`মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে/ মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই। এই সূর্যকরে এই পুষ্পিত কাননে/ জীবন হৃদয় মাঝে যদি স্থান পাই।` বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত পঙক্তিমালা। গভীর জীবনতৃষ্ণায় তিনি তা লিখেছেন। তবে পৃথিবীর মায়া ছেড়ে বাংলা ও বিশ্ব সাহিত্যের এই মনীষী চলে যান বাংলা ১৩৪৮ সনের ২২ শ্রাবণ। আজ তার ৭৩তম প্রয়াণ দিবস। বাংলা সাহিত্যের এই কীর্তিমানকে দুই বাংলার মানুষ আজ স্মরণ করবে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায়।আমাদের প্রাণের কবি পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেও অসামান্য রচনা ও কাজের মাধ্যমে আজও বেঁচে আছেন স্বমহিমায়। তিনি এখনও দুই বাংলার মানুষের প্রেরণার এক অন্তহীন নাম। সৃষ্টিই যে এই নশ্বর জীবনকে অবিনশ্বরতা দেয়, সেকথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন বলেই রবীন্দ্রনাথ অবশ্য অমন দৃঢ়তায় বলতে পেরেছেন- `মৃত্যু দিয়ে যে প্রাণের/ মূল্য দিতে হয়/ সে প্রাণ অমৃতলোকে/ মৃত্যুকে করে জয়।`কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবিতা, গান, ছোটগল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ রচনার মাধ্যমে সাহিত্যের সব শাখায় সমানভাবে বিচরণ করে বাঙালির হৃদয়ে আসন করে নিয়েছেন। বাঙালির সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিশ্বজনীন হয়ে উঠেছে তারই হাত ধরে। ১৯১৩ সালে প্রথম বাঙালি এবং এশীয় হিসেবে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। কবিতা দিয়ে সাহিত্যচর্চার শুরু এবং শেষ হলেও তার হাতেই বাংলা ভাষায় প্রথম সার্থক ছোটগল্পের সৃষ্টি হয়েছে। তিনিই আবার বাংলা উপন্যাসকে আধুনিক রূপ দেন। শুধু সৃজনশীল সাহিত্য রচনা নয়-অর্থনীতি, সমাজ ও রাষ্ট্র নিয়ে তার ভাবনাও তাকে সম্মানের আসনে পৌঁছে দিয়েছে। মানুষের মুক্তির দর্শন ছিল তার চেতনাজুড়ে।এ উপলক্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিটিভিসহ প্রায় সবক`টি বেসরকারি চ্যানেল আয়োজন করছে অনুষ্ঠানমালা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আজ বিকাল ৪টায় শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে একক বক্তৃতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি এমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান। এছাড়াও অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে আবৃত্তি ও রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করা হবে।
Advertisement