ঢাকায় তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। আমার বিশ্বাস, এবার বাংলাদেশ পারবে। কারণ, দলটির গভীরতা অনেক বেশি।ক্রিকেটাররা দারুণ পারফরম্যান্স করে আসছে অনেকদিন থেকে। সাত-আট নম্বর পর্যন্ত জেনুইন ব্যাটসম্যান। বোলাররাও ভালো খেলছে। প্রতিপক্ষের উইকেট তুলে নেয়ার সামর্থ্য আছে। তার ওপর মিরপুরের এই উইকেটে আমাদের ক্রিকেটাররা অনকে বেশি খেলার সুযোগ পেয়ে থাকে। এখানকার উইকেট তাদের অনেক বেশি চেনা।দলে দুটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। যে কারণে শফিউল নেই। শুভাশীষ রায়কে খেলানো হবে কি-না ঘোর সংশয় রয়েছে। কারণ, উইকেটের ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। দেখা গেলো, একজনমাত্র পেসার দিয়েই একাদশ সাজানো হয়েছে। সে ক্ষেত্রে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের অভিষেক হয়ে যেতে পারে। তাহলে সাব্বির রহমানের পর আট নম্বরে ব্যাট করলো মোসাদ্দেক।তবে আমার ব্যক্তিগত মত হলো, শুভাগত হোমকে খেলানো হলে ভালো হবে। কিছুটা অভিজ্ঞ। জেনুইন অফ স্পিনার। ইংল্যান্ডের দুই বাম হাতি ওপেনারের বিপক্ষে ডান হাতি অফস্পিন বেশ কার্যকর হয়ে উঠতে পারে।সব মিলিয়ে আমার মনে হচ্ছে, ঢাকা টেস্ট দারুণ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। এই চ্যালেঞ্জ জয় করতে হলে ব্যাটসম্যানদের ইনিংসগুলো আরও লম্বা করতে হবে। চট্টগ্রাম টেস্টের ভুলগুলো ঢাকা টেস্টে টেনে আনা যাবে না। যেমন, চট্টগ্রাম টেস্টে দেখা গেলো বেশ কয়েকবার বিরতির আগে কিংবা পরে উইটের পতন ঘটেছে। এটা দলের জন্য অনেক ক্ষতিকর একটা দিক। ওই উইকেটগুলো না পড়লে চট্টগ্রাম টেস্টে হয়তো আমরাই জিততে পারতাম।তবে, ইংল্যান্ডকে কোনোভাবেই হেলা করা যাবে না। কারণ, তাদের হাতে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি অপশন রয়েছে। পেসার, স্পিনার মিলিয়ে তাদের বোলিং শক্তি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। সুতরাং, ব্যাটসম্যানদের এ বিষয়টা মাথায় রেখে মাঠে নামতে হবে যাতে কাঙ্ক্ষিত ফল আসে।আইএইচএস/বিএ
Advertisement