খেলাধুলা

সাকিব-মোসাদ্দেকের আউটই টার্নিং পয়েন্ট

কী লিখবো। ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। এমন নিশ্চিত একটি জয় কি না আমরা হাতছাড়া করে ফেললাম! ইমরুল আর সাকিব যেভাবে ম্যাচকে টেনে নিয়ে এলো, যেভাবে নিশ্চিত জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশকে, সেখান থেকে হেরে যাওয়াটা আসলে কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। নিতে পারছি না। কষ্ট হচ্ছে খুব। দুর্দান্ত একটি জয়কে আমরা মাঠের মধ্যে ফেলে দিয়ে এলাম।ইমরুলের সঙ্গে জুটি গড়ে সাকিব আল হাসান ম্যাচটাকে টেনে নিয়ে এসেছিল। সাকিব যখন আউট হয় তখনও বল প্রায় ৫০টি বাকি ছিল। রান দরকার ছিল ৩৯টি। ওই অবস্থা থেকে কোনভাবেই হেরে যাওয়ার কথা নয়; কিন্তু মোসাদ্দেকের ব্যাটের কানায় লাগিয়ে আউট হওয়াটাই ছিল বড় টার্নিং পয়েন্ট। কারণ, এরপর পর আর ব্যাটসম্যান ছিল না। ইমরুলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থেকে মাঝারি মানের একটি জুটি গড়তে পারলেই অনায়াসে জয়টি হাতের মুঠোয় এসে যেতো। ইমরুলের আউট হওয়ার ধরণ নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন; কিন্তু আমি বলবো সে যে পরিস্থিতিতে আউট হয়েছে তাতে তার আর করার কিছু ছিল না। কারণ আর ব্যাটসম্যান নেই। প্রতিটি বলেই চাপ বাড়ছে। রিস্ক নিতেই হবে। তার উপর পায়ের ব্যাথাটা তাকে ভোগাচ্ছিল। অনেকক্ষণ স্ট্রাইক পাচ্ছে না। সুতরাং ক্রিজ ছেড়ে এসে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হয়েছে সে।তবে, যদি ফিনিশিং টাচ দিয়ে আসতে পারতো ইমরুল, তাহলে সেটাই হতে পারতো সবচেয়ে চমৎকার। কারণ, ওইরকম একটা অসাধারণ ইনিংস খেলার পর এভাবে আউট হয়ে দলকে বিপদে ফেলে দেয়াট নিশ্চয় তাকে স্বস্তি দেবে না।তবুও আমি বলবো অসাধারণ ব্যাটিং করেছে ইমরুল। সব সময়ই সে পারফরমার। যখন প্রমাণ করার প্রয়োজন হয় কিংবা সুযোগ আসে, তখন সব সময়ই সে পারফর্ম করে নিজেকে প্রমাণ করে। প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করে শুধু নিজের নয়, পুরো দলেরই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল ইমরুল। যে কারণে আজ ৩১০ রানও তাড়া করার সাহস তৈরী হয়েছিল টিম বাংলাদেশের মধ্যে।সবাই টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে সাকিব-মোদ্দেকের আউটের কথাই বলছে, বলবে। তবে আমার কাছে কেন যেন মনে হয়, ম্যাচের আসল টার্নিং পয়েন্টটা ছিল সাব্বিরের ওই দুর্ভাগ্যজনক আউট। প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস নিয়ে ইনিংস শুরু করেছিল সে। যেভাবে ব্যাট করছিল সাব্বির, একটা ইনিংস যদি খেলতে পারতো, তাহলে নিশ্চিত ৩-৪ ওভার হাতে থাকতেই জয় এসে যেতো আমাদের।দুর্ভাগ্যজনকভাবে সাব্বিরের আউটটাই ছিল দলের জন্য ক্ষতিকর। তবুও ইমরুল-সাকিব ম্যাচটা ঘুরিয়ে দিয়েছিলো। জয়ের সম্ভাবনা তৈরী করেছিল। সাকিবের রানে ফেরার প্রয়োজন ছিল খুব। অসাধারণ ব্যাটিং করেছে সে। তার ইনিংসটা চোখে লেগে থাকার মত।বোলিংয়ের কথা যদি বলি, তাহলে বলবো বাংলাদেশ খারাপ করেনি। অসাধারণ অধিনায়কত্ব করেছে মাশরাফি। খুব সুন্দর রোটেশনে বোলার চেঞ্জ করেছে। যখন যাকে প্রয়োজন তাকে দিয়ে বল করিয়েছে। তাদের জুটি ভাঙার জন্য সম্ভব সব রকম চেষ্টা করেছে। তবে, ফিল্ডিংটা কিছুটা হলেও ডুবিয়েছে বাংলাদেশকে। অনেকগুলো ক্যাচ মিস হয়েছে। ওই ক্যাচগুলো মিস না হলে ইংল্যান্ডের রান আরও কম হতো। বাংলাদেশের সামনে সহজ লক্ষ্য থাকলে জয়টাও সহজে এসে যেতো। এই ম্যাচ জিততে পারলে নিশ্চিত করে বলতে পারতাম আমরা সিরিজ জিতবো; কিন্তু এখন সবই কঠিন হয়ে গেলো। পরের ম্যাচে আমার মনে হয় নাসিরকে খেলানো উচিৎ। মোশাররফ রুবেলের পরিবর্তে। কারণ, ইংল্যান্ড দলে বেশ কয়েকজন বাঁ-হাতি রয়েছে। তাদের সামনে একজন অফস্পিনার থাকলে বাংলাদেশেরই লাভ। সঙ্গে জেনুইন ব্যাটসম্যানও।নাসিরের অফস্পিনটা বেশ কার্যকরী। ইংল্যান্ডের বাঁ-হাতিদের সামনে সেটা আরও কার্যকরী হবে বলে আমার বিশ্বাস। মোশাররফ রুবেলের জায়গায় নাসিরকে নিলে একজন ব্যাটসম্যান যেমন বাড়বে, তেমনি তার অফস্পিনও পুরোপুরি কাজে লাগানো যাবে। আশাকরি পরের ম্যাচটা আরও ভালো হবে বাংলাদেশের।আইএইচএস/এএম

Advertisement