পাকিস্তানে পুলিশ প্রশিক্ষণ কলেজে সন্ত্রাসী হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ জনে। আহত হয়েছে আরো ১১৭ জন। হতাহতদের মধ্যে অধিকাংশই ক্যাডেট পুলিশ। খবর ডন এবং রয়টার্সের।সোমবার রাতে কুয়েটার পুলিশ প্রশিক্ষণ কলেজে তিন সন্ত্রাসী ওই হামলা চালায়। গভীর রাতে হামলাকারীরা কলেজের হোস্টেলে ঢুকে পড়ে এবং সেখানকার বহু বাসিন্দাকে জিম্মি করে।পরে সেনাবাহিনী কলেজটিতে অভিযান চালিয়ে কয়েকজন হামলাকারীকে গুলি করে হত্যা করে। কলেজটিতে সেসময় ৬শ’ ক্যাডেট পুলিশ ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।প্রাদেশিক কর্মকর্তারা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, হামলায় ৫৯ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে অধিকাংই ক্যাডেট। হামলায় আরো ৯৭ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের ফ্রন্টিয়ার কর্পসের মহাপরিদর্শক মেজর জেনারেল শের আফগান এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে হতাহতের সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া না গেলেও হামলায় অন্তত ২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং ৬৫ জন আহত হয়েছেন।তিনি আরো জানিয়েছেন, তিন আত্মঘাতী ওই হামলা চালিয়েছে। তাদের সবার শরীরে বিস্ফোরক বাধা ছিল। দুই আত্মঘাতি নিজেদের সঙ্গে থাকা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটানোর পরেই ওই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে তৃতীয় আত্মঘাতী নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছে। বেলুচিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মির শরফরাজ আহমেদ বাগতি হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেছেন।সোমবার মধ্যরাতে হামলাকারীদের সঙ্গে বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলি বিনিময় হয়। কমপক্ষে তিন সন্ত্রাসী নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়। নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান শেষ হয়েছে। সন্ত্রাসী হামলার পরপরই সেখানে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনীর স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপ (এসএসজি) কমান্ড। এসএসজির সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে ক্যাডেটদের উদ্ধার করেন। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, কমপক্ষে তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, বিস্ফোরণে আশেপাশের এলাকা কেঁপে ওঠেছিল। হামলাকারীরা একে-৭৪ রাইফেল এবং গ্রেনেড বহন করেছিল।ঘটনার পর দুটি হেলিকপ্টার ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহতের মধ্যে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এদের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। কলেজটি কোয়েটার সারিয়াব রোডে অবিস্থত। এই এলাকাটি কোয়েটার সবচেয়ে স্পর্শকাতর এলাকা বলে পরিচিত। এই এলাকায় এক দশক ধরে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হচ্ছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এই প্রশিক্ষণ কলেজটিতে এর আগে ২০০৮ এবং ২০০৬ সালেও হামলা চালানো হয়। সে সময় হামলাকারীরা রকেট দিয়ে কলেজের মাঠ প্রাঙ্গনে হামলা চালায়। এছাড়া এ বছরের আগস্টে কোয়েটার প্রধান হাসপাতালে এক হামলায় ৭০ জন নিহত হয়। এদের অধিকাংশই ছিল আইনজীবি। এক সহকর্মীকে দেখতে তারা হাসপাতালে জড়ো হয়েছিলেন। টিটিএন/এমএস
Advertisement