সমুদ্র পথের পরিবর্তে এবার মানবপাচারের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর। ৩০ জনের সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অবৈধভাবে লিবিয়া ইটালিতে নিরাপদে পাচার হচ্ছে উঠতি বয়সী তরুণরা। এ সিন্ডিকেটের মধ্যে সাদিক ও মোজাম্মেল লিবিয়ায় অবস্থান করছেন। দেশের সমুদ্রপথে মানবপাচার রোধে প্রশাসনের কঠোর নজরদারির পর এবার বিমান বন্দরকেই নিরাপদ রুট হিসেবে বেছে নিয়েছে পাচারকারী সিন্ডিকেট। জাল ভিসা দিয়ে বিমান বন্দরের মাধ্যমে নিরাপদে এসব লোককে লিবিয়া ও ইতালি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভিসার মেয়াদ না থাকলেও কীভাবে এসব যুবক বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট অতিক্রম করে বাংলাদেশ ত্যাগ করছে তা ভাবিয়ে তুলেছে র্যাবসহ সংশ্লিষ্টদের। বৃহস্পতিবার সকালে অবৈধভাবে লিবিয়া যাওয়ার সময় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দর থেকে ৩৯ জনকে আটকের পর এসব তথ্য বেরিয়ে আসে। এদের মধ্যে ১৯ জনকে বিমান বন্দরের ভেতরে এবং ২০ জনকে বাইরে অপেক্ষমান অবস্থায় আটক করা হয়। আটকদের অধিকাংশই যুবক।বৃহস্পতিবার বিকেলে র্যাব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মেফতাহ উদ্দিন জানান, আরো ২১ জন সকালের একটি ফ্লাইটে লিবিয়ার উদ্দেশ্য দুবাই চলে গেছে। এছাড়া ৭০জন একই পথে যাওয়ার কথা ছিল। বিমান ছেড়ে দেয়ায় তাদের আটকানো সম্ভব হয়নি বলেও তিনি জানান। আর্ন্তজাতিক মানবপাচারকারী দালাল সিন্ডিকেটের সদস্য সাদিক এবং মোজাম্মেলের মাধ্যমে এসব লোক লিবিয়া ও ইটালিতে পাচার হচ্ছে। আটক ঢাকার বাসিন্দা মেহেদি হাসান জানান, ৪ লাখ ২০ হাজার টাকায় লিবিয়া ও ইটালি পৌঁছে দেয়ার চুক্তি হয় সিন্ডিকেটের সঙ্গে। লিবিয়া পৌঁছলে টাকা পরিশোধ করার কথা। কিভাবে এ সিন্ডিকেটকে বিশ্বাস করলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে মেহেদি বলেন আগে আরো লোক পাঠিয়েছে তারা। এদিকে বাংলাদেশ থেকে লিবিয়া পর্যন্ত ৩০ জনের একটি পাচারকারী সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে র্যাব। আটক ৩৯ জনের কাছ থেকে বেশ কিছু পাসপোর্ট এবং জাল ভিসা উদ্ধার করা হয়েছে। এসব ভিসার বেশির ভাগই মেয়াদোত্তীর্ণ। এ ঘটনার সঙ্গে সিলেটের আল মামুন ট্রাভেলস এবং শামিম ট্যুরস নামে দুটি ট্রাভেল এজেন্সি জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে র্যাব। তবে বিমান বন্দরের কোন কর্মকর্তা জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় র্যাব। আটক শরীয়তপুরের শামীম জানান, ইতালি যাওয়ার জন্য ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন তিনি। বাকি টাকা ইতালি পৌঁছার পর দেয়ার কথা ছিল। তাদের একদিনের নোটিসে নিজ নিজ গ্রাম থেকে প্রথমে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে একসঙ্গে সবাইকে চট্টগ্রামের বিভিন্ন হোটেলে রাখা হয়। র্যাব কমকর্তা মিফতাহ উদ্দিন জানান, চট্টগ্রাম থেকে প্রথমে দুবাই এরপর তুরস্কের আঙ্কারা এয়াপোর্ট হয়ে লিবিয়ার ত্রিপোলিতে পৌঁছে দেয়া হয় এসব লোকদের। দীর্ঘদিন থেকে এই সিন্ডিকেট এ কাজ করে আসছে। জীবন মুছা/এএম/পিআর
Advertisement