ফল যাই হোক। চট্টগ্রামেই প্রমাণ হয়েছে সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম আর মেহেদী হাসান মিরাজ- এই তিন স্পিনারই ইংল্যান্ডকে দুইবার অলআউট করার জন্য যথেষ্ট.। তাদের স্পিন ঘূর্ণি সামাল দিতে পারেননি ইংলিশরা। সে কারণেই প্রথম টেস্ট শেষ হওয়ার রাতেই ব্যাটসম্যান কাম অফস্পিনার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে দলে নেয়া। ময়মনসিংহের এ ২১ বছরের (২০ বছর ৩২২ দিন) যুবা দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটে গত দুই বছর দারুণ পারফর্ম করেছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বাধিক ডাবল সেঞ্চুরিও তার। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রথম টেস্টের দলে তার জায়গা হয়নি। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে ঠিক তাকে ডেকে বসা। মানা যেত যদি সাব্বির রহমান রুম্মন ব্যর্থ হতেন। তার রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে মোসাদ্দেক সৈকতই ফার্স্ট চয়েজ হতেন। কিন্তু তা তো হয়নি। অভিষেকে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন সাব্বির। তার হাত ধরে দল প্রায় জিততে বসেছিল। শেষ পর্যন্ত দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে না পারলেও আত্ববিশ্বাস, আস্থা আর বুক ভরা সাহসের মিশেলে গড়া ৬৪ রানের হার না মানা ইনিংসটি রাতারাতি সাাব্বিরকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। তাই তাকে বাদ দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তাহলে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতকে ডাকা কেন? উত্তর খুব সহজ- মোসাদ্দেক মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি অফস্পিনটাও পারেন। তার অফস্পিন বোলিংটাও হতে পারে দলের বাড়তি শক্তি। এ চিন্তায় ঢাকা টেস্টে মোসাদ্দেক আর পেসার শুভাশীষ রায়ের অন্তর্ভুক্তি। সব মিলে মনে হচ্ছিল ঢাকায় শেষ টেস্টে বুঝি চার স্পিনার নিয়ে মাঠে নামবে মুশফিক বাহিনী। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু এবং টিম ম্যানেজমেন্টের কণ্ঠেও ছিল অমন ইঙ্গিত।কিন্তু বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে ভারি বৃষ্টিতে সম্ভাবত বদলে যাচ্ছে রণকৌশল। আজ সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি। দুপুরে ক্ষাণিকটা কম থাকলেও পড়ন্ত বিকেলেও বেশ ভারি বৃষ্টি হয়েছে। উইকেটকে তো বটেই, শেরেবাংলার পুরো আউটফিল্ড সবুজ কভারে ঢাকা। বৃষ্টিভেজা এবং কভারে ঢাকা পিচে চার স্পিনার খেলানোর সম্ভাবনা অনেক কমে গেছে। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম দুপুরে প্রেস মিটে এসেও তেমন ইঙ্গিতই দিয়ে গেলেন। প্রশ্ন উঠলো, বৃষ্টির কারণে কি টিম কম্বিনেশনে কোনো পরিবর্তন আসতে পারে? মুশফিকের জবাব, ‘মনে হয় একটু হলেও হবে।’ এটুকু বলেই থামেননি, আবহাওয়ার পূর্বাভাস নিয়ে দোটানায় বাংলাদেশ অধিনায়ক। তার ধারণা ছিল এ বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। সে কারণেই মুখে এমন সংলাপ, ‘সত্যি বলতে, আমি তো সকালে দেখে ভেবেছি টানা এক-দুই দিন বৃষ্টি হবে। এখন তো মাঠে এসে দেখি ঠাটা পড়া গরম।’ কঠিন সত্য হলো অপরাহ্ণে টিম বাংলাদেশ যখন প্র্যাকটিস করছিল, তখন মিরপুরের আকাশে কড়া রোদ। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা না যেতেই আবার ভারি বৃষ্টি। আর তাতেই ঘন কভারে আচ্ছাদিত শেরেবাংলার উইকেট। বৃষ্টিভেজা ও কভারে ঢাকা পিচে ময়েশ্চার জন্মায়। সেখানে একজন মাত্র পেসার নিয়ে মাঠে নামায় থাকতে পারে বড় বড় ধরনের ঝুঁকি। টিম বাংলাদেশ হয়তো সে পথে হাঁটছে না। রোববার রাতে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কথা শুনেও তা-ই মনে হলো। তিনিও জানালেন, ‘ইংলিশদের আবারো স্পিন জালে বেঁধে ফেলার পরিকল্পনা ছিল। আমরা এক পেসার নিয়ে মাঠে নামানোর কথাই ভাবছিলাম। কিন্তু ভারি বৃষ্টি হয়েছে কয়েক পশলা। আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। পিচও ঘন কভারে ঢাকা। এতে করে ময়েশ্চার জন্মাবে। এরকম কন্ডিশনে এক পেসার নিয়ে মাঠে নামাটা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে?’ তাই ধরেই নেয়া যায়, টিম কম্বিনেশন ঠিক চট্টগ্রামের মতোই থাকবে। সেই দুই পেসার (কামরুল ইসলাম রাব্বি ও শুভাশীষ রায়)। আর স্পেশালিস্ট স্পিনার কোটায় তাইজুল ও মিরাজ। সাকিব তো অটো চয়েজ। তাহলে লাইন আপটা মিলিয়ে নিন, তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, মমিনুল হক, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, কামরুল ইসলাম রাব্বি ও শুভাশীষ রায়। এআরবি/এনইউ/পিআর
Advertisement