দেশজুড়ে

ওসমানী হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা কমে আসছে

সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃতের সংখ্যা কমে আসছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ শিশুসহ ১১ জন মারা গেছেন। এর আগের দিন ২৪ ঘণ্টায় মারা যান ৬ শিশুসহ ১৭ জন। হাসপাতালের পরিসংখ্যানে ওঠে এসেছে মৃতের সংখ্যার এ চিত্র। অথচ গত সোমবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১০ শিশুসহ ৩৩ জন মারা যাওয়ার ঘটনাকে কর্তৃপক্ষ স্বাভাবিক বলেছিলেন।হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে এখানে প্রতিদিন গড় মৃতের সংখ্যা ছিল ১৪ জন। শুধুমাত্র একদিন সর্বোচ্চ মৃতের সংখ্যা ছিল ২৭ জন। কিন্তু, ১০ জন শিশুর মৃত্যুর কোনো রেকর্ড নেই। যে কারণে, এই শিশুমৃত্যুর ঘটনাকে অস্বাভাবিক হিসেবেই দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এ নিয়ে এখন দেশব্যাপী তোলপাড় চলছে। গঠিত হয়েছে দুটি তদন্ত কমিটি। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে।হাসপাতাল সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি বুধবার থেকে সিলেটে তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। অন্যদিকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. ইসমাইল পাটোয়ারীকে প্রধান করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা দেয়ার সময়সীমা ছিল ৩ দিন। এ হিসেবে বৃহস্পতিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা। কিন্তু, তা সম্ভব হচ্ছেনা বলে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, অনেক বিষয় খতিয়ে দেখতে হচ্ছে। তাই আগামী রোববারের আগে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সম্ভাবনা আপাতত নেই। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা রয়েছে।এদিকে, ১০ ঘণ্টায় ১০ শিশুর মৃত্যুর জন্য চিকিৎসায় অবহেলার পাশাপাশি ওষুধে ভেজাল ছিলো কিনা সে প্রশ্ন মৃত শিশুদের স্বজনদের অনেকেরই।সিলেট বিভাগের সর্ববৃহৎ হাসপাতাল হচ্ছে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এক সময় চিকিৎসা ক্ষেত্রে এই হাসপাতালের সুনাম ছিল। কিন্তু, পর্যায়ক্রমে নানা অনিয়ম-অব্যবস্থাপনায় এখানকার চিকিৎসার মান কমতে শুরু করে। এতদিন এই বিষয়টি চাপা থাকলেও শিশু মৃত্যুও ঘটনার পর বেরিয়ে আসছে হাসপাতালের ভেতরে বিদ্যমান বাস্তব চিত্র। চিকিৎসক-নার্সদের গাফিলতির পাশাপাশি নানা সংকটে ভুগছে এই হাসপাতাল।হাসপাতাল সূত্র জানায়, এখানে বর্তমানে শয্যা সংখ্যা নয়শত। কিন্তু, প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকেন প্রায় দ্বিগুণ। গত মঙ্গলবার ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ছিলো ১ হাজার ৭১২ জন। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসাধীন রোগী ছিলেন ১ হাজার ৫৭৪ জন।ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আব্দুস ছবুর মিয়া জানান, এখানে ২৪১ জন চিকিৎসক পদের বিপরীতে ১৮১ জন কর্মরত রয়েছেন। শুন্য পদ ৬০টি। নার্সের ৪৫১ পদের বিপরীতে আছেন ৩০৬ জন। শুন্য পদের সংখ্যা ১৪৫টি। হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আরো ২১৬ জন চিকিৎসক ও ১৯৩ জন নার্স পদ সৃষ্টির প্রস্তাবনা পাঠিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দফতরে।এমএএস/আরআই

Advertisement