বাঁধন সাহা। সদ্য শেষ হওয়া ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী মেন চ্যানেল আই হিরো-২০১৬’ নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। মূলত নায়ক বাছাইয়ের জন্য চ্যানেল আই, ফেয়ার এন্ড লাভলী মেন ও বাংলাদেশ আর্মির সম্মিলিত প্রয়াস ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী মেন চ্যানেল আই হিরো’ প্রতিযোগিতা। তারই দ্বিতীয় আসরে ত্রিশ হাজার প্রতিযোগীকে টপকে বিজয়ীর মুকুট মাথায় পরেছেন সাভারের ছেলে বাঁধন। জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপে বাঁধন বলেন, ‘স্নাতক শেষ করে বন্ধুদের সঙ্গে সিলেট যাই। তারপর সেখান থেকে ফিরে চ্যানেল আইয়ের উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানটির কথা জানতে পারি। এরপর প্রতিযোগিতায় নাম লেখানোর যাবতীয় কাজ শেষ করি, এবং অডিশনে ডাক পাই। এরপর প্রাথমিকভাবে অডিশনে টিকে যাই। ধীরে ধীরে যতোই এর পেছনে সময় দিতে থাকি ততোই মনোবল বাড়তে থাকলো। যখন সেরা বিশ জনে চলে আসি তখন নিজের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস আসে যে আমি কিছু একটা করতে পারবো। এরপরের ঘটনা তো সকলের জানা!’ তবে বাঁধনের ছোটবেলা থেকে মিডিয়ার প্রতি খুব বেশি আগ্রহ ছিলো না। তিনি চেয়েছিলেন প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য হবেন। তার সেই চাওয়াও ফিকে হয়ে যায় যখন বাঁধন ক্লাস সেভেনে পড়েন। তিনি পাড়ি দেন ভারতের শিলিগুড়ি। সেখানে তার আত্মীয়দের সঙ্গে থাকতেন। সপ্তম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন শিলিগুড়িতে। এরপর বাঁধন দেশে ফিরে উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি হন নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে বিবিএ শেষ করেছেন। বর্তমানে চ্যানেল আই এবং ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী বাঁধনের জীবন বদলে দিয়েছে, সে কারণে প্রতিষ্ঠানটির কাছে তার কৃতজ্ঞতার সীমা নেই। বাঁধন যেমনটা বললেন, ‘চ্যানেল আই এবং ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী আমাকে যে প্লাটফর্মটা দিয়েছে সেটার জন্য আমি তাদের কাছে আজীবন কৃতজ্ঞ থাকবো। তাছাড়া আমি তাদের মাধ্যমে আমার যোগ্যতা ও মেধার স্বাক্ষর প্রমাণ করতে পেরেছি। এখন আমার মূল উদ্দেশ্য মিডিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হওয়া।’ এদিকে, ‘ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী মেন চ্যানেল আই হিরো-২০১৬’ প্রতিযোগিতায় চাম্পিয়ান হওয়ায় বাঁধন সুযোগ পাচ্ছেন ইমপ্রেস টেলিফিল্মের প্রযোজনায় হুমায়ূন আহমেদ এর উপন্যাস অবলম্বনে পরবর্তী ছবি ‘নক্ষত্রের রাত্রি’-তে কাজের সুযোগ। যেখানে তার বিপরীতে থাকবেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। এটি পরিচালন করবেন মেহের আফরোজ শাওন। এছাড়া বাঁধন নিজেকে তিনি প্রস্তুত করছেন ঢাকাই ছবির ইন্ডাস্ট্রিতে নায়ক হিসেবে শক্ত একটি অবস্থান তৈরি করে নিতে। বাঁধন আরো বলেন, ‘আমি জানি প্রতিযোগিতার মূল লড়াইটা আমাকে এখন থেকে করতে হবে। সবার ভালোবাসা আর সমর্থনে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে চাই আমি। আমি নিজেকে তৈরি করছি ‘নক্ষত্রের রাত’ ছবির জন্য। হুমায়ূন আহমেদ স্যার আমার স্বপ্নের মানুষ। তার সাহিত্য, নাটক-চলচ্চিত্র; সবকিছুতেই মুগ্ধ আমি। এটা কোনোদিন ভাবিওনি যে তারই লেখা কোনো গল্পে নায়ক হবো। তার অপ্রকাশিত গল্পে নির্মিত হতে যাচ্ছে ছবিটি। এরইমধ্যে গল্পের পান্ডুলিপিটি আমার কাছে এসেছে। বারবার পড়ছি নিজের চরিত্রটি রপ্ত করতে। জানিনা, প্রত্যাশার জায়গা থেকে কতটুকু করে দেখাতে পারবো, তবে শতভাগ চেষ্টা থাকবে পরিচালক শাওন ম্যাডামের নির্দেশনা অনুযায়ী দর্শকদের সামনে হাজির হতে।’ প্রথম ছবিতেই ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ নায়িকা মাহির বিপরীতে কাজ করতে যাচ্ছেন বাঁধন। এ নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত তিনি। বললেন, ‘মাহিয়া মাহি আমাদের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠিত একজন অভিনেত্রী। তার সাবলীল অভিনয় মুগ্ধ করে। বিশেষ করে ‘কৃষ্ণপক্ষ’ ছবিতে রিয়াজ স্যারের সঙ্গে উনার অভিনয় দেখে খুব ভালো লেগেছে। এবার প্রিয় অভিনেত্রীর সঙ্গে নায়ক হয়ে কাজ করবো এটা ভাবতেই আনন্দ হচ্ছে। আশা করছি দর্শকদের ভালো লাগবে আমাদের জুটির রসায়ন।’বাঁধনের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকার অদূরে সাভারে। তার বাবা বৈধ্যনাথ সাহা এবং মা রুপা সাহা। দুই বোন এক ভাইয়ের মধ্যে বাঁধন সবার বড়। ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার এই হিরোর জন্মদিন মার্চের ৮ তারিখ। অভিনয়ে নিজের ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে বাঁধন বলেন, ‘যে সুযোগ পেয়েছি সেই সুযোগ পরিশ্রম আর মেধার বিকাশ ঘটিয়ে কাজে লাগাতে চাই। ছোট এবং বড় পর্দা- সব মাধ্যমেই কাজ করতে চাই। অভিনয় দিয়ে সবার অন্তরে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখি আমি।’নায়ক হয়ে অপার সম্ভাবনার দুয়ারে দাঁড়ানো বাঁধন। কেননা, নতুন মুখ মানেই নতুন ভাবনা, নতুন দর্শন আর নতুন নতুন সব সাফল্যের গল্প। তেমনি বাঁধনও অনেক সাফল্যের বাহক হবেন সেই প্রত্যাশা চ্যানেল আইয়ের, বাংলাদেশ আর্মির, প্রতিযোগিতার বিচারকদের, শোবিজ দুনিয়ার মানুষদের এবং দর্শকদের। সুদর্শন এই যুবককে অভিনন্দন।এনই/এলএ/পিআর
Advertisement