উপজলদাসরা, পঙ্কজ জলদাস, স্বজল জলদাস, সজিব জলদাস ও হরিধন জলদাসরা থাকেন জেলে পাড়ায়। শুধু নিজেদের নয়, এদের বাপ দাদাদেরও পেশা ছিল জেলে। মাছ ধরেই ঘর-সংসার চলছে তাদের। তাই বংশ পরস্পরায় তাদের নামের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছে ‘জলদাস’। অথচ মৎস্য অফিস থেকে এই ‘জলদাসদের’ স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না জেলে হিসেবে। মিলছে না তাদের জন্য দেওয়া সরকারের বরাদ্দও। অথচ জেলে পেশার সঙ্গে যারা জড়িত নন, তাদেরকে জেলেদের বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এমন অভিযোগ খোদ জেলেদের। এ চিত্র দেখা গেছে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার জেলেপাড়াগুলোতে। উপজলদাস নামে এক জেলে জাগো নিউজকে অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বাপ-দাদা থেকে শুরু করে সবাই জেলে। তাই আমাদের নামের সঙ্গে জলদাস রাখা হয়। কিন্তু আমরাই জেলেদের কার্ড পাই না। যারা প্রভাবশালী, রাজনীতি করে তাদের নামে কার্ড হচ্ছে। আমরা কোনো নেতার কাছে যেতে পারি না, তাই কার্ডও পাই না।পঙ্কজ মাঝি অভিযোগ করে বলেন, জেলেদের বরাদ্দ পায় নেতা-ভূইয়ারা। অথচ অভিযানের সময় আমরাই কষ্টে থাকি। এ জন্যই জেলেদের সংখ্যা দিনদিন কমে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রকৃত জেলেদের ২০ শতাংশও এ পেশার সঙ্গে নেই। তারা সবাই ঋণগ্রস্থ হয়ে ভারতসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চলে গেছে।তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘জলদাসরা জেলে কার্ড পায় না? যারা ‘জলদাসদের’ কার্ড নেয় তাদের নামের পাশে ‘জলদাস’ লিখে দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো।’হরিধন জলদাস বলেন, ‘নদীর কূলে আঙ্গো (আমাদের) ছোট্ট এক্কান (একটা) ঘর আছে। আঙ্গো (আমরা) এইটারে ঘর কই না। আঙ্গো ঘর আঙ্গো নৌকা। আর বাড়ি নদী। হিয়ার (এর) হরেও (পরেও) আঙ্গো নাকি জাইল্লান (জেলে না)। কারণ আঙ্গো চেয়ারম্যানেগো লগে আডি না (হাটি না)। হেতাগো লগে (তাদের সঙ্গে) আইটলে (হাটলে) আঙ্গো হেট (পেট) চইলবো নি ? মাছ ধরবো কে? জানতে চাইলে হাতিয়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পিযুষ প্রভাহকর বলেন, দ্বীপ হাতিয়ায় বর্তমানে ১৫ হাজার ৯ শত ৪৪ জন জেলের তালিকা রয়েছে। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২ শত ৬৩ জনকে চলতি ভরা প্রজনন মৌসুমে ২০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় বাকিদের এ সুবিধার আওতায় আনা যাচ্ছে না।অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা আমাদের হাতে নেই। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিরা যে তালিকা আমাদের কাছে পাঠান আমরা সেভাবেই বরাদ্দ দিয়ে থাকি। এমএসএস/জেডএ/এমএস
Advertisement