ধর্ম

হালাল খাদ্য গ্রহণে শুকরিয়া আদায়ের নির্দেশ

আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে অসংখ্য হালাল ও পবিত্র দ্রব্য মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। সকল হালাল এবং পবিত্র দ্রব্য ও পাণীয়কে সন্তুষ্ট চিত্তে খাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। হালালকে হারাম মনে করতে নিষেধ করেছেন আবার হারামকে হালাল মনে করতেও নিষেধ করেছেন। আর এখানে হালাল এবং পবিত্র খাবার খেয়ে আল্লাহ তাআলার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার তাকিদ দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনে হালাল খাবার খাওয়ার এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের কথা উল্লেখ করে বলেন-‘হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহ তাআলার ইবাদাতকারী হয়ে থাকো; তাহলে যে সমস্ত পাক-পবিত্র জিনিস দিয়েছি সেগুলো নিশ্চিন্তে খাও এবং আল্লাহ তাআলার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।’ (সুরা বাক্বারা : আয়াত ১৭২)পূর্ববর্তী আয়াতে পৌত্তলিকদের গোমরাহী তথা সত্য গ্রহণের প্রতিবন্ধকতার দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করা হয়েছে। যা দ্বারা তাদের গোমরাহী বা পথভ্রষ্টতা সুস্পষ্ট হয়। এ আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে হালাল জিনিস খাওয়ার জন্য নির্দেশ এবং তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার তাকিদ দিয়ে বলেন যে, যদি তোমরা শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার বিধানের অনুসারী হও তবে, জাহেলি যুগের ন্যায় ধর্মীয় পণ্ডিত, পুরোহিত, পাদরি, যাজক, যোগী, সন্যাসী এবং পূর্ব-পুরুষেরা যে সব অবাঞ্চিত আচার-আচরণ ও বিধি-নিষেধের বেড়াজাল সৃষ্টি করে সেগুলোকে ছিন্ন করে দাও।আল্লাহ যা কিছু হারাম করেছেন তা থেকে অবশ্যই দূরে থাক। কিন্তু যেগুলোকে আল্লাহ তাআলা হালাল করেছেন তা কোনো প্রকার ঘৃণা ও সংকোচ ছাড়াই সেগুলো পাহানার কর। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-‘যে ব্যক্তি আমাদের মতো করে নামাজ পড়ে; আমরা যে কিবলার দিকে মুখ করে নামাজ পড়ি তার দিকে মুখ করে নামাজ পড়ে এবং আমাদের জবেহ করা প্রাণীর গোশত খায় সে মুসলমান।সুতরাং আল্লাহ তাআলার এ নির্দেশ এবং তাগিদ থেকে তিনটি জিনিস প্রতীয়মান হয়।ুপ্রথমতআল্লাহ তাআলা কর্তৃক হালাল সাব্যস্ত করা জিনিসগুলোই পাক ও পবিত্র, যেগুলো খাওয়া বৈধ এবং তাঁর হারামকৃত জিনিসগুলো অপবিত্র, যেগুলো খাওয়া হারাম বা নিষিদ্ধ। যদিও তা মানুষের কাছে তৃপ্তিকর এবং সুপ্রিয়। যেমন অনেকের কাছে শুকরের গোশত খুবই মজাদার এবং প্রিয়।দ্বিতীয়তঅবিশ্বাসীরা মুর্তির নামে তথা তাদের দেব-দেবির নামে উৎসর্গীকৃত জানোয়ার ও জিনিসপত্র নিজেদের ওপর হারাম ঘোষণা করত; যা আল্লাহ তাআলা মানুষের জন্য হালাল ঘোষণা করেছেন। তাদের উৎসর্গ এবং তা খাওয়া বর্জন করাই ছিল ভুল কাজ। এইভাবে কোনো হালাল জিনিস খাওয়া হারাম হয় না।তৃতীয়তঅতঃপর আল্লাহ তাআলা তাঁর অনুগত বান্দাদের উদ্দেশ্যে বলেন, যদি তোমরা শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলারই ইবাদাত সম্পাদনকারী হও, তবে তাঁর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনে একনিষ্ঠ হও। তাফসিরে হক্কানিতে এসেছে, ‘পূর্বের আয়াতে আল্লাহ তাআলার হুকুম ছিল দুনিয়ার সকল মানুষের জন্যে যে, তোমরা পবিত্র ও হালাল বস্তুসমূহ আহার কর। আর এ আয়াতে বিশেষভাবে মুসলমানদেরকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে যে, হে মুমিনগণ! তোমরা নির্বোধ ব্যক্তিদের কথায় প্রতারিত হইও না। আমার সৃষ্ট বস্তুসমূহের মধ্যে যা পবিত্র তা আহার কর এবং নিয়ামতের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর; যদি তোমরা আল্লাহর ইবাদাতকারী হও।পরিষেশে...আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে পৌত্তলিকদের মতো হারাম জিনিসকে হালাল মনে খাওয়া থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। বৈধ ও পবিত্র বস্তুসমূহ আহার তাওফিক দান করুন। হালাল জীবিকা গ্রহণের পর আল্লাহ তাআলা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করার তাওফিক দান করুন। তাঁর বিধান পালন করে পরকালীন জীবনের কামিয়াবী অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/এবিএস

Advertisement