নওগাঁর সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জনবল সংকটের কারণে স্বাস্থ্যসেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মাত্র সাতজন চিকিৎসক দিয়ে চলছে কমপ্লেক্সটি। টেকনেশিয়ান থাকলেও হাসপাতালের এক্স-রে যন্ত্রটি দেড় বছর ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগীদের। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৭ সালে ৩১ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০০৫ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও ২০০৭ সাল থেকে পূর্ণাঙ্গভাবে এর কার্যক্রম চালু হয়। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটিতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ চিকিৎসা কর্মকর্তার ২৭টি পদ থাকলেও এর বিপরীতে কর্মরত আছেন মাত্র ৭ জন। তৃতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর ৮৪টি পদের স্থলে কর্মরত রয়েছেন ৬১ জন, সেবিকা/নার্সের ২১টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ৮ জন, মাঠকর্মী ২০টি পদের মধ্যে কর্মরত আছেন ১৩ জন, নিরাপত্তা প্রহরী ৩টি পদের মধ্যে ১ জন, বাবুর্চি ৩টির মধ্যে কর্মরত আছেন ২ জন এবং সুইপারের ৫টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ২ জন। হাসপাতালের শুরু থেকে কোনো গাইনি ডাক্তার নেই। জরুরি প্রসূতি সেবা কার্যক্রম না থাকায় উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গর্ভবতী মা হাসপাতালে কার্যকর সেবা না পেয়ে অন্যত্র ফিরে যেতে বাধ্য হয়। অপারেশন ও সিজারিয়ানের জন্য রোগীকে বেসরকারি ক্লিনিকে এবং বাইরের উপজেলাগুলো থেকে চিকিৎসা নিতে হয়। এক্স-রে মেশিনটি নষ্ট থাকায় রোগীদের বেশি টাকা খরচ বাইরে থেকে এক্স-রে করতে হচ্ছে। এছাড়া এ মৌসুমে উপজেলায় ডায়রিয়ায় রোগীর সংখ্যা বেশি বাড়ছে। প্রয়োজনের তুলনায় রোগীকে হাসপাতাল থেকে স্যালাইন সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। উপজেলার গোডাউন পাড়ার আরিফ হোসেন বলেন, সেবিকা ছাড়া ডাক্তার তেমন পাওয়া যায় না। ডাক্তার সংকট থাকায় চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা তেমন পাওয়া যায় না বলে বাইরের ক্লিনিকে ও ডাক্তারদের চেম্বারে ভিড় জমান রোগীরা।কুচিন্দরী গ্রামের আব্দুল লতিফ বলেন, হাসপাতালে অপারেশন ও সিজারিয়ানের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের জরুরি প্রসূতিদের বেসরকারি ক্লিনিকে এবং বাইরের উপজেলা থেকে চিকিৎসা নিতে হয়। এতে গ্রামের দরিদ্র মানুষদের চরম ভোগান্তি ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মমিনুল হক জানান, চিকিৎসকের ২৭টি পদের মধ্যে মাত্র ৭ জন থাকায় রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে টেকনেশিয়ান থাকলেও এক্সরে যন্ত্রটি দেড় বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। সার্জন ও এনেসথেসিয়া না থাকায় অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে প্রতিদিন গড়ে ২০০ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন এবং প্রতিদিন গড়ে ভর্তি থাকেন ৪০ জন রোগী।এসএস/এবিএস
Advertisement