ঢাকা শহরের আবাসিক সংযোগে গ্যাসের আরও প্রিপেইড মিটার বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রাথমিকভাবে ২ লাখ বাসাবাড়িতে দেয়া হবে এসব মিটার। এজন্য জাপানভিত্তিক দাতা সংস্থা জাইকা প্রায় সাড় ৪শ কোটি টাকার সহায়তা দেবে। এজন্য নেয়া হচ্ছে নতুন প্রকল্প। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন হতে পারে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, রাজধানীতে সিস্টেমলসের নামে গ্যাসের চুরি, অবৈধ সংযোগ রোধ ও অপচয় কমাতে সরবরাহে আধুনিক প্রিপেইড সিস্টেম চালু করা হচ্ছে। এ জন্য প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকটি এলাকা নির্বাচন করা হয়েছে। এলাকাগুলো হচ্ছে- উত্তরা, বাড্ডা, গুলশান, পূর্বাচল, ঝিলমিল এলকা, তেজগাঁও, কাফরুল, উত্তরখান, দক্ষিণখান, খিলক্ষেত, মিরপুর ও ক্যান্টনমেন্ট।এজন্য ৭১৯ কোটি ১৬ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ ব্যয়ের মধ্যে জাপানভিত্তিক দাতা সংস্থা জাইকা দেবে ৪৫৩ কোটি টাকা, সরকারি তহবিল ২৩৬ কোটি এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থ ২৯ কোটি টাকা।এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য এসএম গোলাম ফারুক প্রস্তাবিত প্রকল্পের মতামতে বলেন, প্রকল্পটি গ্যাসের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করবে। যা টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করবে। এ বিবেচনাতেই একনেকের আগামী সভায় প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।জানা গেছে, ইন্সটলেশেন অব প্রিপেইড গ্যাস মিটার ফর টিজিটিডিসিএল (ন্যাচারাল গ্যাস ইপিসিয়েন্সি প্রজেক্ট) শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন কো. লি. (টিজিটিডিসিএল)। প্রকল্পটি অনুমোদনের পর চলতি বছর থেকে ২০২২ সাল নাগাদ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।সরকারি হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে শুধু আবাসিক খাতে প্রতিদিন প্রায় ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার হচ্ছে। বছরে এ গ্যাসের মূল্য দাঁড়ায় ৫৫০ কোটি টাকা। সে হিসাবে গত ৪ বছরে চুরি হয়েছে ২ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এছাড়া আগের দুই বছর যখন সংযোগ উন্মুক্ত ছিল তখনও বছরে গড়ে ২শ থেকে ৩ কোটি টাকার গ্যাস চুরি হয়েছে। পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে প্রায় আড়াই বছর আগে গ্যাসের নতুন সংযোগ বন্ধ ঘোষণার সময় আবাসিক খাতে মোট গ্যাসের ব্যবহার ছিল প্রতিদিন সাড়ে ২১ কোটি ঘনফুট। আর ২০১৩ সালের এ সময়ে প্রতিদিন গ্যাস ব্যবহার হয়েছে প্রায় সাড়ে ২৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস। আর বর্তমানে ব্যবহার হচ্ছে ৩৮ কোটি ঘনফুট গ্যাস। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, একমাত্র প্রিপেইড মিটারই এ অপচয় ও চুরি রোধ করতে পারবে।এএইচ/এমএস
Advertisement