জাগো জবস

ম্যাক্সিলোফেসিয়াল নিয়ে অনেক দূর যেতে চাই : সৈয়দ আতিকুর রহমান

ডা. সৈয়দ আতিকুর রহমান পেশায় চিকিৎসক। তিনি ‘রাজু’ নামেই বেশি পরিচিত। বাংলাদেশের একজন অন্যতম ম্যাক্সিলোফেসিয়াল বিশেষজ্ঞ। তবে তিনি কেবল বাংলাদেশি ম্যাক্সিলোফেসিয়াল বিশেষজ্ঞ হিসেবেই নয়; তাঁর রয়েছে নানা ধরনের গুণ ও মান। তিনি কোনো বিদেশি ডিগ্রি না নিয়েই বর্তমানে নিজ অঙ্গনসহ দেশ-বিদেশে প্রতিষ্ঠিত ডেন্টিস্ট হিসেবে স্বপ্রতিভ। তিনি দেশে বসেই এমএস করেছেন। শুধু কি তাই! দেশেই বিসিপিএসের অধীনে সম্পন্ন করেছেন এফসিপিএস এবং এমসিপিএস। বর্তমানে ফেসিয়াল এবং ওরাল সার্জারির বিশেষজ্ঞ সার্জন হিসেবে রয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ বা মিডফোর্ড হাসপাতালে। সৈয়দ আতিক ইতোমধ্যেই বেশ পরিচিতি পেয়েছেন ‘লোকাল প্রোডাক্ট বাট আন্তর্জাতিক ব্রান্ড-সেবা’র খেতাব। ডেন্টালে পড়ুয়াদের উৎসাহিত করতে ম্যাক্সিলোফেসিয়াল বিষয় নিয়ে কথা হয় সৈয়দ আতিকুর রহমানের সঙ্গে। জাগো জবসের পক্ষ থেকে ২৫তম বিসিএসে (স্বাস্থ্য) নিয়োগ পাওয়া এ চিকিৎসকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গোলাম রাব্বী।

