বিশেষ প্রতিবেদন

বিতর্কহীন ভর্তি পরীক্ষার নেপথ্যে ‘ডিজিটাল চমক’

বাংলাদেশের ইতিহাসে শুক্রবার অনুষ্ঠিত সরকারি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা সম্পূর্ণ বিতর্কহীন ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।চিকিৎসা শিক্ষা বিশেষজ্ঞসহ সাধারণ মানুষের অভিমত, প্রতি বছর মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস, পরীক্ষা শুরুর সাথে সাথে হল থেকে প্রশ্নপত্র বাইরে চলে আসাসহ নানা বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছিল না। পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে ও পরে এনিয়ে চলতো আলোচনা সমালোচনাসহ নানা তর্ক-বিতর্ক। ভর্তিবঞ্চিতরা রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে নেমে পড়তো। কিন্তু এবারই প্রথম সম্পূর্ণ বিতর্কহীনভাবে শুক্রবার রাজধানীসহ সারাদেশের ১৮টি মেডিকেল কলেজে ৩৭টি পরীক্ষা কেন্দ্রে ৮৬ হাজার ৫৯৮ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। সবার মনে প্রশ্ন কীভাবে এত সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো।অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিতর্কহীন এ মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের সাফল্যের নেপথ্যে প্রধান কারণ ডিজিটাল চমক। প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, ছাপাখানায় প্রশ্ন ছাপা, বিশেষ ডিভাইস লাগিয়ে প্রশ্নপত্র ট্রাঙ্কযোগে পরীক্ষার কেন্দ্রে পাঠানো আবার পরীক্ষা শেষে একই ডিভাইস সম্বলিত ওএমআর শিট সম্বলিত উত্তরপত্র স্বাস্থ্য অধিদফতরে পাঠানো এসব ধাপে ছিল আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি অর্থাৎ ডিজিটাল চমক। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বর্তমান মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ। তিনি দীর্ঘদিন অধিদফতরের এমআইএস শাখার পরিচালক হিসেবে অধিদফতরকে ডিজিটালাইজড করার সাথে যুক্ত রয়েছেন। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের আগেই তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তিতে এবার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, বিতরণ, পরীক্ষা গ্রহণ ও পরীক্ষার খাতা ফেরত পাঠানোর প্রতিটি ধাপের কার্যক্রম পরীক্ষা গ্রহণ কমিটির মনিটরিংয়ে থাকবে। কখন প্রশ্ন যাচ্ছে, কখন প্রশ্ন বিতরণ করা হচ্ছে, কখন উত্তরপত্র ফের ট্রাঙ্কে প্রবেশ করানো হচ্ছে, কয়টার সময় রওনা হচ্ছে, কোন পথে আসছে ইত্যাদি প্রযুক্তির মাধ্যমে তারা দেখতে পারবেন। তাই এবার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও পাচার নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্ক তোলার অবকাশ থাকবে না বলে তিনি গণমাধ্যমকে আগেই অবহিত করেছিলেন। শনিবার সকালে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. আবদুর রশীদের কাছে সাফল্যের নেপথ্যের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর নির্দেশনায় এবার প্রথম থেকেই স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণে সকলেই সচেষ্ট ছিলেন। প্রথম থেকেই মন্ত্রণালয় ও অধিদফতর ছাড়াও বিএমএ, বিএসএমএমইউ, চিকিৎসক নেতা, বিএমডিসি, বিসিপিএস, শিক্ষাবিদ, সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক প্রাবন্ধিক এবং সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সাবেক অভিজ্ঞ অধ্যাপকদের পরামর্শক্রমে সামগ্রিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়। তিনি বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির সফল প্রয়োগের পাশাপাশি সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ সাফল্য এসেছে।এমইউ/এআরএস/এমএস

Advertisement