Advertisement

জাগো জবস : একজন ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জন হিসেবে আত্মবিশ্বাস এবং সুনাম অর্জন কীভাবে?সৈয়দ আতিকুর রহমান : আমি আসলে দেশকে খুব ভালোবাসি। আর দেশের মানুষের মুখের হাসি খুব উপভোগ করি। তাই ডেন্টালে পড়ার সময় থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি এবং কারো কথায় কান না দিয়ে বিশেষজ্ঞ সার্জন হতে যা যা করার করেছি। আর সব সময় মানুষ তথা আক্রান্ত রোগিকে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার কাজটি করে যাচ্ছি। জাগো জবস : দেশ নিয়ে অনেক ভাবেন, তাই নয় কী?সৈয়দ আতিকুর রহমান : শুধু আমি কেন? আমার তো বিশ্বাস সবারই এমন ভাবা উচিত। বিশেষ করে আমরা যারা চিকিৎসক হিসেবে মানুষকে সেবা দেই। যেমন অনেক চিকিৎসকই মনে করেন, বাংলাদেশি ডিগ্রি আর স্বাস্থ্যসেবার মান যথেষ্ট নয়; কিন্তু আমি অমনটা মনে করি না। কেননা আমি বহু বছর ধরে পুরোদস্তুর আন্তর্জাতিক মানের সার্জন হিসেবে দাঁতসহ মুখমণ্ডল সংক্রান্ত যাবতীয় চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি। এমনকি যেখানে বাংলাদেশিরা বিদেশে গিয়ে বড় বড় চিকিৎসক বা হাসপাতালের অধীনে ইন্টার্ন করি। অথচ আপনি অবাক হবেন- আমার এখানে কিন্তু অনেক বিদেশি এসে ইন্টার্ন করছেন।জাগো জবস : অনেকেই ডেন্টালকে ‘সেকেন্ডারি ডাক্তারি’ হিসেবে ভাবেন-সৈয়দ আতিকুর রহমান : আমি বলবো এমনটা ভাবা মোটেও ঠিক না। কেননা আমাদের এখানেই এখন বিশেষজ্ঞ হওয়ার সুযোগ আছে। আমাদের দেশের পড়াশোনার মানও অনেক ভালো। আর মানুষ এখন ফেইস এবং দাঁত সংক্রান্ত বিষয়ে খুবই সচেতন ও বেশ বিনিয়োগ করছে। তাই সেকেন্ডারি না ভেবে বরং ম্যাক্সিলোফেসিয়াল বিশেষজ্ঞ হয়ে একটি স্পেশাল বিষয়ের সার্জন হওয়ার অপার সুযোগ রয়েছে।জাগো জবস : সরকারি-বেসরকারি ডেন্টাল মেডিকেলে (বিডিএস) ভর্তিচ্ছুদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?সৈয়দ আতিকুর রহমান : আমার পরামর্শ হলো ডেন্টাল পড়ে এখন আপনাকে শুধু দাঁতের চিকিৎসকই হতে হবে না। এক একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন দাঁতেরই রয়েছে কয়েক প্রকারের বিশেষজ্ঞ। অর্থোডেন্টিস্ট আর ফেইস সংক্রান্ত ম্যাক্সিলোফেসিয়াল বিশেষজ্ঞ হয়ে বর্তমানে আগুনে মুখ পোড়া বা সড়ক দুর্ঘটনায় মুখমণ্ডলে ক্ষতি হওয়া অংশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হতে পারবেন। যাতে অনেক আক্রান্তের মুখে হাসি ফোটানোর ও অর্থোপার্জনের সুবিধা রয়েছে।জাগো জবস : ম্যাক্সিলোফেসিয়াল বিষয়ে আপনার ভবিষ্যৎ ভাবনা কী?সৈয়দ আতিকুর রহমান : আমি এ বিষয়টি নিয়ে আরও অনেক দূর যেতে চাই। আমি আমাদের দেশের সড়ক দুর্ঘটনার হার দেখে দ্রুতই দেশে একটি ‘হাইওয়ে ট্রমা সেন্টার’স্থাপন করতে চাই। একইসঙ্গে বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবা যে আন্তর্জাতিকমানের, সেটি আমি সারাবিশ্বকে বোঝাতে এবং জানিয়ে দিতে চাই। আমি চাই বিষয়টির বিশেষজ্ঞ সার্জন আরও বাড়ুক; সবাইকে নিয়ে একটি সুন্দর হাসির দেশ গড়তে চাই। তাই আমার স্বপ্ন- দেশের প্রতিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন করে ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জন নিয়োগ দেওয়া হোক।জাগো জবস : এ বিষয়ে কোনো প্রচারণা বা কাজ করছেন কিনা?সৈয়দ আতিকুর রহমান : আসলে যারা ম্যাক্সিলোফেসিয়াল বিশেষজ্ঞ হতে চান; তাঁদের আমি নানা সময়ে নানাভাবে উৎসাহিত করি। এমনকি শিক্ষানবিশ দন্তচিকিৎসকদেরও আমি বিশেষভাবে দক্ষ হতে বলি। সরকারি চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের সময়েও বিষয়টিতে নজর দিতে উৎসাহিত করি এবং প্রশিক্ষণ দেই।জাগো জবস : তরুণ চিকিৎসকদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?সৈয়দ আতিকুর রহমান : এখানে কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। আমি যেমন বাংলাদেশি চিকিৎসা ব্র্যান্ডকে প্রমোট করছি সারাবিশ্বে। সুতরাং আপনিও বিশেষজ্ঞ হয়ে সবার মুখে লাল-সবুজের হাসি ফোটান।জাগো জবস : আপনার কাছে সফলতা মানে কী?সৈয়দ আতিকুর রহমান : আমার কাছে সফলতা মানে অন্যের মুখে সর্বদা হাসি ফোটানো। কেননা আমি মূল্যবান একটা অঙ্গকে সুন্দর রাখতেই সর্বদা নিজেকে ব্যস্ত রাখি।এসইউ/পিআর